- Home
- Entertainment
- Bengali Cinema
- মহানায়িকা সুচিত্রা সেন আজও বাঙালির মন জুড়ে, কিংবদন্তি নায়িকার ১০ অজানা কাহিনি
মহানায়িকা সুচিত্রা সেন আজও বাঙালির মন জুড়ে, কিংবদন্তি নায়িকার ১০ অজানা কাহিনি
- FB
- TW
- Linkdin
ষাটের দশকের সেই মায়াভরা চাহনি, গ্ল্যামার, লাস্যময়ীর অভিনয়ে আজও ডুবে রয়েছে ভক্তরা। মহানায়িকাকে নিয়ে আজও বাঙালির সেনসেশন অটুট। তার বাকা ঠোঁটের হাসি দেখলে আজও যেন হৃদপন্দনটা একটু হলেও বেড়ে যায়। বছর আসবে, বছর যাবে কিন্তু মহানায়িকা থেকে যাবে বাঙালি মননে, বাঙালির হৃদয়ে।
সবধরনের পোশাকেই তিনি সাবলীল ছিলেন। ইন্দো ওয়েস্টার্ন থেকে সাবেকিয়ানা সবেতেই বাজিমাত করেছেন তিনি। কখনও মাথায় বড় হ্যাট পরেছেন তো কখন চোখে গগলস-কোনওকিছুই যেন তাকে দমাতে পারেনি।
ছয়ের দশকের সাহসিনী যেভাবে প্রচলিত ট্যাবু ভেঙে নিজেকে মহানায়িকা হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন তা আজও অক্ষত রয়েছে সকলের হৃদয়ে। আর এই কারণেই তিনি উত্তম কুমারের নন, সকলের প্রিয় 'মহানায়িকা'।
স্বামীর পদবী ব্যবহার করে করে আজীবন নিজের মর্জিতে চলা খুব একটা সহজ ছিল না। সেই দক্ষতাও তিনি দেখিয়েছেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রথম দুটি ছবিই তার মুক্তি পায়নি। তারপরই 'সাড়ে চুয়াওর' ছবিতে উত্তম কুমারের সঙ্গে জুঁটি বাধে মহানায়িকা। অভিনয় দক্ষতা নিয়ে বলার আর কোনও অপেক্ষা রাখে না। তার অভিনয়ও আজও সকলের স্মৃতিতে গেঁথে রয়েছে।
সপ্তপদী' সিনেমার সংলাপ 'আমাকে ছুঁতে পারবে না'-এটা যেন তার কথা ভেবেই পরিচালক রেখেছিলেন। কারণ তাকে সত্যিই যেন ছোঁয়া যায় না। রিনা ব্রাউনই হোন আর সুচিত্রা সেন তার জনপ্রিয়তার ভাটা কোনওকিছুতেই কমেনি।
ছয়ের দশকে স্যুইম স্যুট পরার সাহস তো দূর কেউ মাথাতেই আনতে পারেনি । তিনি সেই সাহস দেখিয়ে সাহসীকতার সঙ্গে সেটাকে উপস্থাপনও করেছেন। তারপরেও কখনও ট্রোলের শিকার হননি অভিনেত্রী।
ফ্যাশন স্টেটমেন্টেও তখনকার সময়ে তিনি আইকন ছিলেন। তার লাস্যময়ী ভঙ্গির শরীরী উন্মাদনা সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। 'এই পথ যদি না শেষ নয়', সত্যিই যদি এই পথটা শেষ না হত তাহলে হয়তো সত্যিই খুব ভাল হতো। কিন্তু এই পথ তো একদিনই না একদিন শেষ হবে। আর এই পথ শেষ হয়ে বছরের পর বছর ফিরে ফিরে আসবে এই দিন।
মহানায়িকার জীবনে এক বিশেষ জায়গা জুড়ে রয়েছে 'আন্ধি'। গুলজারের পরিচালনায় কেরিয়ারের শেষদিকের হিন্দি চলচ্চিত্র ছি্ল এই ছবি। ইন্দিরা গান্ধীকে মাথায় রেখেই চরিত্রটি সাজানো হয়েছিল। আর গুলজারের প্রথম পছন্দ ছিলেন তিনি। এই ছবির জন্যই তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
'সাত পাকে বাঁধা' চলচ্চিত্রটি সুপারহিটের তকমা পেয়েছিল। তার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন সুচিত্রা সেন।
একসময় অভিনয় ছেড়ে নিজে স্বেচ্ছায় লোকচক্ষুর থেকে আড়ালে চলে যান অভিনেত্রী। একটানা দীর্ঘ ৩৬ বছর তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। তারপরেই তিনি সকলের কাছে এক রহস্যের মিথ হয়ে উঠেছিলেন। সেই ষাটের দশক থেকে আজকের দিন পর্যন্ত তিনি বাঙালির চিরদিনের স্বপ্নের নায়িকা হিসেবেই রয়ে গেছেন।
সালটা ২০১৪। কলকাতার বেলভিউ নার্সিংরুমে ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মহানায়িকা। তারপর ১৭ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন সুচিত্রা। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে স্তব্ধ হয়েছিল গোটা বিনোদন জগত। ছয়ের দশকের সাহসী অভিনেত্রী আজও অমলিন হয়ে রয়েছেন সকলের হৃদয়ে। মহানায়িকার আগমনও যেমন ছিল ধুমকেতুর মতো তেমনি চলে যাওয়াটাও ছিল নিভৃতে, নীরবে।