- Home
- West Bengal
- Kolkata
- ধর্মতলার ম্যানহোল থেকে মিলল গুজরাটি দম্পতির ফোন, ভবানীপুর জোড়া খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য
ধর্মতলার ম্যানহোল থেকে মিলল গুজরাটি দম্পতির ফোন, ভবানীপুর জোড়া খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য
- FB
- TW
- Linkdin
পুলিশ সূত্রে খবর, হরিশ মুখার্জীর ওই বহুতল ফ্ল্যাটে গুজরাটি ফ্যামিলির ঘরের বাথরুমের ভিতরে পায়ের ছাপ মিলেছে। আর এখান থেকেই একে একে দুই মিলতে পারে বলে অনুমান। কারণ টেবিলে খাবার ছড়ানো ছিটানো ছিল। দুটি গ্লাসও রাখা ছিল। কীভাবে আততায়ীরা ঢুকল, এনিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে কি এই ঘটানায় পরিচিত কারও যোগাযোগ রয়েছে, বলে প্রশ্ন উঠেছে।
লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগ এবং ফরেন্সিক বিভাগ সমানভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। জানা গিয়েছে, শাহ পরিবার সবসময়ই দরজায় তালা দিয়ে রাখতেন। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে পরিচিত কি কেউ এসেছিলেন, যাকে দেখে দরজা খুলে দিয়েছিল ওই গুজরাটি পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত বছর ৫৬-র অশোক শাহ-র দেহ যখন উদ্ধার করা হয়, সেই সময় তিনি ছিলেন খালি গায়ে। পরনে ছিল শুধু একটি হাফ প্যান্ট। শরীরে একটি বড় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। যা থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলেই অনুমান করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই সেই অনুমান সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। পাশাপাশি বছর ৫২-র স্ত্রী রশ্মিতা শাহের শরীরে ভোঁতা কোনও অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জোড়া খুনের খবর পৌছতেই ঘটনাস্থলে পৌছয় ভবানীপুর থানার পুলিশ। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়েই ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জী রোডের ওই বহুতল ফ্ল্যাটে যান পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। 'যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে', ভবানীপুর জোড়াখুনের পর ফোন করে পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, ওই গুজরাটি ফ্যামিলির বাড়ির একটি দরজা বন্ধ থাকলেও অপরটি ছিল খোলা। এমনকি ঘরের মধ্য়ে টিভি চলছিল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল খাবার। একনজরে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এই ঘরেই খুন হয়েছেন ওই গুজরাটি দম্পতি অশোক শাহ এবং স্ত্রী রেশমি। ভবানীপুর জোড়েখুনে তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড স্কোয়াডের তদন্তকারী শাখা। এর সঙ্গে তদন্ত চালাচ্ছে ভবানীপুর থানার পুলিশও।
ইতিমধ্য়েই সিসিটিভি ফুটেজে উঠে এসেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সেখানে কিছু গতিবিধি লক্ষ করা গিয়েছে। তবে এনিয়ে জোর তদন্ত চলছে। অপরাধীদের সনাক্ত করে ফেললেই তদন্তের কিনারায় পৌছানো যাবে। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, ভাল করে খতিয়ে দেখে বোঝা গিয়েছে, খুনের আগে আততায়ীর সঙ্গে রীতিমত ধস্তাধস্তি হয়েছে ওই দম্পত্তির। তবে গোটা এলাকায় ১০০ বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তাকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভবানীপুর গুজরাটি দম্পতি অশোক শাহ এবং স্ত্রী রশ্মিতা হত্যাকাণ্ডে, ব্যবসায়ী খোয়া যাওয়া মোবাইল উদ্ধার হয়েছে ধর্মতলার ম্যানহোলের পাশ থেকে।ইতিমধ্য়েই পুলিশ ওই মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখতে শুরু করছে। যদিও এখনও মোটিভ স্পষ্ট নয়।
এদিকে ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে ময়নাতদন্তের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য। মাথার পিছন দিক থেকে গুলি করা হয় রশ্নিতা শাহকে। পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছে তাঁকে। মাথা এফোঁড় ওফোঁড় করে বেরিয়ে যায়গুলি।এবং স্বামী অশোক শাহ-র ঘাড়ে কোমরে এবং পেটে ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ে বারবার ফোন করেও দুপুর থেকে মা-বাবার সঙ্গে ফোন করে পাননি। সন্দেহ হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যে ৬ নাগাদ ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জী রোডের ওই ফ্ল্যাটে চলে আসেন। সদর দরজা খোলা দেখে ভিতরে ঢুকতেই রশ্মিতা শাহের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন মেয়ে। এরপরে বেডরুমে পড়ে থাকতে দেখেন বাবা অশোক শাহ-র রক্তাক্ত দেহ। ধরে নেওয়া হচ্ছে অপারেশন চলেছে দুপুরেই।
গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। তদন্ত যতো এগোচ্ছে ক্রমশ তত রহস্যের জট খুলছে। জানা গিয়েছে অশোক শাহ-র ট্রেডিং ছাড়াও চায়না টর্চের ব্যাবসা ছিল। গত কয়েক বছর ধরে কিছু করছিলেন না তিনি, বলেই জানা গিয়েছে।