- Home
- World News
- International News
- ভেঙে গেল ২০ বছরের বন্ধুত্ব, বড় পদক্ষেপে চিন বিরোধী জোটে সামিল হল ব্রিটেনও
ভেঙে গেল ২০ বছরের বন্ধুত্ব, বড় পদক্ষেপে চিন বিরোধী জোটে সামিল হল ব্রিটেনও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চিন বিরোধী জোটে সামিল হল ব্রিটেন-ও। মার্কিন চাপের মুখে মঙ্গলবার ব্রিটিশ সরকার ব্রিটেনের ফাইভজি নেটওয়ার্ক থেকে পর্যায়ক্রমে চিনা টেলিকম সংস্থা হুয়ায়েই-এর অপসারণের অনুমোদন দিল। বেজিং অবশ্য এই পদক্ষেপ হলে প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু বেজিং-এর সেই বাণিজ্যিক চাপের মুখে মাথা নোয়ালো না বরিস জনসন সরকার।
- FB
- TW
- Linkdin
এদিন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সভাপতিত্বে ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদ এবং জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। তারপরই ব্রিটেনের ডিজিটাল মন্ত্রী অলিভার ডাউডেন ব্রিটিশ সংসদে সরকারি এই পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানান চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ব্রিটিশ টেলিকম সরবরাহকারী হুয়ায়েই সংস্থার কাছ থেকে কোনও ফাইভজি সরঞ্জাম কিনতে পারবে না। আর ২০২৬ সালের শেষের মধ্যে সমস্ত বিদ্যমান হুয়ায়েই-এর সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলতে হবে।
এই পদক্ষেপের ফলে চিনের বিরুদ্ধে ভূ-রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বড় জয় পেল বলে মনে করা হচ্ছে। চিনের খবরদারির বিরুদ্ধে এতদিন পর্যন্ত বেশিরভাব দেশই চোক তুলে তাকাতে পারত না। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া - একের পর এক দেশ চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে।
প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্রিটেনের মোবাইল পরিষেবা সরবরাহকারীরা হুয়ায়েই সংস্থার প্রযুক্তিগত সহায়তার উপর নির্ভরশীল। ব্রিটিশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের বড় খরচের ধাক্কা খেতে হবে। একইসঙ্গে চিনের মতো এশিয় অর্থনৈতিক শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বরিস জনসনের 'গ্লোবাল ব্রিটেন' স্বপ্নও ধাক্কা খাবে। ।
এর আগে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্রিটেনকে বিশ্বশক্তি হিসাবে ধরে রাখতে বরিস জনসন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কনজারভেটিভ দলের কিছু নেতাকেও চটিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতেই ব্রিটেনে দ্রুত নতুন ডেটা ফাইভজি নেটওয়ার্ক গঠনের জন্য হুয়ায়েই সংস্থাকে অনুমতি দিয়েছিলেন।
এতে দারুণ চটেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। ব্রিটিশ সরকারের সেই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির কাজ ব্যাহত হবে বলে জানিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকী, ইংল্যান্ড থেকে বেশ কিছু মার্কিন যুদ্ধবিমান সরানোর কথাও বলা হয়েছিল।
কারণ ওয়াশিংটনের মতে এই বেসরকারী চিনা তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা বেজিং-এর হয়ে বিভিন্ন দেশে গুপ্তচরবৃত্তি করে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলিতে তারা ফাইভজি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা তারা।
হুয়ায়েই সংস্থা অবশ্য বরাবর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বরিস জনসন প্রশাসনের সামনে তাদের সঙ্গে ব্রিটিশ নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে গত দুই দশকের সহযোগিতার কথা তুলে ধরেছিল। এর আগে থ্রিজি এবং ফোরজি নেটওয়ার্কগুলির সুরক্ষা ব্যবস্থার কথা বলেছিল।
তবে চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুয়ায়েই সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হুয়ায়েই সংস্থাকে ফাইভজি নেটওয়ার্কের জন্য মার্কিন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক চিপ এবং সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ নিষিদ্ধ করা হয়। জানা গিয়েছে এরপরই এই বিধিনিষেধের ফলে হুয়ায়েই সংস্থা বিশ্বস্ত মার্কিন সরবরাহকারীদের বদলে বিকল্প সরবরাহকারীদের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছিল ব্রিয়িশ নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তা নেই বলেই মত দিয়েছিল তারা। এরপরই ব্রিটিশ সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতে চিনা অ্যাপ বাতিল করা হলেও, মার্কিন পরামর্শ অগ্রাহ্য করে ফাইভজি নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য হুয়ায়েই-কে ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে গালওয়ান-এর তিক্ত অভিজ্ঞতার পর বিএসএনএল-কে মোদী সরকার হুয়ায়েই-এর যন্ত্রাংশ না ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে।