- Home
- West Bengal
- Kolkata
- এক প্রিয়ঙ্কা এখন পারিবারিক ব্যাবসায়, আর এক প্রিয়াঙ্কা শ্রীঘরে, রিজওয়ানুরের মতো হাল হবে না তো জুনিয়ার হত্যার
এক প্রিয়ঙ্কা এখন পারিবারিক ব্যাবসায়, আর এক প্রিয়াঙ্কা শ্রীঘরে, রিজওয়ানুরের মতো হাল হবে না তো জুনিয়ার হত্যার
ভালোবাসার বাহুডোরে বারবার বাঁধা পড়ে পুরুষ-নারী। এই অমোঘ আকর্ষণের টান এতটাই তীব্র হয় যে একেক সময় দুটি প্রাণের সত্ত্বার মিলন ছাড়া অন্যকিছু ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না। কী আশায় বাধি খেলাঘর, বেদনার এই বালুচরে- এককালে এই গানের কলি সমস্ত প্রেমিকদের মুখে মুখে ঘুরেফিরে বেড়াত। আসলে ভালোবাসা হল এমন এক ক্ষমতা যা সমস্ত অসম্ভবকেও সম্ভব করে তুলতে পারে। ভেঙে দিতে পারে সমস্ত বাধার বেড়়াজাল। এই ভালোবাসার বাহুডোরেই নিজেদের এক করেছিলেন রিজওয়ানুর রহমান এবং প্রিয়ঙ্কা টোডি। এই ভালোবাসাতেই একে অপরের ভরসারস্থল হয়ে পড়েছিলেন জুনিয়ার মৃধা ও প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী ওরফে মুনমুন চৌধুরী। রিজওয়ানুর আজ লায়লা-মজনুর প্রেমের মতো এক স্মৃতিকথায় পরিণত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা এখন হাইপ্রোফাইল সিক্রেট লাইফে-র ঘেরাটোপে। জুনিয়ারের পরিণতিও রিজওয়ানুরের মতো। একটা বুলেট আজ থেকে ১০ বছর আগে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছিল তাঁর ভালোবাসাকে। আর জুনিয়ারের লেডিলাভ প্রিয়াঙ্কা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে এখন কারাবন্দি এক আসামী। কিন্তু, এই প্রিয়াঙ্কার পিছনেও রয়েছে তাঁর সেলিব্রিটি ফুটবলার তথা শিল্পপতি এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব বলরাম চৌধুরী। রিজওয়ানুরের প্রিয়ঙ্কার পিছনে যেমন ছিলেন অশোক টোডি, প্রদীপ টোডিরা। ঠিক তেমনই। বলতে গেলে দুই প্রিয়াঙ্কার কাহিনি-তে এক আশ্চর্য অন্তর্নিহিত সাদৃশ্য সামনে চলে আসে।
- FB
- TW
- Linkdin
এমসিএ পাশ। সেইসঙ্গে এক আইটি সংস্থার ভালো মাইনের চাকরি। তরুণ জুনিয়ার মনের কোঠায় বেঁধে ফেলেছিল হাজারো স্বপ্ন। যেমন স্বপ্ন সকলেই দেখে থাকে। এক উজ্জ্বল এবং আনন্দের ভবিষ্যত। সুন্দর একটা পরিবার এবং অবশ্যই মনের মতো এক সঙ্গী। হাই-সোসাইটির গ্ল্যামারের বিচ্ছুরণ ছড়ানো প্রিয়াঙ্কা-র আবেদনও স্বাভাবিকভাবে প্রলুব্ধ করেছিল জুনিয়ারকে। তাই বন্ধুত্বের গভীরতায় প্রিয়াঙ্কা-র সঙ্গেই এই উজ্জ্বল স্বপ্নের সওয়ারি হয়েছিলেন জুনিয়ার। তারমধ্যে প্রিয়াঙ্কা তাঁর জীবনের আসল সত্য এবং বিবাহিত হওয়ার খবরটা চেপে যাওয়ায় জুনিয়ার আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন।
জুনিয়ার-প্রিয়ঙ্কাকাণ্ডে-র কয়েক বছর আগেই ঘটেছিল রিজওয়ানু রহমান ও প্রিয়ঙ্কার টোডির কাহিনি। যেখানে এক উচ্চবর্ণ এবং বিশাল উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ী ঘরের তরুণী প্রিয়ঙ্কা টোডি বিয়ে করেছিলেন তাঁরই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের শিক্ষক তরুণ রিজওয়ানুর রহমান-কে। রিজওয়ানুরের পরিবার এই বিয়ে স্বীকৃতি দিলেও পরিস্কার না বলে দিয়েছিল প্রিয়ঙ্কার পরিবার। ক্ষমতাবলে লালবাজারের একগুচ্ছ পুলিশ অফিসার-কে দিয়ে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল প্রিয়ঙ্কার পরিবার। এমনকী লালবাজারের ডিসি ডিডি-র ঘরে ডেকে মুচলেকায় সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অর্থে বলীয়ানদের নিরন্তর চাপ এবং পুলিশের অমানুষিক চাপে ভেঙে পড়েছিলেন রিজওয়ানুর। শিয়ালদহ মেন শাখায় পাতিপুকুরে রেললাইনে মিলেছিল রিজওয়ানুরের ক্ষতবিক্ষত দেহ।
রিজওয়ানুরকাণ্ড শুধু একটা ঘটনার বা সাধারণ মানুষের আবেগের বিস্ফোরণ ছিল না, বলতে গেলে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের পটপরিবর্তনে একটা অনুঘটকও হয়ে গিয়েছিল। রিজওয়ানুকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক মাইলেজ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছেলে হারানো হাহাকারভরা মা-এর আর্তনাদের পাশে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তীব্র বিরোধিতায় মুখ পুড়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারের। খোদ পুলিশমন্ত্রী হিসাবে ভর্ৎসনার শিকার হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। পদ থেকে সরিয়ে দিতে হয়েছিল কলকাতা পুলিশের কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়, এবং দুই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিং ও অজয় কুমার। সাসপেন্ড করতে হয়েছিল ডিসি ডিডি থেকে শুরু করে কড়েয়া থানার কয়েক জন পুলিশ কর্তাকে।