- Home
- World News
- International News
- এখনও বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে আমেরিকা, এবার সেনা নামানোর হুমকি নিরুপায় ট্রাম্পের
এখনও বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে আমেরিকা, এবার সেনা নামানোর হুমকি নিরুপায় ট্রাম্পের
- FB
- TW
- Linkdin
গত সপ্তাহের মিনেসোটায় কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে গলায় হাঁটু চাপা দিয়ে দম বন্ধ করে হত্যা করে শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ অফিসার। ময়নাতদন্ত রিপোর্টও তাই বলছে। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগের একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে মিনিয়াপোলিস, লস অ্যাঞ্জেলস, শিকাগো, আটলান্টা-সহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে।
পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গ্রেনেড ছুড়ছে বিক্ষোভকারীদের দিকে। পরিস্থিতি সামলাতে আমেরিকার বিভিন্ন শহরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলসসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন শহর। কয়েক দশকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেনি বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশটি।
উত্তাল আন্দোলনে চাপা পড়ে গেছে করোনার ভীতি। জনতার বাঁধভাঙা জোয়ারে বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকা। কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের করুণ মৃত্যুতে ফুঁসে উঠেছে দেশটি।
লকডাউনের মধ্যেও টানা তিনদিন ধরে নিউইয়র্কে মানুষ নেমে এসেছেন রাজপথে। কেউ মাস্ক পরে এসেছেন, কেউবা হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে। পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান আর গানে উত্তাল বড় বড় নগরী। থেমে থেমে পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন বিক্ষুব্ধ মানুষ।
আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের জর্জ ফ্লয়েড নামের ৪৬ বছর বয়সী আফ্রিকান-আমেরিকান ব্যক্তিকে গত সপ্তাহের সোমবার গ্রেফতার করতে গিয়ে হত্যা করেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন। ফ্লয়েড একসময় বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন। তাকে হত্যার ঘটনায় চাওভিন ফেঁসে যান এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে।
সেখানে দেখা যায়, গলায় হাঁটু চেপে ধরায় ফ্লয়েড নিশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার চাওভিনকে বলছেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না’। ভিডিওটি ভাইরাল হলে চাওভিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। মিনেসোটা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো আমেরিকায়।
আমেরিকার বেশ কিছু শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে বিক্ষোভ ও সহিংসতা দমনে। হিংসার কারণে বেশ কিছু পুলিশ আধিকারিক আহত হয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যে ৪,০০০ প্রতিবাদী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট থেকে কাঁদানে গ্যাস- কিছুই বাকি রাখেনি পুলিশ। তার পরেও অব্যাহত বিক্ষোভ।
বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী বিক্ষোভ থেকে বাঁচাতে শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কিছুক্ষণের জন্য হোয়াইট হাউসের আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কারে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সিক্রেট সার্ভিস। রবিবারও হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধস্তি হয়।
প্রতিবাদে উত্তাল আমেরিকার ৭৫টিরও বেশি শহর। ১৯৬৮-তে মার্টিন লুথার কিংয়ের হত্যা পরবর্তী অশান্তির পর আর এমন বিক্ষোভ দেখেনি আমেরিকা। পরিস্থিতি সামলাতে জরুরি পরিস্থিতির জন্য সংরক্ষিত মিলিটারি 'ন্যাশনাল গার্ড'কে নামিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রথম বিক্ষোভ নিয়ে নীরব থাকার কারণে সমালোচিত হওয়ার পর মুখ খুললেন ট্রাম্প। জানালেন, বিক্ষোভকারীদের দমাতে প্রয়োজনে দেশ জুড়ে সেনা শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ভয়াবহ বিক্ষোভ কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও শহরের মেয়রদের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, হুমকি দিয়ে ট্রাম্প জানিয়েছেন, যদি গভর্নর ও মেয়ররা বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থ হন, তাহলে তিনি বিক্ষোভ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় সেনাবাহিনী নামাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ‘পেশাদার নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, দাঙ্গাবাজ, লুটেরা, অপরাধী ও বামপন্থীদের’ কর্মকাণ্ড চলছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘এসব কোনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ নয়। এসব হলো দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানোর মতো কাজ।’