- Home
- Lifestyle
- Travel
- এখানে আসে ভিনগ্রহী আর একশৃঙ্গরা, চলুন ঘুরে আসি ভারতের এমন রহস্যে মোড়া সেরা ১০টি জায়গায়
এখানে আসে ভিনগ্রহী আর একশৃঙ্গরা, চলুন ঘুরে আসি ভারতের এমন রহস্যে মোড়া সেরা ১০টি জায়গায়
এক বৈচিত্র্যময় দেশে ভারত (India)। যা সর্বদাই আকর্ষণ করে পর্যটকদের (Traveler)। এখানে যেমন প্রাকৃতিক শোভা (Nature Of Beauty) আপনার মন কেড়ে নেয়। তেমনই রয়েছে রহস্য মোড়া (Mysterious Place) এলাকাও। এমন অনেক জায়গা রয়েছে সেখানের রহস্যের সমধান আরও করতে পারেনি আধুনিক প্রযুক্তি বা বিজ্ঞান।
| Published : Sep 22 2021, 08:11 PM IST / Updated: Sep 25 2021, 02:25 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
হাম্পি, কর্ণটক (Hampi, Karnataka)
১৫শতকে তৈরি হয়েছে হাম্পির রাজবাড়ি। এটি প্রাচীন ঐতিহ্যগুলির মধ্যে একটি। এখানেই রয়েছে বিত্তলা মন্দির কমপ্লেক্স। এই মন্দিরে ৫৬টি স্তম্ভ রয়েছে যেখানে ৫৬টি বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ শেনা যায়। স্তম্ভগুলিতে আলতো করে চাপ দিলেই তা শোনা যায়। ব্রিটিশরা এই মন্দির নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহী ছিল। কী করে আওয়াজ হয় তা জানতে দুটি স্তম্ভকে ভেঙে ফেলে। কিন্তু রহস্য সমাধানে তারা ব্যর্থ হয়।
বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেনে করে হাম্পি যাওয়া যায়। স্টেশন থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে এই রাজবাড়ি। ক্যাবও বুক করতে পারেন আপনি।
শেঠি হিল্লি, কর্ণাটক (Shettialli, Karnataka)
এই এলাকা ডোবা গির্জা নামেই পরিচিত। ১৮৬০ সালে ফরাসি মিশনারিরা এটি তৈরি করেছিল। বোজারি চার্চ নামে তখন স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ছিল। এই চার্চে একটি গির্জা, অনাথআশ্রম আর হাসপাতাল ছিল। কিন্তু এই চার্চ নির্মাণের প্রায় ১০০ বছর পর কেন্দ্রীয় সরকার গড়ুর বাঁধ তৈরি করেছিল। হেমাবতী জলাধার প্লাবিত করে এই চার্চকে। কিন্তু উজানের সময় এই চার্চ জেগে ওঠে। প্রতিবছর বর্ষাকালে এই চার্চ ডুবে যায়। আর জসস্তর কমে গেছে তা আবার জেগে ওঠে। বর্তমান এই চার্চের নাম ড্রোয়িং চার্চ।
বেঙ্গালুরু থেকে বিমান পরিষেবা রয়েছে। সড়কপথে ২ ঘণ্টা সময় লাগে পৌঁছাতে।
রূপকুণ্ড, উত্তরাখণ্ড (Ropkund Uttarakhand)
অদ্ভুত এই হ্রদ। প্রতিবছর এই হ্রদের বরফ গলে যায়। আর সেই সময়ই দেখা যায় শত শত মানুষের কঙ্কাল। ১৯৪২ সালে ফরেস্ট রেঞ্জার এই এলাকা আবিষ্কার করেন। কার্বন রেডিও টেস্ট ও ফরেস্নিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান এগুলি প্রায় ১.২০০ বছর পুরনো। কিন্তু সেই সময় এই কঙ্কাল এই দুর্গম এলাকা কী করে এল তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। লোককথা অনুযায়ী কনৌজের রাজা জাসধওয়াল তাঁর গর্ভাবতী স্ত্রী ও প্রচুর সেনা নিয়ে তীর্থে যাচ্ছিলেন। কিন্তু গন্তব্য নন্দাদেবীর মন্দিরে পৌঁছানোর আগেই শিলাবৃষ্টিতে তাদের মৃত্যু হয়। সেখআনেই তাদের মৃত্যু হয়ে। তবে ঐতিহাসিকরা এখনও এই গল্পে কোনও শিলমহর দেননি।
দিল্লি থেকে সড়কপথে লোহা জং পাস যাওয়া যায়। সেখান থেকে ৩৪ রাস্তা কিলোমিটার ট্রেক করে যেতে হবে রূপকুণ্ডে।
লোনার ক্র্যাটার লেক, মহারাষ্ট্র (Loner Crater Lake, Maharashtra)
ঔরঙ্গাবাদ থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে এই লোনার গ্রাম। এই গ্রামেই রয়েছে হ্রদ। এটি বিশ্বের ব্যাসাল্টিক শিলার একমাত্র হাইপার হ্রদ। এখানের জল লবণাক্ত। এই হ্রদের অনেক জায়গায় কম্পাস কাজ করে না। হ্রদের জলের তলায় কী রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। জলের রাসায়নিক গঠন নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। হ্রদে বেশ কিছু অনুজীব রয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝেই এই হ্রদের জল রক্তের মত লাল হয়ে যায়। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস বহু বছর আগে উল্কাপাত থেকে তৈরি হয়েছিল এই হ্রদটি।
মুম্বই থেকে ঔরঙ্গাবাদ হয়ে লোনার যাওয়া যায়।
কোংকা লা পাস, লাদাখ (Kongka La Pass, Ladakh)
কোংক লা পাস হল একটি লো-রিজ পাস। এটি ভারত ও চিনের মধ্যে একটি বিতর্কিত সীমান্ত এলাকার প্রায় ১৬ হাজার ৯৭০ ফুট উচ্চতায় রয়েছে। যদিও ভারতীয় বা চিনা সশস্ত্র বাহিনীর কেউই এই এলাকায় টহল দেয় না। কিন্তু স্থানীয়দের বিশ্বাস এই এলকায় যাতায়াত রয়েছে ভিনগ্রহীদের। এই এলাকায় বেশ কিছু অদ্ভূত ঘটনা ঘটে বলেও দাবি স্থানীয়দের।
এটি বিতক্তিত এলাকা। তাই এখানে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে লাদাখ গেলেই এই এলাকা সম্পর্কে নানা গল্প শোনা যায়।
কোডিনহি, কেরল (Kodinhi, Kerala)
কালিকট থেকে মাত্র ৩৪৫ কিলোমিটার দূরে কেরলের মালাপ্পুরাম জেলায় রয়েছে এই ছোট্ট গ্রামটি। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী এই গ্রামের অধিকাংশ মাই যমজ সন্তান প্রসব করে। গ্রামের নামও যমজ গ্রাম। গ্রামে ২০০ জোড়া যমজ সন্তান রয়েছে। এই গ্রামের বাইরে যেসব মহিলার বিয়ে হয়েছে তাদের অধিকাংশই যমজ সন্তান প্রসব করেছে। কিন্তু কেন তার কোনও সঠিক ব্যাখ্যা এখনও পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। একাধির বিশেষজ্ঞ গ্রাম পরিদর্শন করেছে।
কালিকট থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এই গ্রাম। এখানে যাওয়ার জন্য ক্যাব ভাড়া পাওয়া যায়।
জাটিঙ্গা, অসম (Jatinga, Assam)
অসমের আরো পাঁচটি গ্রামের মতই এটি একটি সাধারণ গ্রাম।পাহাড়ি গ্রাম। শান্ত পরিবেশ। মন কেড়ে নেয় পর্যটকদের। কিন্তু এই গ্রামের বর্ষার শেষের দিকের রাতগুলি ভয়ঙ্কর। সূর্যাস্তের পরে এখানে শতশত পরিযায়ী পাখি একসঙ্গে আত্মহত্যা করে। বেশ কয়েক দিন ধরে চলতে থাকে পাখিদের আত্মহত্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় খারাপ আত্মরা এই ঘটনার জন্য দায়ি। যদিও বিজ্ঞানীরা বলেন বর্ষা, খারাপ আবহাওয়া, অতি উচ্চতায় পাখিরা বিভ্রান্ত হয়ে গিয়ে আত্মহত্যা করে। কিন্তু তারপরেও থেকে গেছে প্রশ্ন। কেন পাখিরা রাতে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়ার চেষ্টা করে- সাধারণত পাখিরা সূর্যাস্তের পরে বাসায় ফিরে যেতেই অভ্যস্ত।
শিলচর থেকে সড়কপথে এই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
ভানগড় দুর্গ, রাজস্থান (Bhanghar Fort, Rajashthan)
১৭শ শতকে নির্মিত এই ভানগড় দুর্গ রাজস্থানের অন্যান্য দুর্গগুলি থেকে আলাদা। এটি জয়পুরের পিঙ্ক সিটির আদতে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এই দুর্গ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ভুতুড়ে দুর্গ হিসেবে পরিচিত হয়ে যায়। সূর্যাস্ত থেকে সূর্যদয়ের মধ্যে এই দুর্গে প্রবেশ নিষধ। সাইন বোর্ড রয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নামে। স্থানীয়দের কথা এই দুর্গেই বাস করে এক জাদুকরের অতৃপ্ত আত্মা। জাদুকর ভানগরের রাজকুমারির প্রেমে পড়েছিলেন। এখনও এই দুর্গে ঢুকলে অস্বস্তি বোধ করেন পর্যটকরা। রাতে যাঁরা গেছেন তাঁদের অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
বিমান, সড়ক ও রেলপথে যাওয়া যাতে পারে। জয়পুর থেকে দূরত্ব ৫৬ কিলোমিটার।
কুলধারা, রাজস্থান (Kuldhara, Rajasthan
আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে রাজস্থানের কুলধারা গ্রাম প্রায় দেড়হাজারের বেশি পিলিওয়াল ব্রাহ্মণের বাসভূমি ছিল। পাঁচ শতকেও বেশি সময় ধরে সেই গ্রামেই তারা বাস করেছিলেন। কিন্তু একদিন রাতরাতি সেই সেই গ্রাম ছেড়ে চলে যায় সবাই। কিন্তু কেন? সেই রহস্যের সমধান হয়নি এখনও। অনেকেই বলেন গ্রামের ওপর অভিশাপ লেগেছে, তাই সকলে চলে গেছে। এখনও সেখানে তৈরি হয়নি কোনও বসতি। জরাজীর্ণ বাড়িগুলি দাঁড়িয়ে আছে অতীতের স্মৃতি নিয়ে।
দিল্লি থেকে জয়সলমির হয়ে এই কুলধারা গ্রামে যাওয়া যায়। জয়সলমির থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে এই গ্রাম।
জ্ঞানগঞ্জ, হিমালয় (Gyanganj, Himalaya)
এই শহরের অবস্থান স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের কথায় এই শহর রয়েছে। বরফ ঢাকা হিমলায়ের এই এলাকায় থাকে একশৃঙ্গ। স্থানীয়দের কাছে জ্ঞানগঞ্জের পরিচয় শাম্বালা, সিদ্ধাশ্রম বা সাংগ্রী-লা নামে। স্থানীয়দের বিশ্বাস এই জায়গাটি সাধারণ মানুষের দৃষ্টগোচর হয় না। আধুনিক ম্যাপিং প্রযুক্তিও এখানে কাজ করে না। কিমবদন্তী অনুসারে এখানকার বাসিন্দারা সকলেই অমর। এখানকারা বাসিন্দারা বিশ্বের প্রভাব থেকে নিজেদের মুক্ত করে রাখতে পেরেছে।
তবে এই এলাকার সন্ধান এখনও পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। জ্ঞানগঞ্জ নিয়ে বেশকিছু বই রয়েছে। যেগুলি এর অস্তিত্ত্ব সম্পর্কে জানান দেয়।