কত কোটি টাকার মালিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রয়েছে কত সম্পত্তি, জেনে নিন বিস্তারিত
এসএসসি দুর্নীতি (SSC Scam) মামলায় এর আগে একাধিকবার রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ( Partha Chatterjee) জেরা করেছে করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। তারপর তদন্তে নেমে শনিবার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান শিল্প মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে ইডি (Enforcement Directorate)। তার সম্পত্তির পরিমাণ ও আয়ের উৎসের দিকটিও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কত টাকার মালিক, স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণই বা কত তার। জেনে নিন বিস্তারিত।
- FB
- TW
- Linkdin
এসএসসি দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে শুক্রবার থেকে ম্য়ারাথান জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার গ্রেফতার করেছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্প মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছে ২১ কোটিরও বেশি টাকা। সঙ্গে গয়না, বিদেশী মুদ্রা ও একাধিক সম্পত্তি।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানোর পর থেকেই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানান বিতর্ক। গ্রেফতার হওয়ার আগেও একাধিকবার সিবিআইয়ের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আয়, অর্থ ও সম্পত্তি নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু হয় নানান বিতর্ক।
২০২১ সালেক বিধানসভা নির্বাচনে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেখানেও নিজের সম্পত্তির বিবরণ দিয়েছেন তিনি। যাকে নিয়ে এত কথা সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তি নাকি মোটে এক কোটি টাকার বেশি। হলফনামা অনুযায়ী তেমনটাই জানা যাচ্ছে।
বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনকে একটি হলফনামা জমা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যেখানে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ দেখা যায় প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩ টাকা। এক্ষেত্রে হাতে নগদ টাকার পরিমাণ মাত্র ১ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। অপরদিকে, অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯১ লক্ষ টাকার আশেপাশে।
একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা বিনিয়োগ, জীবন বীমা, প্রভিডেন্ট ফান্ড সবকিছু মিলিয়ে মোট টাকার পরিমাণ ৯০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩.৮৪ টাকা। শুধু প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং মিউচুয়াল ফান্ড মিলিয়ে অংক ৫০ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮৩৫ টাকা। নাকতলায় তাঁর নিজস্ব বাড়ি রয়েছে, যার মূল্য ২৫ লক্ষ টাকা।
তবে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যে হলফনামা পেশ করেন তৃণমূল নেতা, সেখানে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২০২১ সালের থেকে বেশি। টাকার অঙ্কে প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ ৫৯ হাজার। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, গত পাঁচ বছরে সম্পত্তির পরিমাণ অনেকাংশে কমেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
২০১৯-২০ অর্থবর্ষে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর আয়ের পরিমাণ ছিল ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭২০ টাকা। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫-১৬ বর্ষে পার্থর বার্ষিক আয় ছিল ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা; এরপর আগামী তিন বছরে সেই পরিমাণ হয় যথাক্রমে ৭ লক্ষ, ৬ লক্ষ এবং ৫ লক্ষের কিছু কম। তবে এহেন অর্থের পরিমাণ কম হওয়ার কারণ কী, তা অবশ্য জানা যায়নি।
তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতারের পর বিরোধীরা অভিযোগ করছে যে নামে অনামে আরও একাধিক সম্পত্তি রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এমন কী কী সম্পত্তি রয়েছে আদৌ আছ কিনা সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ইডি ও সিবিআই।
সম্প্রতি সিপিআইএমের মুখপাত্র গণশক্তিতে দাবি করা হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা ব্লকের ক্ষিরিন্দা মৌজায় ১৫ বিঘা জমির ওপর যে বিশাল ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বিসিএম ইন্টারন্যাশনাল রয়েছে সেটি নাকি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে।
পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িথে থেকে যে বিপূল পরিমাণ অর্থ পাওয়া গিয়েছে তার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। এখন দেখার এসএসসি দুর্নীতি মামলার তদন্তে আর কোন কোন নয়া মোড় উঠে আসে।