- Home
- India News
- Death of Collarwali: বাঘিনীর শেষকৃত্যে উপচে পড়ল মানুষ, ছবিতে ছবিতে চিনে 'কলারওয়ালি'কে
Death of Collarwali: বাঘিনীর শেষকৃত্যে উপচে পড়ল মানুষ, ছবিতে ছবিতে চিনে 'কলারওয়ালি'কে
সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ বলছেন, ১৭ বছর ধরে সে রানীর মতো বেঁচে ছিল। কেউ বলছেন, একটি যুগের সমাপ্তি। কেউ লিখেছেন, 'রাণী আর নেই'। শনিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয়েছে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের (Pench Tiger Reserve) বিখ্যাত বাঘিনী (Tigress) 'কলারওয়ালি'র (Collarwali)। আর তার মৃত্যুর পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের শ্রদ্ধা উপচে পড়ছে। সোমবার সসম্মানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে বনকর্মীরা থেকে স্থানীয় আদিবাসী জনতা একযোগে শ্রদ্ধা জানান তাকে। কে 'কলারওয়ালি', কেন সে এত জনপ্রিয়, আসুন ছবিতে ছবিতে জেনে নেওয়া যাক -
- FB
- TW
- Linkdin
২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টে চারটি ব্যাঘ্র-শাবকের জন্ম হয়েছিল। তাদেরই একজন ছিল কলারওয়ালি। ২০০৮ সালের মার্চ মাসে বাঘিনীটির গলায় রেডিও-কলার লাগানো হয়েছিল। কিন্তু, কয়েকদিন পরে রেডিও কলারটি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে আবার আরেকটি রেডিও-কলার লাগানো হয়েছিল। এর থেকেই তার নাম হয় 'কলারওয়ালি'।
২০০৫ থেকে ২০২১ - দীর্ঘ ১৭ বছর বেঁচে ছিল কলারওয়ালি। ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটা একটা রেকর্ড। কারণ, বাঘের গড় বয়স ১২ বছর। তবে, যে কারণে কলারওয়ালি খ্যাতি পেয়েছিল, তা হল সে ২৯ টি শাবকের জন্ম দেওয়ার রেকর্ড করেছিল। এর জন্য তাকে 'সুপারমম' বলা হত।
বনকর্তারা জানিয়েছেন, ২০০৮ থেকে ২০১৮ - ১১ বছরে মোট ৮ বার শাবকের জন্ম দিয়েছিল সে। ৮ বারে ২৯ টি শাবক জন্মেছিল। তার মধ্যে ২৫ টি জীবিত রয়েছে। কাজেই 'সুপারমম' কলারওয়ালি শুধু জন্মই দেয়নি, সন্তানদের বড় করার বিষয়েও সে ছিল অনন্য।
২০১০ সালের ২৩ অক্টোবর সে একসঙ্গে ৫ শাবকের (চারটি মহিলা এবং একটি পুরুষ) জন্ম দিয়েছিল। ব্যাঘ্র প্রজনন গবেষকরা জানিয়েছেন: কোনও বাঘিনী এক সময়ে ৫ শাবকের জন্ম দিয়েছে এমন রেকর্ড আর নেই। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সে শেষবার প্রসব করেছিল, জন্মেছিল চারটি শাবক।
ভারতে ২০০০-এর প্রথম দশকে বাঘের জনসংখ্য়া দারুণভাবে কমে গিয়েছিল। কলারওয়ালি বছরের পর বছর সন্তন দারণ করে ভারতে বাঘ সংরক্ষণের প্রচেষ্টায় ব্যাপক অবদান রেখেছে। ২০০৮ সালে, মধ্যপ্রদেশের পান্না টাইগার রিজার্ভ বাঘহীন হয়ে পড়েছিল। তখন কলারওয়ালিরই এক মহিলা শাবককে সেখানে পাঠানো হয়েছিল।বাঘের জনসংখ্যা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য। তাই সংরক্ষণবাদীদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় ছিল কলারওয়ালি।
একইসঙ্গে পর্যটকদের মধ্যেও দারুণ জনপ্রিয় ছিল সে। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, কলারওয়ালি পর্যটকদের পছন্দ করত। জিপের শব্দ শুনলে সে কাচা রাস্তায় হাঁটত, যেন পর্যটকদের দেখতে চায় সে। তাকে পর্যটকপ্রেমি বলেছেন তাঁরা।
শেষ সময় অবশ্য একাই ছিল কলারওয়ালি। তার শাবকরা সবাই এখন পূর্ণ বয়স্ক, জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে তাদের বাস। ১৭ বছর বয়সী বাঘিনীটিকে বনকর্মীরা শেষ দেখেছিলেন গত ১৪ জানুয়ারি, ভুরা দেব নালার কাছে। বার্ধক্যজনিত কারণে কলারওয়ালি খুব দুর্বল ছিল সে। নালার পাশে শুয়ে ছিল, হাঁটার ক্ষমতা ছিল না। তাকে পশুচিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
রবিবার রাজ্যের বন বিভাগের পরিচালনায় কলারওয়ালির শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। স্থানীয় আদিবাসী নেতা শান্তা বাই তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মুখাগ্নি করেন। তিনি ইকো-বিকাশ সমিতির প্রধানও বটে। ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির (এনটিসিএ) নির্দেশিকা মেনে বাঘিনীটির ভিসেরা পরীক্ষারে জন্য পাঠানো হয়েছে।
কলারওয়ালির শেষকৃত্যে স্থানীয় আদিবাসী জনতা, বনকর্মীরা-সহ বহু মানুষ অংশ নেন। প্রত্যেকেই ফুল দিয়ে, মালা দিয়ে কর জোড়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানও টুইট করে এই কিংবদন্তি বাঘিনীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।