কেন একদিনের ক্রিকেট থেকে হঠাৎ অবসর নিলেন বেন স্টোকস, জানুন আসল রহস্য
ভারতীয় দলের (Team India) বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজ খেলার সময়ও কেউ ভ্রুণাক্ষরও টের পায়নি। কিন্তু সিরিজ শেষ হতেই সোমবার আন্তর্জাতিক একদিনের ক্রিকেট (ODI Cricket) থেকে অবসর ঘোষণা করেছে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস (Ben Stokes)। কিন্তু মাত্র ৩১ বছর বয়সে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন ব্রিটিশ তারকা অলরাউন্ডার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জেনে নিন ইংল্যান্ডের একদিনের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বেন স্টোকসে ওডিআই ক্রিকেট থেকে অবসর (Retire) নেওয়ার কারণ।
- FB
- TW
- Linkdin
একদিনের ক্রিকেট থেকে হঠাৎই অবসর ঘোষণা করেছেন বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটে অলরাউন্ডার হিসেবে শীর্ষস্থানেও থেকেছেন বেন স্টোকস। ভারতের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজ খেলার সময়ও বোঝা যায়নি সিরিজ শেষের পরের দিনই এত বড় ঘোষণা করবেন তিনি।
একদিনের ক্রিকেটে বেন স্টোকসের অবদানও কম ইংল্য়ান্ড ক্রিকেটের জন্য়। ২০১৯ সালে দেশের প্রথম একদিনের বিশ্বকাপ জয়ে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় তিনিই নিয়েছিলেন। ব্য়াট হাতে ৮৪ রানের স্মরণীয় ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ৫০ ওভারের পর সুপার ওভারেও ম্যাচ ড্র হয় তার ব্যাটে ভর করে। সেষে সর্বাধিক বাউন্ডারি মারার বিচারে বিশ্বজয়ী হয় ইংল্য়ান্ড।
সোমবার হঠাৎই একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন বেন স্টোকস। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান নিজের অবসরের সিদ্ধান্তের কথা। একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও টেস্ট ক্রিকেট ও টি২০ ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে ব্রিটিশ তারকা অলরাউন্ডার।
জো রুটের পরবর্তী জমানায় বেন স্টোকসকেই টেস্ট দলের অধিনায়ক করা হয়েছে। লাল বলের ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়েই ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করেছিলেন বেন স্টোকস ও তার দল। তারপর এজবাস্টন টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে জয় পান ইংল্যান্ড।
২০১১ সালের ২৫ অগাস্ট ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। এখনও পর্যন্ত ১০৪টি ম্যাচ খেলে ২৯১৯ রান করেছেন। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০২। তিনটি শতরান এবং ২১টি অর্ধশতরান রয়েছে। মঙ্গলবার ১০৫তম এক দিনের ম্যাচ খেলতে নামবেন। তার পরেই অবসর নেবেন স্টোকস।
বেন স্টোকসের বয়স বয়স মাত্র ৩১। এত কম বয়সে কিন্তু হঠাৎ কেনও একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে গেলেন বেন স্টোকস। সেই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে ক্রিকেট বিশ্বে। স্টোকস নিজের অবসরের কথা জানিয়ে যে পোস্ট করেছেন তাতেই লেখা রয়েছে তার অবসরের কারণ। আর তা হল অত্যাধিক ওয়ার্ক লোড।
ইনস্টাগ্রামে স্টোকস লিখেছেন,'সিদ্ধান্ত নেওয়ার থেকে এটা ভাবা আরও কঠিন ছিল যে, এই ফরম্যাটে আমি নিজের ১০০ শতাংশ দিতে পারব না। আমার পক্ষে তিনটে ফরম্যাটে একসঙ্গে খেলে যাওয়া এখন আর সম্ভব নয়। শুধু আমার শরীর সঙ্গ দেবে না তাই নয়, ঠাসা সূচির মাঝে আমার থেকে যা প্রত্যাশা করা হচ্ছে সেটাও আমি দিতে পারব না।'
একইসঙ্গে তিনি যে পারফর্ম না করে জোর করে দলে থাকতে চান না সেই কথাও জানিয়েছেন স্টোকস। লিখেছেন,'জোর করে নিজের জায়গা ধরে রাখতে চাই না। আমার বদলে অন্য কেউ আসুক, যে জস (বাটলার) এবং ওর দলের জন্য নিজের সেরাটা দেবে। অন্য কোনও ক্রিকেটারের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার এটাই সেরা সময়। আশা করি আমি যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি, সেটা সেও করতে পারবে।'
এছাড়াও স্টোকস লিখেছেন ,'এই সিদ্ধান্তের ফলে টেস্টে নিজের সেরাটা দিতে আমার কোনও বাধা থাকল না। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের উপরেও আমি সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ। জস বাটলার, ম্যাথু মট, সতীর্থ এবং সাপোর্ট স্টাফদের উদ্দেশে অনেক শুভেচ্ছা রইল। গত সাত বছর ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ১০৪টে ম্যাচের প্রতিটাই উপভোগ করেছি। আর একটা বাকি। ঘরের মাঠের দর্শকের সামনে শেষ ম্যাচ খেলার থেকে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।'
মঙ্গলবার ইংল্য়ান্ডের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিজের একদিনের কেরিয়ারের শেষ ম্য়াচ খেলবেন বেন স্টোকস। সেখানে নিজের সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য ব্রিটিশ তারকা অলরাউন্ডারের। ভবিষ্যতে ক্রিকেটে অন্য দুই ফর্ম্যাটে স্টোকসকে দেখার জন্য মুখিয়ে থাকবে বিশ্ব জুড়ে তার ফ্যানেরা।