সংক্ষিপ্ত

"মেয়েরা শরীরের বিনিময়ে পদোন্নতি করে!" সমাজ নিয়ে বিস্ফোরক স্বস্তিকা, কী বলেছেন অভিনেত্রী?

 

সম্পর্তি নিখোঁজ ২ ওয়েব সিরিজ নিয়ে সরকাসরি একটি সাক্ষাথকার দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন," এ বারের ‘নিখোঁজ ২’-এ আগের ঘটনার সমাধান খুঁজে পাবে দর্শক। প্রচুর মানুষ ইতিমধ্যেই ‘নিখোঁজ ২’ দেখে সরাসরি আমাকে সমাজমাধ্যমে লিখছেন। আমি লেখাগুলো ভাগ করে নিচ্ছি। সেই কারণেই প্রথম থেকেই উত্তেজনা ছিল চরিত্রটা নিয়ে। এখানে পুলিশ শুধুই যে অপরাধ দমন করছে এমন নয়। এই চরিত্রটার মধ্যে পুলিশ ও মা পাশাপাশি চলছে। মায়ের জেদ আর পুলিশের দক্ষতা দুটোই এই চরিত্র দাবি করে। খানিকটা সত্য আর অনুভূতির রেষারেষি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই চরিত্রে। পরিচালককে মাঝেমাঝেই বলতাম, মা কোথাও বেশি হয়ে যাচ্ছে না তো! আজও কোথাও কোথাও তো ধরে নেওয়া হয় মহিলা পুলিশ ততটাও দক্ষ নয় যতটা পুরুষ।"

এ ছাড়াও লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে স্বস্তিকা জানান, "অবশ্যই। ২০২৫ সালেও কর্মক্ষেত্রে আমাদের মহিলাদের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হয়। কোনও পুরুষের যদি পদোন্নতি হয়, সে ক্ষেত্রে বলা হয় পরিশ্রমের জোরে যোগ্যতা দিয়ে পদোন্নতি হয়েছে। কিন্তু একজন মহিলার ক্ষেত্রে বলা হয়, অনুচিত পন্থায় রফা করেছেন বা তার শরীরের বিনিময়, সৌন্দর্যের নিরিখে পদোন্নতি হয়েছে। সেটা তো রয়েছেই। মহিলাদের দক্ষতা, কাজের প্রতি অনুরাগ উপেক্ষা করা হয় সর্বতোভাবে। আমাদের সমাজ ও দেশের অবস্থা খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। আরজি করের ঘটনার পরে মনে হয়েছিল কত কিছু বদলাবে! সম্প্রতি মেট্রো স্টেশনে চুমুর ঘটনাটা নিয়েও তো কত কাণ্ড! মানসিকতার যে কোনও রদবদলই হয়নি তা স্পষ্ট। এই পুরো ঘটনায় দোষী এক জনই, যিনি চুমু খাওয়ার ভিডিয়ো করেছিলেন আর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁকে নিয়ে তো কোনও কথাই হল না। তার অন্যায়টা নিয়ে কেউ কথা বলল না, উল্টে ভালবেসে কেউ কিছু করলে সেটা নিয়ে হইচই করা হয়। মেয়েটি চুমু খেয়ে যত অপরাধ করল!"

চিকিৎসকদের আন্দেলন নিয়ে তিনি বলেন, " একটা আন্দোলন হয়েছিল, সেটার তো একটা সমাপতন হবেই। চিকিৎসকেরাও কি এখন চিকিৎসা না করে ধর্মতলায় বসে রয়েছেন? আন্দোলন যদি এক বছর ধরে চলত, তা হলে আমরাও সেই মতো সময় বার করে যোগ দিতাম। সেটা তো হয়নি।

আমাদের কথা বাদ দিন, আন্দোলন তো অনেক বেশি সাধারণ মানুষদের। তাঁরা কি এখনও পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন? তা হলে আমরা কী করব? নিজেরাই কি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকব প্রত্যেক দিন?এ সব করে কিছুই হবে না। তখন আমরা সবাই ওর কথা শুনে রেগে গিয়েছিলাম। এখন তো দেখছি ও ঠিকই বলেছিল। জানি না। আমাকে কোনও কিছুই আর অবাক করে না। সব দিক থেকে আমরা অনেক নীচে নেমে যাচ্ছি। আরজি কর আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর আমাকে নিয়ে যে ধরনের কার্টুন বানানো হয়েছিল, তার থেকে কদর্য কিছু করা যায় বলে তো মনে হয় না।"

এ ছাড়াও সৌন্দর্য ধরে রাখতে স্বস্তিকা বোটক্স করাতে চান কি না এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, "অভিনয় শেষ কথা। তবে আমার যদি কখনও ইচ্ছে হয়, আমি বোটক্স করাব। সবাই করাচ্ছে তাই আমাকেও করাতে হবে এমন নয়। যদি কখনও আমার মনে হয়, এই পাতলা ঠোঁট ভাল লাগছে না অথবা, কপালে অত্যধিক ভাঁজ পড়ে যাচ্ছে, তা হলে করাব। মানুষ এত দিনে জেনে গিয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে ভাল দেখতে। ওটা নতুন কিছু নয়। আমার সাজ, সৌন্দর্য মানুষ দেখে নিয়েছেন এই ২৫ বছরে। তা সে শাড়ি হোক অথবা বিকিনি। যা দেখেননি তা হল নতুন চরিত্রের মাধ্যমে আমার অভিনয়। সেটা আমায় দেখাতে হবে।

আমি বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই। তখন বৃদ্ধার চরিত্রকে কেন্দ্র করেই গল্প হতে হবে। ছবিতে দিদার চরিত্রের প্রয়োজন বলেই অভিনয় করব না।"