সংক্ষিপ্ত

তারকাদের সঙ্গে বসে কফির কাপে আলতো চুমুক দিতে দিতে ছবি দেখার শখ অনেক দিনের? ২৫ নভেম্বর সেই শখ মিটিয়ে নিতে পারেন অনায়াসেই।

সাল ২০১৬। সলমন খানের ‘সুলতান’ বা ‘টিউবলাইট’ মুক্তি পেয়েছে। প্রেক্ষাগৃহে ছবি নিয়ে তুমুল চর্চা। একটু দূরেই একদম ভিন্ন দৃশ্য। দু’জন মানুষ নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। কিন্তু ছবি বা নায়কের দিকে তাঁদের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই! এমন কেন হবে? সে দিনই প্রথম নাড়া খেয়েছিলেন পরিচালক সৌরশি দে। কারণ জানতে গিয়ে এক অন্য অনুভূতির মুখোমুখি! ওঁরা মূক-বধির। চারপাশের এত কলরব-কোলাহল ওঁদের কাছে মূল্যহীন। ওঁরা না শুনতে পান কানে। না কথা বলতে পারেন। ফলে, এত চর্চা, এত উত্তেজনা, সলমনকে নিয়ে এত মাতামাতি— বৃথা ওঁদের কাছে! সে দিন সৌরিশের আরও উপলব্ধি, শব্দও কখনও কখনও সোচ্চার হতে ব্যর্থ! নীরবতা সেখানে শক্তিশালী হাতিয়ার।

সে দিন থেকেই তিনি ঠিক করেন, যাঁরা নীরবতার ভাষা বোঝেন তাঁদের জন্য ছবি বানাবেন। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। কয়েকটি ছোট নির্বাক ছবিতে হাত পাকানোর পরেই ৮০ মিনিটের ‘জুতো’ বানিয়ে ফেললেন। যে ছবি প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি কলকাতার বিভিন্ন ক্যাফেতে মুক্তি পেতে চলেছে। এমন অভিনব ভাবনার নেপথ্যে পরিচালক-অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ক্যাফে ওহানা’। যেখানে ৩৬৫x২৪ সিনেমায় বুঁদ হয়ে থাকেন শহরের নব্য থেকে অভিজ্ঞ ‘সিনেমাওয়ালা’রা! ২৫ নভেম্বর নজরুল তীর্থের পাশাপাশি এই ক্যাফেতেও মুক্তি পাবে সৌরিশের ‘জুতো’। যেখানে এক জুতো-পাগল আর জুতোর প্রতি তাঁর অসীম প্রেম ধরা দিয়েছে।

 

 

মূক-বধিরদের জন্য নীরব ছবি তো বানানো হল। এ বার তাঁদের দেখানোর জন্য কী বিশেষ ব্যবস্থা?

এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে সৌরিশ বলেছেন, ‘নজরুল তীর্থে ওঁদের জন্য প্রিমিয়ারের পুরো শো-টাই থাকছে বিনামূল্যে। ইতিমধ্যেই ৪০ জন মূক এবং বধির প্রথম দিনেই ছবি দেখার টিকিট কেটে ফেলেছেন। ৩০ নভেম্বরও এমনই একটি সংস্থার শিশুরা দেখতে আসবে আমার ছবি। এ ছাড়া, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যে সমস্ত বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন ছবি দেখতে যাবেন তাঁরা বিনামূল্যে ছবিটি দেখতে পাবেন।’ পরিচালকের দাবি, সর্ব সাধারণও যাতে ইচ্ছেমতো ‘জুতো’য় পা গলাতে পারেন সেই ব্যবস্থাও থাকবে। এমন অভিনব ভাবনায় যে ছবি তৈরি তার প্রচার এবং দেখানোর ব্যবস্থাও অভিনব হওয়া উচিত। সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তথাগত।

 

 

তিনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে বলেছেন, ‘এমন অনেক নতুন পরিচালকের স্বাধীন ছবি তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। তাঁরা প্রেক্ষাগৃহে দেখানোর সুযোগ পায় না। অর্থের অভাব এবং আরও নানা কারণে। সেই জায়গা থেকেই ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে দেখানোর পাশাপাশি ক্যাফেতে দেখানোও হবে। ক্যাফে ওহানা দিয়েই শুরু হচ্ছে জুতোর ক্যাফে যাত্রা! কে বলতে পারে, আগামিতে এই ধরনের প্রিমিয়ারই হয়তো জনপ্রিয় হবে কলকাতায়।’ নজরুল তীর্থের পাশাপাশি ২৫ নভেম্বর থেকে এক সপ্তাহ ছবিটি চলবে এখানে। এর পর ছড়িয়ে পড়বে শহরের অন্যান্য ক্যাফে কর্নারে। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভাস্কর দত্ত, চলন্তিকা গঙ্গোপাধ্যায়। এ ছাড়াও আছেন, কুণাল ভৌমিক, অর্পণ, গৌতম বসাক প্রমুখ। ছবির গল্প, চিত্রনাট্য, সম্পাদনা এবং রঙের বিন্যাসে সৌরিশ নিজেই।

 

 

উদ্বোধনের দিন তথাগতর সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারেন দেবলীনা দত্ত, শ্রীলেখা মিত্র, বিক্রম চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই। তারকাদের সঙ্গে বসে কফির কাপে আলতো চুমুক দিতে দিতে ছবি দেখার শখ অনেক দিনের? ২৫ নভেম্বর সেই শখ মিটিয়ে নিতে পারেন অনায়াসেই।