কোডিভ টিকা নিয়ে রটনা আর গুজবের জবাব, করোনা টিকার 'সাত-সত্যি' জানাল নীতি আয়োগ
- FB
- TW
- Linkdin
১. কেন্দ্র বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন কিনতে সক্রিয় নয়
কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বিশ্বের সমস্ত বড় টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ রেখে চলছে। তালিকায় রয়েছে ফাইরাজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মর্ডানার মত প্রথম সারির সংস্থাগুলিও। ভারত তাদের ভ্যাকসিন সরবরাহ ও তৈরির সবরকম প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এই সংস্থাগুলির ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাওয়া যাবে না। এই সংস্থার ভ্যাকসিন কেটা শেল্ফ অব আইটেম কেনার মত নয়। ভ্যাকসিনগুলি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সরবরাহের পরিমাণ খুবই সীমিত। তবে দেশীয় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকরা দেশের জন্য নির্দ্ধিধায় কাজ করতে বিদেশি সংস্থাগুলি তেমনটা করবে না। তাই দেশীয় সংস্থাগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্পুটনিক ভি-ও যোগান বাড়াতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
২. আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিনগুলির অনুমোদন করা হয়নি
এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় সরকারইউএসএফডিএ, ইএমএ, ব্রিটেনেরর এমএইচআরএ আর জাপানের পিএমডিএ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি ব্যবহারের তালিকায় অনুমোদিত ভ্যাকসিনগুলির জন্য নিয়ম অনেকটাই শিথিল করেছে। এই ভ্যাকসিনগুলি দেশে এসে গেলে ট্রায়াল দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। অন্যাদেশে সুপ্রতিষ্টিত সংস্তাতে তৈরি করোনা টিকার পরীক্ষার প্রয়োজনীয়র নিয়মের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন করা হয়েছে।
৩. কেন্দ্র টিকার অভ্যন্তরীন উৎপাদন বাড়াতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না
কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালের প্রথম দিকে আরও বেশি সংস্থাকে টিকা তৈরি করতে সক্ষম করার জন্য কার্যকর সুবিধার্থীর ভূমিকা পালন করেছে। এখন কেবল ভারত বায়োটেক রয়েছে যার আইপি রয়েছে। এখন স্থির হয়েছে ভারত বায়োটেক নিজের প্ল্যান্ট বাড়ানোর পরিবর্তে আরও তিনটি সংস্থাকে টিকার প্রযুক্তি দিয়ে দেবে। অক্টোবর থেকেই মাসে কোভ্যাকসিনের উৎপাদন ১০ কোটি হবে ।একই সঙ্গে তিনটি পিএসইউসঙ্গে মাসে ৪.০ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করবে এই সংস্থা। সেরামকেই কোভিশিল্ডের উৎপাদন বাড়াতে উৎসহ দেওয়া হচ্ছে। টিকা তৈরি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গেই কথাবার্তা চলছে। একাধিক ভারতীয় সংস্থাগুলিকেও সাহায্য করা হচ্ছে। ভারত বায়োটেকের সিঙ্গেল ডোড ইন্ট্রান্সাল ভ্যাকসিনে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থি বিনয়োগ করেছেন। যা করোনা বিশ্বে গেম চেঞ্জওয়ার হিসেবে স্থান পেতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে। ২০২১ সালের শেষ দিকে ২০০ কোটি ডোজের ভ্যাকসিন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে।
৪. কেন্দ্রের কাছে লাইসেন্সের আবেদন
বাধ্যতামূলক লাইসেন্স দেওয়া খুব আকর্ষীয় বিকল্প নয়। কারণ এটি সূত্র বা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে সক্রিয় অংশীদারিত্ব সামন সম্পদের প্রশিক্ষণ কাঁচামালের আমদানি উচ্চ স্তরের জৈব সুরক্ষা ল্যাব প্রয়োজনীয়। টেক ট্রান্সফার হল চাবি আর এটি সেই সংস্থাটির হাতে রয়েছে যা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের এক ধাপ স্তর উন্নীত করেছে। কোভ্যাকসিন আর স্পুটনিক ভি সেই ভাবেই তৈরি হবে দেশে।
৫. কেন্দ্র রাজ্যগুলির ওপর দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছে
টিকা নির্মাতাদের তহবিল থেকে শুরু করে ভারতে বিদেশী ভ্যাকসিন আনা আর তার উৎপাদনের ব্যবস্থার দ্রুত অনুমোদন দেওয়া সবই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার যে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে তাতে রাজ্যের বাসিন্দারা সম্পূর্ণরূপে বিনামূল্য টিকা দেওয়া যাবে।রাজ্যগুলির কাছে সুস্পষ্ট ধারনা রয়েছে বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ আর দেশীয় সংস্থারগুলির উৎপাদন ক্ষমতা সম্পর্কে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে টিকা কর্মসূচি চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারে উদ্যোগে। মে মাস থেকেই পরিস্থিতি বদল হতে শুরু করে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রথম তিন মাসে স্বাস্থ্য কর্মী ও ফ্রন্ট লাইন করোনা যোদ্ধাদের টিকা দিতে দিতে পারেনি তারাই সমস্যায় পড়ছে। রাজ্যের ডাকা বিশ্বব্যাপী দরপত্র এখনও ফলাফল জানায়নি। তাতেই স্পষ্ট যে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের যোগান চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম।
৬. কেন্দ্র রাজ্যকে টিকা দিচ্ছে না
কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে সম্মতি নির্দেশিকা অনুযায়ী পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহ করছে। আগেই রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা সম্পর্ক সমস্ত তথ্য দেওয়া হয়েছিল। আগামী দিনে টিকার যোগান আরও বাড়বে। বেসকারি চ্যানেলের মাধ্যমে রাজ্যগুলি ২৬ শতাংশ ডোজ আর বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে রাজ্যগুলি ২৫ শতাংশ ডোজ টিকা পাচ্ছে। তবে ২৫ শতাংশ ডোজের টিকার চাহিদাই বর্তমানে বেশি। দেশের কিছু নেতা ভ্যাকসিন নিয়ে এমন সব কথাবার্তা বলছেন যাতে দেশবাসীর মনে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। তারাও চাইছেন দ্রুততার সঙ্গে টিকাকরণ করে নিতে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেও দাবি করা হয়েছ। মহামারির এই সময় রাজনীতি না করাই শ্রেয় বলেও জানান হয়েছে।
৭, শিশুদের টিকা দেওয়ার কেন্দ্রের অনীহা
এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনও দেশই শিশুদের টিকাকরণ করেনি। শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও কোনও সুপারিশ নেই। শিশুদের টিকা সম্পর্কে এখনও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শিশুদের টিকা নিয়ে হোয়াটঅ্যাপগ্রুপে রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছএ। এগুলি রাজনীতির পক্ষে ভালো হলেও নাগরিকদের পক্ষে মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। শিশুদের টিকা দেওয়ার আগে পর্যাপ্ত তথ্য. পরীক্ষা আর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে।