- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- কলকাতা-সহ রাজ্যজুড়ে ঘন-কালো মেঘের আনাগোনা, ক্রমশই দূরত্ব কমাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আমফান
কলকাতা-সহ রাজ্যজুড়ে ঘন-কালো মেঘের আনাগোনা, ক্রমশই দূরত্ব কমাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আমফান
ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে রাজ্যজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ক্রমশই ঘন কালো আকার নিচ্ছে নীলাকাশ। জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া। যা মাঝে মাঝে ৮০ কিলোমিটার পার করে যাচ্ছে। প্রকৃতির এই আচরণ বুঝিয়ে দিচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আমফান আর বেশিদূরে নেই। পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ বিকেল বা সন্ধের মধ্যেই আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় আমফান।
- FB
- TW
- Linkdin
বুধবার সকালে আবহাওয়ার যে পূর্বভাস পাওয়া গিয়েছে তাতে আমফানের স্পর্শ পেতে শুরু করেছে পারাদ্বীপ। সেখানে এখন এই মুহূর্তে ঝোড়া হাওয়ার গতিবেগ ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। ইতিমধ্যেই এখানে ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকার অন্তত ৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। এরা বিপজ্জনক জায়গায় বাস করছিলেন।
পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের এক্কেবারে কেন্দ্রীয়স্থলে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। গত ছয় ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে অগ্রসর হয়েছে।
পারাদ্বীপ থেকে এই মুহূর্তে আমফানের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটারের নিচে চলে এসেছে। দিঘা থেকে দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটারের নিচে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে দূরত্ব ৫০০ কিলোমিটারের নিচে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে এই মুহূর্তে অনেকটাই শক্তিক্ষয় হয়ে গিয়েছে আমফানের। আশঙ্কা করা হচ্ছিল ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ড ফলের সময় এর নিজস্ব অক্ষের গতি ১৬৫ থেকে ১৯৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে। কিন্তু, দিঘায় আছড়ে পড়ার আগেই আমফানের নিজস্ব অক্ষের গতি ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় নেমে এসেছে।
মনে করা হচ্ছে ল্যান্ড ফলের সময় আমফানের নিজস্ব অক্ষের গতি ১৮৫ কিলোমিটারের নিচে নেমে যেতে পারে। তবে, অধিকাংশ স্থানে হাওয়ার গতিবেগ ১৯৫ কিলোমিটার ছুঁয়ে ফেলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে, দুই ২৪ পরগণা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ থেকে ১৯৫ কিলোমিটার থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ কলকাতা, হাওড়া, হুগলি-তে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ সর্বোচ্চ ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
উপরে উল্লিখিত জেলাগুলি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বুধবার বিকেল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার থাকবে বলেই পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বিশেষ করে মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের ভিতরে এই মুহূর্তে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ১৯০ থেকে ২২০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড় আমফান যত স্থলভাগের ভিতরে প্রবেশ করবে ততই এই ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ কমতে থাকবে। তবে ২১ মে -এর আগে কোনওভাবেই পশ্চিম-কেন্দ্রভূত বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ নামার কোনও সম্ভাবনা নেই। আস্তে আস্তে হাওয়ার গতি ১৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় নেমে আসবে।
এই মুহূর্তে প্রবলভাবে উত্তাল হয়ে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। ঢেউ-এর উচ্চতা ৫ ফিট ছাড়িয়ে গিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই ২৪ পরগণা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল এলাকায় ৩ থেকে ৪ ফিট উচ্চতার সামুদ্রিক ঢেউ আছড়ে পড়বে। এতে বহু এলাকায় সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়তে পারে।
হুগলি বন্দর এবং এর আওতাধীন সমস্ত বন্দরকে কেপট হোয়েস্টেড মোডে রাখা হয়েছে। কোনও ধরনের মুভমেন্ট এই বন্দরগুলি থেকে স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, ২০ মে-এর থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর হতে চলেছে ২১ মে। কারণ, ঘূর্ণিঝড় আমফানের ল্যান্ডফলের পর পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিপুল প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হবে। যার মধ্যে রয়েছে অতি ভারী থেকে অতি বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্র-বিদ্যু-এর দাপট। এই জন্য ২১ মে রাজ্যজুড়ে লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় না মেটা পর্যন্ত কলকাতা এবং ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকায় দোকান-পাঠ বন্ধ রাখার পরামর্শও দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।