গর্ভাবস্থায় নিয়মিত তেঁতুল খাচ্ছেন? জেনে নিন তেঁতুল আদৌ উপকারী কি না
গর্ভধারণের পর দীর্ঘ ৯ মাস ধরে মায়ের গর্ভে একটু একটু করে বড় হয়ে ওঠে সন্তান। এই সময়টা সব মেয়ের কাছে সব থেকে সুন্দর সময়। তবেই এই দীর্ঘ ৯ মাস নানান শারীরিক জটিলতা, নানান কষ্ট সহ্য করে সন্তানের জন্ম দিতে হয়। এই সময় শারীরিক ও মানসিক উভয় সমস্যা দেয়। এই সময় খাবারের প্রতি যেমন অনিহা হয়, তেমনই কিছু খাবার খেতে ইচ্ছে করে। এই তালিতায় আছে তেঁতুল। গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। টক খাওয়া সাধারণ বিষয়। তবে, তেঁতুল কি আদৌ গর্ভবতী মহিলা ও গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য নিরাপদ? জেনে নিন গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাবেন কি না।
- FB
- TW
- Linkdin
তেঁতুলে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য। গর্ভাবস্থায় অনেক মেয়ে গোড়ালিতে ব্যথা ও শরীরে ফোলাভাবের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত তেঁতুল খান। গর্ভাবস্থায় অনেকেই টক খেতে পছন্দ করেন। এই সময় তেঁতুল খেলে তা স্বাদের জন্য শুধু নয়। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতেও বেশ উপকারী। এটি শরীর ফোলা ভাব কমানোর সঙ্গে পেশীর ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
তেঁতুলে আছে ফ্ল্যাভোনয়েড ও পলিফেনলের মতো উপাদান। এই উপাদান গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মেয়ের নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা যায়। এই সময় অনেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে তেঁতুল খেতে পারেন। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও পলিফেনলের মতো উপাদান ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
গর্ভাবস্থায় শরীরে দেখা দেয় নানান রকম পরিবর্তন। হরমোনের পরবর্তন ঘটে, তেমনই পরিবর্তন ঘটে রক্ত চাপের। গর্ভাবস্থায় অনেকে মেয়ে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তারা এই সময় তেঁতুল খেতে পারেন। তেঁতুল পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ। সঙ্গে এতে আছে সোডিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে। এর গুণে সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ সমস্যা গর্ভাবস্থায়। গর্ভধারণ থেকে সন্তানের জন্ম দেওয়া এই দীর্ঘ ৯ মাস দেখা দেয় নানান শারীরিক জটিলতা। অধিকাংশ হবু মায়েরা এই সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। এর থেকে মুক্তি পেতে ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া টোটকা মেনে চলুন। নিয়ম করে তেঁতুল খান। এই সমস্যা আর দেখা দেবে না।
গা বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতে পারেন তেঁতুলের গুণে। গর্ভাবস্থায় গা বমি ভাব নতুন কথা নয়। এর থেকে মুক্তি পেতে নিয়ম করে তেঁতুল খান। গা বমি লাগলে ১ টুকরো তেঁতুল নুন দিয়ে চুষে খান। এতে সহজে মুক্তি পাবেন সমস্যা থেকে। তেঁতুলের গুণে দূর হবে একাধিক শারীরিক জটিলতা।
তবে, তেঁতুল খাওয়া যে সম্পূর্ণ নিরাপদ এমন নয়। তেঁতুল দেহের আইবুপ্রোফেন শোষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক। এই সময় অধিক তেঁতুল বাচ্চার ক্ষতি করে। তাই প্রথম তিন মাসের মধ্যে তেঁতুল খেতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তা না হলে দেখা দিতে পারে শারীরিক জটিলতা।
ওষুধের সঙ্গে তেঁতুল খাবেন না। ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তেঁতুল খেলে শরীরের অন্য প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। এতে এমন কিছু উপাদান আছে যা ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে খেতে শরীরের ক্ষতি করবে। সুস্থ থাকতে মেনে চলুন এই বিশেষ টোটকা। ওষধু খাওয়ার বেশ কিছু সময় পর তেঁতুল খান।
রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে তেঁতুলের জন্য। এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, অধিক তেঁতুল খেলে সেই ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই গর্ভাবস্থায় ঠিক কতটা পরিমাণ তেঁতুল খাওয়া উচিত তা আগে থেকে জেনে নিন। বেশ খেতে হতে পারে বিপদ। গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মেয়ের শরীরে আলাদা আলাদা জটিলতা দেখা দেয়। তাই আপনার জন্য তেঁতুল উপযুক্ত কি না তা জেনে নিন।
তেমনই বেশ কিছু মশলা আছে যা গর্ভস্থ মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর। এমন কিছু মশলা আছে যা খেলে হতে পারে গর্ভপাত। সে কারণে গর্ভধারণের পরই মহিলাদের একটি চার্ট দেওয়া হয়। এই সময় মেথি, হিং, রসুন ও জিরের জল না খাওয়াই ভালো। এগুলো একাধিক শারীরিক জটিলতা বৃদ্ধি করে গর্ভস্থ বাচ্চার ক্ষতি করে।
তেমনই গর্ভাবস্থায় রোজ সঠিক খাবার খান। খারাপ খাদ্যাভ্যাস নানান জটিলতা তৈরি করে। রোজ নিয়ম করে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল -সহ একাধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খান। যা বাচ্চার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে। পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার শরীরের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাদ্যগ্রহণ করুন।