সংক্ষিপ্ত
মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী জঙ্গিপুরের ঘোষাল বাড়ির এই পুজো প্রায় এক যুগ ধরে ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে আসছে। কিন্তু কেন এই অদ্ভুত নিয়ম? কী কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে এই ঐতিহাসিক এই পুজোর নেপথ্যে?
শেকল দিয়ে মণ্ডপের সঙ্গে বাঁধা দেবী দূর্গা। ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুর্শিদাবাদের গোঁসাই বাড়িতে দেখা যায় এমনই দৃশ্য। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই রীতি মেনেই চলে আসছে দুর্গাপুজো। মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী জঙ্গিপুরের ঘোষাল বাড়ির এই পুজো প্রায় এক যুগ ধরে ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে আসছে। কিন্তু কেন এই অদ্ভুত নিয়ম? কী কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে এই ঐতিহাসিক এই পুজোর নেপথ্যে?
প্রায় ৫০০ বছর আগে গয়ামুনি বৈষ্ণমীর হাত ধরে সুচনা হয় এই পুজোর। নিঃসন্তান গয়ামুনি বৈষ্ণমী সত্যব্রতী দেব্যাকে পোষ্য পুত্রী হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। এরপর এই পুজো গোসাই বাড়ির পুজো হিসেবে পরিচিতি পায়। ঘোষাল পরিবারের বিশ্বাস পুজোর সময় জীবন্ত হয় ওঠে দুর্গা মূর্তি এবং আস্তে আস্তে দেবী সামনের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। এই বিশ্বাস থেকেই দেবী যাতে বাড়ি থেকে না চলে যায় তার জন্যই এই অদ্ভুত প্রথা। ঠাকুর বেদীতে তুলে শিকলে বেঁধে ফেলা হয় দেবী মূর্তি।
প্রত্যেক বছর রথের দিন পুজোর পর প্রথম কাঠামোতে মাটি পড়ে ঘোষাল বাড়িতে। এই দিন থেকেই গোসাইবাড়িতে শুরু হয় যায় দুর্গা পুজোর উৎসব। মহালয়ার দিন মন্দিরে দেবীর বোধনের ঘট স্থাপন করা হয়। সপ্তমীর দিন ঢাক, ঢোল, উলু সহ নব পত্রিকাকে পাল্কি করে আনা হয় ভাগীরথি নদীতে। বৈদিক মতে স্নান করিয়ে মন্দিরে আনা হয় দেবীকে।
সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন ফলমূল, লুচি, মিষ্টি সহ ভোগ নিবেদন করা হয়। সন্ধি পুজোতে তিন রকমের খিঁচুড়ি, পোলাও, পনির ও বক ফুলের বড়া ভোগ হিসাবে দেবীকে দেওয়া হয়। এই সময় চারিদিকের হরেক রকমের মানুষের আগমন ঘটে। পিতলের অস্ত্র, বনকাপসি ঢাকের সাজ ও বৈদিক রীতিতে আজও নিজের প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রেখেছে মুর্শিদাবাদের গোসাই বাড়ির পুজো।
আরও পড়ুন - বেহালা ফ্রেন্ডস-এর এবছরের থিম ‘দুর্গাযাপন’, জেনে নিন এর অর্থ কী, কী রয়েছে পুজোর বিশেষত্ব