সংক্ষিপ্ত
আমাদের জীবনে প্রতি দিনেরই কোনো না কোনো বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ঠিক যেমন ২৮ শে ফেব্রুয়ারি দিনটির রয়েছে একটি বিশেষ মাহাত্ম্য। দিনটির পিছনে একটি গৌরবময় ইতিহাস। ২৮ শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে পালন করা হয় 'জাতীয় বিজ্ঞান দিবস' হিসাবে। এবার জেনে নেওয়া যাক কেন দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল 'জাতীয় বিজ্ঞান দিবস' হিসাবে।
ভারতের ইতিহাসে (Indian History) একটি গৌরবময় দিন হল ২৮ শে ফেব্রুয়ারি। নোবেল জয়ী ভারতীয় পদার্থ বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন (Chandrasekhar Venkat Raman) এই দিনে তাঁর জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ 'রামন এফেক্ট' (Raman Effect) আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ১৯২৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সি ভি রামন (C V Raman) এই পরিঘটনা আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর ১৯৮৬ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা যোগাযোগ আয়োগ (NCSTC) ভারত সরকারর কাছে ২৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন করে। পরবর্তীতে সরকার এই আবেদনের অনুমোদন ও দেয় এবং সেই মত বিগত ৩৫ বছর ধরে এই দিনটিতে পালিত হয়ে আসছে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস (National Science Day)।
গোটা দেশজুড়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, অন্য অন্য শৈক্ষিক, বৈজ্ঞানিক, কারিগরী, চিকিৎসা, গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহে এই দিবস পালন করা হয় জাতীয় বিজ্ঞান দিবস (National Science Day)। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আলোচ্য বিষয় ছিল ভারতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভবিষ্যত: শিক্ষায় দক্ষতা ও কাজের উপর প্রভাব। এবার যে আবিষ্কারের কারণে এই বিশেষ দিবস পালন 'রামন এফেক্ট' সেই বিষয়ে বিশদে জেনে নেওয়া যাক। ১৯২৮ সালে প্রখ্যাত ভারতীয় বিজ্ঞানী স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন (Chandrasekhar Venkat Raman) একবর্ণী দৃশ্যমান আলোকরশশ্মিকে বিভিন্ন তরলের মধ্য দিয়ে পাঠিয়ে লক্ষ্য করেন যে, আপতিত রশ্মির অভিলম্বে বিক্ষিপ্ত বিকিরণের মধ্যে মূল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকিরণ ছাড়াও আরো অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্রতর এবং দীর্ঘতর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিকিরণ পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে ‘রামন ক্রিয়া’ বলে। এই ক্রিয়া তরল ছাড়াও কঠিন ও গ্যাসীয় মাধ্যমে পরিলক্ষিত হয়।
আরও পড়ুন- বরফ ঢাকা লাদাখে পাহাড়ে চড়ল ১৩টা টিম, চলল প্রতিযোগিতা, দেখুন মন ভাল করা ছবি
আরও পড়ুন- দেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ ভাষার সমাহারে গড়ে উঠবে এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত- প্রধানমন্ত্রী মোদী
আরও পড়ুন- এলআইসি-তে ২০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্র, কতটা লাভবান হবে আম-আদমি
রমন প্রভাব বা রমন বিক্ষেপণ হচ্ছে ফোটন কণা সমূহের অস্থিতিস্থাপক বিকিরণ। ১৯২৮ সালে চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন ও তার ছাত্ৰ কে এস কৃষ্ণণ তরল পদার্থে 'রমণ প্ৰভাব' আবিষ্কার করেন। আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ঘটে যখন একটি হালকা মরীচি অণু দ্বারা বিভক্ত হয় তখন। যখন আলোকের মরীচি কোনও রাসায়নিক যৌগের ধুলোবালি মুক্ত, স্বচ্ছ নমুনাকে সরিয়ে দেয়, তখন আলোর একটি সামান্য ভগ্নাংশ ঘটনার মরীচি বাদে অন্য দিকগুলিতে দেখা যায়। এই বিক্ষিপ্ত আলো বেশিরভাগ অপরিবর্তিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের। এটি গোটা ঘটনাটি রমন প্রভাবের ফলাফলেই ঘটে আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী সি ভি রমন (C V Raman)।
বলা বাহুল্য, এই আবিষ্কারের জন্য ১৯৩০ সালে রামন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন পদার্থ বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন (Chandrasekhar Venkat Raman)। বিজ্ঞানের অগ্রগতির কথা মাথায় রেখে এদিন সকালে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষ্যে একটি টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। টুইটে তিনি লেখেন, 'সকল বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান অনুরাগীদের জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের শুভেচ্ছা। আসুন আমাদের সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক দায়িত্ব পালন এবং মানুষের অগ্রগতির জন্য বিজ্ঞানের শক্তিকে কাজে লাগানোর প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনরায় সুনিশ্চিত করি।'