- ফুটবল সাম্রাজ্য হারিয়েছে তাদের রাজপুত্রকে
- বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন মারাদোনা
- প্রয়াণের পরও আলোচনায় মারাদোনার হ্যান্ড অফ গড গোল
- কিন্তু সেই বিতর্কিত গোল নিয়ে কি বলেছিলেন মারাদোনা
বুধবার ব্যুয়েনস আইরয়ে নিজের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন দিয়াগো মারাদোনা।তারপর থেকেই শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব। আলোচনা চলচে মারাদোনার বর্ণময় ফুটবল কেরিয়ার নিয়ে। মারাদোনার ফুটবল জীবন মানেই বিতর্ক ও অসামান্য ফুটবলের অদ্ভূত 'ককটেল'। আর মারাদোনার প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা ফুটবল জীবনের সেরা বিতর্ক ও সেরা গোল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আর সেখানে ৮৬-বিশ্বকাপের ইংল্যান্ড ম্যাচের প্রসঙ্গ উঠবে না তা আবার হয় নাকি। ১৯৮৬-র মেক্সিকো ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। আজটেকা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ড। এই ম্যাচ ঘিরে কার্যত যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। কারণ বছর চারেক আগেই ফকল্যান্ডের যুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে হারতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। তাই ফুটবল ময়দানকেই আর্জেন্টাইনরা বেছে নিয়েছিলেন বদলার মঞ্চ হিসেবে। দর্শক ঠাসা গ্যালারিতে টানটান উত্তেজনায় শুরু হয় ম্যাচ। ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল শূন্যভাবে।
ম্য়াচের দ্বিতীয়ার্ধের ৬ মিনিটের মাথায় আসে ফুটবল বিশ্বের সর্বকালের সেরা বিতর্কিত গোলটি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্কনমণের ঝাঁঝ বাড়াতে শুরু করে আর্জেন্টিনা দল। ইংলিশ ডিফেন্ডার স্টিভ হজ একটি বল ক্লিয়ার করার জন্য গোলরক্ষক পিটার শিল্টনকে লক্ষ্য করে তুলে মারেন। বলটি পেনাল্টি বক্সের মধ্যে উড়ে আসতে দেখে তা ফিস্ট করে ক্লিয়ার করতে যান ব্রিটিশ গোলরক্ষক পিটার শিল্টন। অপরদিকে বলটিকে ধাওয়া করে হেড দেওয়ার জন্য বক্সে ঢুকে পড়েন মারাদোনা। হেড করার সময় মারাদোনার বাঁ হাত ও মাথা খুব কাছাকাছি ছিল। তাই প্রথমে বল মারাদোনার হাতে লাগে ও তারর মাথায়। হেড করার বদলে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন দিয়েগো মারাদোনা। যাকে ‘হ্যান্ড অব গড’ বলে পরবর্তী কালে আখ্যা দিয়েছিলেন স্বয়ং আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এই বিতর্কিত গোলের কিছু পরেই আসে শতাব্দীর সেরা গোল। যেখানে মাঝ মাঠের নীচ থেকে বল নিয়ে গিয়ে একের পর এক ইংলিশ ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে চোখ ধাঁধানো গোল করেন মারাদোনা। ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সেমিতে যায় নীল-সাদা ব্রিগেড।
ফুটবল ইতিহাস ও তার জীবনের সেরা বিতর্ক নিয়ে কোনও দিনও খুব একটা অনুশোচনা করেননি দিয়াগো। যদিও ২০০৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে মারাদোনা জানিয়েছিলেন,'যদি ফিরে গিয়ে ইতিহাস বদলাতে পারি, তা হলে সেটা করব।' এছাড়াও মারাদোনা বলেছিলেন,'ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারির ব্যবস্থা থাকলে ওই গোলের জন্য গ্রেফতাও হতে পারতাম।' কিন্তু ক্ষমা চাইতে কোনও দিনই রাজি ছিলেন না ফুটবলের রাজপুত্র। পরিস্কার জানিয়েছিলেন,'এ নিয়ে ক্ষমা চাইব না। আমি বলতে চেয়েছি সে দিনের ইতিহাস বদলানো যাবে না। তাই আমার ক্ষমা চাওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না। সে দিন স্টেডিয়ামে ১ লক্ষ দর্শক ছিলেন। ২২ জন ফুটবলার ছিল। দু’জন লাইন্সম্যান ও এক জন রেফারি ছিলেন। তখন ইংল্যান্ডের ফুটবোলাররা প্রশ্ন তোলেনি কেন? তা ছাড়া জীবনে কখনওই ক্ষমা চাইনি। আর এত দিন বাদে ক্ষমা চাওয়ারও অর্থ হয় না।' ফলে 'হ্যান্ড অফ গড' গোল নিয়ে যতই বিতর্ক থাকনা আমৃত্যু তা নিয়ে ক্ষমা চাননা মারাদোনা। বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরও তার বিতর্কিত গোল ও শতাব্দীর সেরা গোল নিয়ে আলোচনা চলছে বিশ্ব জুড়ে। কিন্তু নিজের জায়গায় চিরকাল অনড় থেকেছেন ফুটবলের রাজপুত্র। কারণ নাম যে তাঁর দিয়াগো মারাদোনা, বিতর্ক তার কাছে তুচ্ছ, মেজজাটাই আসল।
Read Exclusive COVID-19 Coronavirus News updates, from West Bengal, India and World at Asianet News Bangla.
খেলুন দ্য ভার্চুয়াল বোট রোসিং গেম এবং চ্যালেঞ্জ করুন নিজেকে। கிளிக் செய்து விளையாடுங்கள்
Last Updated Nov 26, 2020, 2:57 PM IST