- Home
- Sports
- Cricket
- মহিলাদের ক্রিকেট সার্কিটে তেন্ডুলকর বলে ডাকা হয় তাঁকে, মিথালি রাজের অসামান্য কাহিনি যা অনুপ্রেরণা দেয়
মহিলাদের ক্রিকেট সার্কিটে তেন্ডুলকর বলে ডাকা হয় তাঁকে, মিথালি রাজের অসামান্য কাহিনি যা অনুপ্রেরণা দেয়
- FB
- TW
- Linkdin
মিতালি রাজ যোধপুর রাজস্থানে ১৯৮২ সালের ৩ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দরাই রাজ ভারতীয় বিমান বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন এবং তার মায়ের নাম লীলা রাজ। মিতালী মাত্র ১০ বছর বয়স থেকে খেলাধুলা শুরু করেন এবং ১৭ বছর বয়সে তাকে ভারতীয় দলের জন্য বাছাই করা হয়েছিল।
ছোট বেলা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে ভালো ক্রিকেট খেলে সকলের নজরে চলে আসেন মিতালি রাজ। জাতীয় নির্বাচকদের নদরে আসতেও বেশি সময় লাগেনি। ১৯৯৯ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেক হয় মিতালি রাজের। ওই ম্য়াচে তিনি ১১৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন।
২০০১-০২ মরসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লখনউতে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় মিতালির। ১৭ আগস্ট ২০০২ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৯ বছর বয়সে তৃতীয় টেস্টে ক্যারেন রোল্টনের ২০৯* রানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত টেস্ট রানের রেকর্ডটি ভেঙে দেন মিতালি রাজ। তিনি ২১৪ রানের নতুন রেকর্ড গড়েন। যদিও ২০০৪ সালের মার্চ মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৪২ রান করে পাকিস্তানের কিরণ বালুচ তাঁর রেকর্ডটি ভেঙে দেন।]
২০০২ সালে ক্রিকইনফো মহিলা বিশ্বকাপের সময় ট্রাইফয়েড হয় মিতালির এবং তাঁর এই অসুস্থতার ফলে ভারত বিশ্বকাপের মূল পর্বে খুর একটা আগে যেতে পারেনি। যদিও ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাতে মহিলা বিশ্বকাপে তিনি ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছাতে সাহায্য করেন, তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায়।
২০১৩ সালে মিতালি রাজের অধিনায়কত্বে ভারতীয় দল মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছায়। কিন্তু ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ৯ রানে হার শিকার করতে হয়। ফলে অধরা থেকে যায়। ২০১৯ টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
২০২২ সালে দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার জন্য শেষ চেষ্টা করেছিলেন মিতালি রাজ। কিন্তু স্বপ্নপূরণ হয়নি। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে ভারতীয় মহিলা দলকে। তারপর থেকেই মনে মনে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন অবসর নেওয়ার। ৮ জুন ২০২২ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মিতালি রাজ।
নিজের ২ যুগের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ভারতীয় দলের বহু যুদ্ধের সাক্ষী মিতালি রাজ। বহু যুদ্ধ জয়ের সৈনিকও তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবথেকে বেশি রান করার শিরপাও রয়েছে মিতালির দখলে। এখনও পর্যন্ট মোট ২৩২টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন মিতালি রাজ। মোট রান করেছেন ৭৮০৫। শতরান ৭টি ও অর্ধশতরান ৬৪টি। গড় ৫০.৬৮।
টি২০ ক্রিকেটে ৮৯টি ম্যাচে মিতালি রাজের ব্যাট থেকে এসেছে ২৩৬৪ রান। ১৭টি অর্ধশতরান করেছেন তিনি। গড় ৩৭.৫২, সর্বোচ্চ স্কোর ৯৭। টেস্ট ক্রিকেটে ১২টি ম্য়াচে মিতালি করেছেন ৬৯৯ রান। ১টি শতরান ও ৪টি অর্ধশতরান করেছেন তিনি। টেস্টে মিতালি রাজের সর্বোচ্চ স্কোর ২১৪ রান।
পরিশ্রম আর অদম্য জেদই ২৩ বছরে এতখানি সাফল্য এনে দিয়েছে মিতালিকে। ব্যাটার হিসেবে তাঁকে সচিন তেণ্ডুলকরের সঙ্গে এক আসনে বসিয়েছে বিসিসিআই। বিশ্বের একমাত্র মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে ১০ হাজার রানের মালকিন তিনি। আটবার আইসিসি ওয়ানডে ব়্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থান ছিল তাঁর দখলে। শুধু ব্যাটার হিসেবেই নয়, দলকে নেতৃত্ব দিয়েও বহু ট্রফি জিতিয়েছেন তিনি।
মিতালি রাজ তার দুর্দান্ত খেলার জন্য দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান খেলরত্ন পেয়েছেন। তিনি দেশের ৫ম ক্রিকেটার এবং প্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে এই সম্মান পেয়েছেন। এর আগে তিনি ২০০৩ সালে অর্জুন পুরস্কার, ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১৭ সালে ভোগ স্পোর্টসপারসন অফ দ্য ইয়ার পেয়েছিলেন। ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর আগামি জীবনের জন্য তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সকলে।