মাটিতে ঘুমানো শরীরের জন্য খুবই উপকারী, জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মত
- FB
- TW
- Linkdin
সারাদিনের কাজের চাপে ক্লান্ত, সবাই চায় তাদের একটা প্রশান্তির ঘুম হোক। মানুষ ভালো ঘুমের জন্য বিছানায় আপস করে না। একটি প্যাডযুক্ত বিছানা একটি ভাল এবং আরামদায়ক ঘুম বলে মনে হতে পারে, তবে মেঝেতে ঘুমানো স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে আদর্শ বলে মনে করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তাড়াতাড়ি ঘুম ও ভালো ঘুমের জন্য বিছানা, তোষক ইত্যাদি আরামদায়ক, যাতে ঘুমাতে কোনও সমস্যা না হয়। বেশিরভাগ মানুষ নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কোনও প্যাডেড বিছানা বা পাতলা গদি শরীরের জন্য উপকারী। তবে জানেন কি বিছানায় ঘুমানোর পরিবর্তে আপনি মাটিতে ঘুমানো শুরু করতে পারেন। মাটিতে ঘুমালে শরীরের জন্য অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
মাটিতে ঘুমানোর আগে, সঠিক তথ্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন আপনি এই অভ্যাসটিতে নতুন হন। মাটিতে পাতলা মাদুরে ঘুমানো ভালো হয়। একটি পাতলা গদি বা যোগা মাদুরে উপর ঘুম অেক ভালো হয়।
আপনি যদি মাটিতে ঘুমাচ্ছেন তবে মনে রাখবেন যে, সব সময় আপনার সোজা হয়ে ঘুমানো প্রয়োজন। বালিশ ছাড়া ঘুমানোর অভ্যাস করার আগে শুরুতে পাতলা বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। একবার আপনি এটি অভ্যস্ত হয়ে গেলে, আপনি বালিশ সরাতে পারেন।
যখনই ঘুমাবেন, বালিশ ছাড়াই ঘুমান। এটি শ্বাসকষ্ট কমাতে পারে। মাটিতে ঘুমালে শরীর ও হাড়ের সারিবদ্ধতা ঠিক থাকে। নরম গদিতে ঘুমালে প্রায়শই শরীরের কিছু অংশে বেশি চাপ পড়ে, যার কারণে হাত-পায়ে ব্যথা বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এই অভ্যাস থাকলে, প্রায়শই শরীরের ভঙ্গিতে পরিবর্তন দেখা যায়। মাটিতে ঘুমালে এই সমস্যা কমে।
মাটিতে ঘুমানোর উপকারিতা সবার আগে মেরুদণ্ড সুস্থ রাখে। স্পাইনাল কর্ড কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এবং মস্তিষ্কের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। মাটিতে ঘুমালে মেরুদন্ড শক্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
মাটিতে ঘুমানোর অভ্যাস কাঁধ এবং নিতম্বের পেশীগুলির ক্ষয় থেকে মুক্তি দেয়। নরম বিছনায় দীর্ঘদিন ধরে ঘুমোলে পিঠে, পিঠের নীচে, কাঁধ, বাহু, ঘাড়, মাথা ইত্যাদিতে ব্যাথা হয় এবং পেশীগুলিতে ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। পিঠে ব্যথা হলে মাটিতে ঘুমালে খুব উপকার পাওয়া যায়। আসলে এটি কোমর ব্যথার একটি কার্যকর চিকিৎসা।
এছাড়াও মাটিতে ঘুমালে শরীরের তাপমাত্রা কম থাকে। গদিতে ঘুমালে শরীরের তাপ অনেক বেড়ে যায় এবং এর ফলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। মাদুর বা গালিচায় ঘুমালে এই সমস্যার সমাধান হবে। মাটিতে ঘুমালে রক্ত সঞ্চালনও বাড়ে এবং মাংসপেশিও শিথিল হয়। এতে মন শান্ত থাকে।
মাটিতে ঘুমোলে মানসিক চাপও কমে। মনে রাখতে হবে শুরুতে মাটিতে ঘুমানো কঠিন মনে হলেও ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হবে। কেউ যদি কোনও স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে মাটিতে ঘুমানো তার পক্ষে ঠিক নাও হতে পারে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ এড়াতে লকডাউনের কারণে অনেকেই ঘরে বসে অফিসের কাজ করছিলেন।
ঘরে থেকে কাজের ক্ষেত্রে একটানা একই আসনে বসে কাজ করার কারণে কোমর ব্যথার সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক। দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে কাজ করার ফলে কোমড়ে ব্যাথা এখন এক সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। তাই আগেই পেইন কিলার না খেয়ে এই উপায় কাজে লাগান যদি না কমে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।