সংক্ষিপ্ত

৩০ অক্টোবর সুকুমার রায়ের জন্মদিন। প্রতি বছর এই দিনে কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকার নতুন ভাবে জন্ম নেন। কর্ণধার শাঁওলি মজুমদারের জাদুকণ্ঠের ছোঁয়ায়।

সাল ২০০৭ থেকে সাল ২০২২। ১৫ বছর প্রধরে সুকুমার রায়ের প্রতি একনিষ্ঠ আবৃত্তি ব্যান্ড ‘মহুল’। প্রতি বছর ৩০ অক্টোবর সংগঠনের কাছে মহোৎসব। ওই দিন সুকুমার রায়ের জন্মদিন। প্রতি বছর এই দিনে কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকার নতুন ভাবে জন্ম নেন। কর্ণধার শাঁওলি মজুমদারের জাদুকণ্ঠের ছোঁয়ায়। বাংলা কবিতাকে ব্যান্ডের ছন্দে বেঁধে কবি সুকুমারকে তিনি আধুনিক থেকে আধুনিকতম করে তোলেন। এ বছর, সেই প্রচেষ্টার ১৫ বছর। এ বছর তাই উদযাপনে বাড়তি রং। ‘মহুল’-এর সঙ্গী নব নালন্দা স্কুলের এক দল কচি-কাঁচা। স্কুল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে ছোটদের সঙ্গে সমান ভাবে অংশ নিলেন কয়েক জন বিখ্যাত মানুষও।

তাঁরা কারা? সুকুমার রায়ের গান-কবিতা-শ্রুতিনাটকে সাজানো এই অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ শাঁওলী মজুমদারের কণ্ঠ-সহ মহুল আবৃত্তির ব্যান্ড-এর পারফরমেন্স। ব্যান্ড সংস্কৃতির সঙ্গে যে সুকুমার রায়ের কবিতাকে ওতপ্রোতভাবে মিশিয়ে নেওয়া যায়, এখনও তার এক এবং একমাত্র নিদর্শন ‘মহুল’। ‘দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম’, ‘আয় রে ভোলা’, ‘খাই খাই’, ‘হুঁকোমুখো হ্যাংলা’ সহ পাঁচটি কবিতার ডালি সাজালেন শাঁওলী আর তাঁর ব্যান্ড। কবির কবিতা নিয়ে একেবারে ভিন্ন ধারার পরীক্ষানিরীক্ষা করলেন অরুণা দাশ আর কিঞ্জল চক্রবর্তী। ‘আবোলতাবোল’-এর ছড়ায় সমসাময়িক আবহ যোগ করে চেনা ধারাটাকেই তাঁরা পালটে দিলেন।

 

 

সুকুমার রায়ের লেখা ‘চলচ্চিত্ত চঞ্চরি’র বাছাই করা অংশ নিয়ে অনবদ্য এক শ্রুতিনাটক উপস্থাপন করলেন মলয় ঘোষ, আকাশ পাত্র, স্পন্দন দাশ এবং কিঞ্জল চক্রবর্তী। সেই সঙ্গে আবোলতাবোল-এর ছড়া শোনাল অভিরাজ, বিলাস, মৌলিক, সপ্তর্ষি এবং প্রিয়ব্রত। শুধু সুকুমারের ছড়া নয়, বাবুরাম সাপুড়ে, কাঠবুড়ো, হুকোমুখো হ্যাংলা-দের মতো কয়েকটি জনপ্রিয় চরিত্রও জীবন্ত হয়ে হেঁটেচলে বেড়াল এই উৎসব প্রাঙ্গনেই। আর হ্যাঁ, জন্মদিন যখন, কেক কাটা হবে না? হইহই করে সুকুমার রায়ের জন্মদিনের কেক কাটলেন তাঁর অনুরাগীরাই।

সুকুমার রায় যখন, তখন গল্প ছিল না? ছিল বইকি। একেবারে অজানা, অচেনা, বিরল সব গল্পের রসদ নিয়ে এসেছিলেন প্রখ্যাত গবেষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। আর তাঁর গল্প মানেই চমকে ওঠার মতো সব ঘটনা। সুকুমারের শব্দ দিয়ে কষে জব্দ করার মতো খেলা নিয়ে হাজির ছিল শব্দবাজি-ও। সুকুমার রায় মানে সবটাই কেমন হযবরল, তাই না? হ্যাঁ, সেই বিখ্যাত রচনার অংশ শ্রুতিনাটকে নিয়ে এল নব নালন্দা স্কুলের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে ছোটদের আবৃত্তি তো ছিলই। কাব্যায়নের ছাত্রছাত্রীদের ছড়াও বেশ উপভোগ্য। নব রবিকিরণ-এর শিল্পীদের সুকুমার-সঙ্গীতও মনে রাখার মতো। গোটা অনুষ্ঠানটি নিজেদের কথা দিয়ে গাঁথলেন স্পন্দন দাশ, সায়নী মজুমদার প্রমুখ।

 

 

আমন্ত্রিত অতিথি, সংবাদমাধ্যম এবং সুকুমার অনুরাগীদের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদানে ‘মহুল’ আবৃত্তি ব্যান্ড এবং নব নালন্দা স্কুলের এই সুকুমার উৎসব সন্ধ্যা উজ্জ্বল হয়ে রইল।