সংক্ষিপ্ত
হাসপাতালে ভর্তি পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী! এখন কেমন আছেন তিনি…
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ চলচ্চিত্র পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত এই পরিচালক। আশির দশকে 'ময়নাতদন্ত', 'চোখ', 'দেবশিশু'র মতো চর্চিত ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি। কিছুদিন আগে রিজেন্ট পার্কের বাড়ির খাট থেকে পড়ে যান পরিচালক। পড়ে গিয়ে আঘাত লাগার কারণে পরিচালকের কোমরের হাড় ভেঙেছে। এ ছাড়াও রয়েছে বুকে ও ফুসফুসের সংক্রমণ। বর্তমানে এসএসকেএম-এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
গত দেড় বছর ধরে রাজ্য় সরকারের তরফে দেওয়া ফ্ল্যাটে একাই থাকেন পরিচালক। বহুদিন ধরে তাঁর দেখাশোনার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন অর্ঘ্য মুখোপাধ্য়ায়। তাঁরতাঁর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যায়ভার বহন করছে রাজ্য সরকার। একটি সংবাদ মাধ্যমকে অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় জানান, "অনেকদিন ধরেই ওঁনার প্রস্টেটের সমস্যা। ক্যাথিডার লাগানো ছিল, বৃহস্পতিবারই সেটি খোলা হয়। গত পরশুদিন ফোন মারফত জানান, তিনি পড়ে গিয়েছেন। আমি গিয়ে কোনওরকমে তাঁকে উদ্ধার করি। পাঁজাকোলা করে খাটে শোওয়ানোর পর দেখি যথেষ্ট শ্বাসকষ্ট রয়েছে। দ্রুত জিয়াউল হকের সঙ্গ যোগাযোগ করা করি। দীর্ঘদিন ওঁনার চিকিৎসা করছেন ডঃ দীপ্তেন্দ্র সরকার, তাঁকেও জানানো হয়। জিয়াউল হক (ডেপুটি সুপার, এসএসকেএম) দ্রুত ওঁনাকে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।"
প্রবীণ পরিচালকের ফিমার বোনে চিড় রয়েছে পরিচালকের। অর্থোপেডিক সার্জেনদের একটি দল বুধবার তাঁকে দেখতে আসবেন। অস্ত্রপচার ছাড়া কোনও গতি নেই বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। তবে কবে অস্ত্রপচার হবে তা নিয়েই চূড়ান্ত নেওয়া হবে বুধবার।
পরিচালকের পরিবার এই ঘটনা জানেন কি না সে প্রসঙ্গে অর্ঘ্যবাবু সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, " না কেউ তো খোঁজ রাখে না। পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ওঁনার বৌদি নীলাঞ্জনা চক্রবর্তীকে আমরা জানিয়েছি। ঋতাভরী বা চিত্রাঙ্গদা কিংবা শতরূপা স্যানালকে জানানোর প্রশ্ন আসে না, বা আমার কাছে তাঁদের নম্বরও নেই। আমার মনে না উৎপলেন্দু বাবু ওঁদের জানাতে চায়। গতবার অসুস্থতার খবর নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। উনি আমাকে ছেলে বলে মানেন। আমাকে বহুবার বলেছেন, আমি ওটা ভুলে যেতে চাই। পিতৃত্ব তো ভোলা যায় না। তবে উনি ওই ট্রমায় আর ফিরতে চান না।"
হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই পুরোনো দিনের স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন এই প্রবীণ পরিচালক। বছর ৬ আগে পরিচালকের অসুস্থতা ও অর্থাভাবের খবর সংবাদমাধ্যমে শিরোনামে উঠে এলে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তাঁর দুই কন্যা ঋতাভরী চক্রবর্তী ও চিত্রাঙ্গদা শতরূপা। ঋতাভরী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, "উৎপলেন্দু চক্রবর্তী কেবল আমাদের বায়োলজিক্যাল বাবা। দীর্ঘদিন উনি শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করেছেন শতরূপা সান্যালের উপর। সেই কারণেই ২০০০ সালে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। মায়ের যন্ত্রণার কথা ভুলে উৎপলেন্দু চক্রবর্তীকে তিনি কোনওদিন বাবা বলে কাছে টানতে পারবেন না।"