- Home
- World News
- International News
- ভারতের নতুন মাথাব্যথা - তিব্বতে মিলিশিয়া বাহিনী গড়ল চিন, লক্ষ্য এক ঢিলে দুই পাখি
ভারতের নতুন মাথাব্যথা - তিব্বতে মিলিশিয়া বাহিনী গড়ল চিন, লক্ষ্য এক ঢিলে দুই পাখি
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) বরাবর ভারতের সঙ্গে অচলাবস্থার মধ্যেই এক ঢিলে দুই পাখি মারার প্রচেষ্টায় নামল চিন। যা নিয়ে ভবিষ্যতে ভারতের কপালে ভাঁজ পড়তে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। বিভিন্ন সূত্র থেকে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর এসেছে, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে (TAR)-এর ভিতর অন্যতম কৌশলগত এলাকা, চুম্বি উপত্যকায় তিব্বতি যুবকদের নিয়ে নতুন মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করেছে চিনা সেনাবাহিনী (PLA)।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে চিনা পিএলএ, তিব্বতী যুবকদের নিয়ে পিএলএ-র বিশেষ তিব্বত সেনা ইউনিট গঠন করেছিল। কিন্তু, তার থেকে এই মিলিশিয়া বাহিনী পৃথক বলেই জানা গিয়েছে।
এর জন্য প্রায় ১০০ জন করে যুবককে দুটি ব্যাচে তিব্বতিদের সামরিক প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। প্রথম ব্যাচের সদস্যদের ইতিমধ্য়েই পিএলএ-র ট্রেনিং শেষ হয়েছে। তাদের, ইয়াডং, চিমা, রেনকিংগাং, পিবি থাং এবং ফারি-সহ চুম্বি উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ব্যাচটিকে ফারির একটি পিএলএ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তবে এখনও এই মিলিশিয়াগুলির কোনও উর্দি বা পদ তৈরি করা হয়নি। সেসব ছাড়াই পিএলএ বাহিনীর অধীনে তারা কাজ করছে। স্থানীয় এলাকা, ভাষা, মানুষ এবং আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের জ্ঞানকে কাজে লাগাতেই এই স্থানীয় যুবকদের নিয়ে মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। স্থানীয় সীমান্তবর্তী অঞ্চলেই তাদের মোতায়েন করা হচ্ছে।
চুম্বি উপত্যকার কৌশলগত অবস্থান বিবেচনা করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এই উন্নয়নের উপর গভীরভাবে নজর রাখছেন। জানা গিয়েছে, এই উপত্যকার পূর্বে ভুটান এবং পশ্চিমে সিকিম। মধ্যে ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা। কাজেই চুম্বি উপত্যকা দিয়ে হামলা চালালে সহজেই চিন সেনা, শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে ভারতীয় পক্ষের কৌশলগত যোগাযোগের রাস্তা বন্ধ করে দিতে পারে।
সেইসঙ্গে, গত বছর ভারতের সঙ্গে সামরিক অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত শিক্ষাই চিনকে এই তিব্বতি যুবকদের নিয়োগের রাস্তায় ঠেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরের মে মাস থেকে সীমান্ত বরাবর বিমানবন্দর, হেলিপ্যাড, ক্ষেপণাস্ত্রের সুবিধা-সহ চিন তাদের পক্ষের পরিকাঠামোর দ্রুত উন্নতি ঘটিয়েছিল। কিন্তু, তারপরও তাদের পিছু হঠতে হয়েছে মূলত পাহাড়ি এলাকায় যুদ্ধের অনভিজ্ঞতার কারণে, এমনটাই মনে করেন চিন-বিশেষজ্ঞরা।
তাঁদের দাবি, বেশিরভাগ চিনা সেনা সমতল-ভূমির বাসিন্দা। সুউচ্চ পার্বত্য এলাকায় তাদের মাত দিয়েছিল, তিব্বতিদের নিয়ে গঠিত ভারতের স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স। তাই, তার জবাব হিসাবে তরুণ তিব্বতিদের কাজে লাগাতে চাইছে বেজিং।
তবে এই প্রবণতা শুধু মাত্র ভারতকে নিশানা করেই, তা মনে করছেন না তিব্বত বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় গোয়েন্দা তথ্য বলছে, পিএলএ তাদের বিশেষ তিব্বত সেনা ইউনিটে নিয়োগপ্রাপ্ত তিব্বতিদের প্রশিক্ষণ শেষে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে, তাঁদের আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য।
কমিউনিস্ট চিনে এই অনুশীলন এতদিন দেখা যায়নি। তাই, তিব্বত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত তিব্বতের বেকার যুবকদের কাছে কিছু ধর্মীয় মাইলেজ পাওয়ার কৌশল নিয়েছে চিনা পিএলএ। ধর্মকে কাজে লাগিয়ে তাদের আরও বেজিংমুখী করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।