সংক্ষিপ্ত
একে অনির্বাণ নিজের হাতে টিকিট তুলে দিচ্ছেন। তার উপরে বায়না মেটাতে অনুরাগীদের সঙ্গে সেলফিও তুলেছেন। তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা রোখে কে?
বৃহস্পতিবার অনির্বাণ ভট্টাচার্যের প্রথম বড় ছবি ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র প্রিভিউ ছিল। যে কোনও পরিচালকের কাছে তাঁর ছবি সন্তানসম। প্রথম ছবি হলে তো কথাই নেই। অনির্বাণের ক্ষেত্রেও এই ছবিটি তা-ই। সেই কারণেই এ দিন সন্ধেয় দক্ষিণ কলকাতার প্রথম সারির আইনক্সের বাইরে নিজে দাঁড়িয়ে টিকিট বিক্রি করলেন তিনি! এ ভাবেই পর্দায় ‘রূপকথা’ ফুটে ওঠার আগেই প্রেক্ষাগৃহে ‘রূপকথা’ জন্ম নিল! জন্মদাতা স্বয়ং পরিচালক।
পরনে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা। একমাথা চুল ঈষৎ অবিন্যস্ত। তাতে হাল্কা রুপোলি রেখার ঝিলিক। চোখে কার্বন ফ্রেমের কালো চশমা। সব মিলিয়ে পরিচালকের উপযুক্ত সাজই বটে। এ ভাবেই পরিচালক-অভিনেতা উপস্থিত তাঁর ছবির আগাম প্রদর্শনে। সেখানে প্রযোজনা সংস্থা থেকে আলাদা করে তৈরি টিকিট কাউন্টারের পাশে তিনি দাঁড়িয়ে। নিজের হাতে দর্শকদের কাছে টিকিট বিক্রিতে ব্যস্ত। একে অনির্বাণ নিজের হাতে টিকিট তুলে দিচ্ছেন। তার উপরে বায়না মেটাতে অনুরাগীদের সঙ্গে সেলফিও তুলেছেন। তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা রোখে কে? সম্ভবত এই প্রথম কোনও তারকা পরিচালক নিজে তাঁর ছবির টিকিট বিক্রি করলেন।
বাদল সরকারের নাটক ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র ছায়ায় অনির্বাণ তাঁর প্রথম ছবি পরিচালনা করেছেন। যেখানে মজার গল্প বলেছেন তিনি। ছবিতে নতুন জুটি সত্যম ভট্টাচার্য, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি-মুক্তির আগে পরিচালক তাঁর নায়ক-নায়িকার সঙ্গে দর্শকদের পরিচয়ও করিয়ে দিয়েছেন। অনির্বাণের কথায়, সুরঙ্গনা ওরফে ‘ছায়া হালদার’ ভুতুড়ে রাজবাড়িতে যেন এক ঝলক ঠান্ডা হাওয়া। মিঠে বাঁশির মতোই মিষ্টি সুরেলা। আর রাজাবাবু ভূপতি? দাঁতের ডাক্তারবাবু একনিষ্ঠ প্রেমিক। ছন্দাকে তাঁর ভারী পছন্দ। কিন্তু কী ভাবে ভূতের খপ্পর থেকে নিস্তার পাবেন? সেই গল্প ছবির অন্যতম আকর্ষণ।
প্রিভিউতে ‘রাজাবাবু’ এবং তাঁর ‘ছন্দা’ উভয়েই এসেছিলেন। রাজকীয় সাজে। সুরঙ্গনা মিষ্টি লাল ফ্রিল পাড়ের ঘিয়ে সাদা শাড়িতে। খোলা চুল, কপালে ছোট্ট টিপ। যথেষ্ট তাঁর জন্য। সত্যম ভট্টাচার্যের গায়ে জমাটি কাজের পাঞ্জাবি। ঠিক জমিদার বাড়ির মতোই। প্রিভিউয়ে এসে একটু নার্ভাসও ‘ছন্দা’। সে কথা নিজেই জানিয়ে বলেছেন, ‘‘তিলে তিলে তৈরি আমাদের এই ছবি। প্রিভিউয়ে এসে তাকে ‘রূপকথা’ বলেই মনে হচ্ছে। ডাবিং এবং গান গাইতে গিয়ে খুব সামান্য অংশই দেখতে পেয়েছি। তাই দর্শকদের মতো আমারও ছিবি নিয়ে প্রবল উত্তেজনা।’’
প্রথম সিরিজ ‘মন্দার’ তৈরির সময় অনির্বাণ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, তাঁর একটু হলেও ভয় করেছে। প্রথম বড় ছবি তৈরির পরেও কি ভয় ছিল? স্থিরচিত্র বলছে, ‘ছন্দা’র মতো তিনিও যেন হাল্কা নার্ভাস। আবার লক্ষ্মীবারে একাধারে ‘মাল্টিটাস্কার’ও! টিকিট বিক্রির পাশাপাশি অতিথি আপ্যায়নেও সমান ব্যস্ত। তারই ফাঁকে উন্মুখ দৃষ্টি প্রেক্ষাগৃহের দিকে। আর কোনও তারকার আসা বাকি? কেমন লাগবে সবার? ভাল বলবেন তো? পরিচালককে আশ্বস্ত করতেই যেন তাই তাঁর পাশে ছবির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ‘সঞ্জীব বসু’ ওরফে দেবরাজ ভট্টাচার্য। লাল কার্পেটের উপরে দুই দুধ সাদা পাঞ্জাবির যুগলবন্দি। উৎকণ্ঠাও যেন জৌলুসে মোড়া!
এসেছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, গৌরব চক্রবর্তী, ঋদ্ধিমা ঘোষ, ‘লক্ষ্মী ছেলে’ উজান গঙ্গোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তী, টোটা রায়চৌধুরী প্রমুখ। প্রত্যেকে অনির্বাণের প্রথম ছবি নিয়ে দারুণ আশাবাদী। ছবি দেখার পরে টোটার বক্তব্য, ‘‘অল্প কথায় অনির্বাণের ছবি নিয়ে কিছু বলা সত্যিই ঝকমারি। খুব ভাল বললে কম বলা হবে। ওর থেকেই আমরা এই ধরনের ছবিই আশা করি।’’ সিরিজে ‘ব্যোমকেশ’ অনির্বাণের ‘সত্যবতী’ ঋদ্ধিমা। তিনিও বন্ধুর ছবির জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আমার বন্ধুর ছবি। ওর থেকে সব সময় সেরা কিছু আশা করি। আর ও আমাদের হতাশ করে না।’’
তবে তারাদের ঢলে দেখা যায়নি সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে। ইন্ডাস্ট্রি জানে, সৃজিতের ‘ব্লু আইড বয়’ অনির্বাণ। অনির্বাণ ‘মন্দার’ পরিচালনার পরে সৃজিত রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আমার অন্ন মারা গেল। তল্পিতল্পা গুটিয়ে পুরনো জায়গাতেই ফিরে যেতে হবে।’’ সেই দুশ্চিন্তাতেই কি মুখুজ্জে মশাই প্রিভিউয়ে নেই? যদিও তাঁর ফাঁক ভরাট করতে এসেছিলেন মুখোপাধ্যায়-ঘরনি রফিয়াত রশিদ মিথিলা।
আরও পড়ুন- ঝালমুড়ি আর পেয়ারামাখা দিয়ে সকালের জলখাবার! হাওড়ায় ব্যাট কাঁধে মাঠে ‘চাকদা এক্সপ্রেস’
আরও পড়ুন- বছরের শুরুতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই সলমন- শাহরুখের, বড় ঘোষণা যশরাজ ফিল্মসের