সংক্ষিপ্ত
ডায়াবেটিসকে বলা হয় সাইলেন্ট কিলার (Silent Killer)। যা এক এক করে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস শরীরে বাসা বাঁধলে একে একে চোখ (Eye), ফুসফুস (Lungs), হার্ট (Heart), কিডনি (Kidney) আক্রান্ত হয়। ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় ডায়াবেটিস।
১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস (World Diabetes Day)। প্রত্যেক বছরই এই বিশেষ দিনে ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়। আজও পৃথিবীর বিভিন্ন কোণায় আয়োজিত হয়েছে সচেতনতা শিবির (Camp)। সারা বিশ্বে একাধিক রোগী প্রতিদিনই ডায়াবেটিসে প্রাণ হারাচ্ছে। এই রোগ সাইলেন্ট কিলার (Silent Killer)। যা এক এক করে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস শরীরে বাসা বাঁধলে একে একে চোখ (Eye), ফুসফুস (Lungs), হার্ট (Heart), কিডনি (Kidney) আক্রান্ত হয়। ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় ডায়াবেটিস।
WHO (World Health Organization) -এর প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, যেভাবে রোগ বাড়ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৩৪০ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিস (Diabetes) রোগে আক্রান্ত হতে পারে। জানা গিয়েছে, ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়। ডায়াবেটি টাইপ ১ (Type 1) ও ডায়াবেটি টাইপ ২ (Type 2)। ডায়াবেটি টাইপ ১ ভয়ঙ্কর তবে ডায়াবেটি টাইপ ২ আরও ভয়ঙ্কর। আজকাল আবার গর্ভবতী মহিলারা গ্যাস্ট্রেশনাল ডায়াবেটিসে (Gestational Diabetes) আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস সংক্রমণের আগে নানা ভাবে জানান দেয়। তখনই সতর্ক হতে হবে। ডায়াবেটিস উপেক্ষা করলে তা যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
কী কী উপসর্গ-
ঘন ঘন প্রস্রাব(Urine) পাওয়া ডায়াবেটিসের প্রথম লক্ষণ, এই রোগে আক্রান্ত হলে এই লক্ষণ দেখা দেবেই। আবার হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া। কিংবা সারাক্ষণ ক্লান্তি (Tired) ভাব লাগলে ডাক্তার দেখান। এক্ষেত্রে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন।
আরও পড়ুন: Diabetes Tips: মোবাইল না ঘাঁটলে ঘুম আসে না, এই অভ্যেস থেকে বাড়ছে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
চামড়ায় শুষ্ক (Dryness) ও খসখসে ভাব অনুভব করা মোটেও উপেক্ষা করবেন না। কিংবা কোথাও কেটে গেলে তা সহজে না শুকানো ডাক্তারি পরামর্শ নিন। ডায়াবেটিস হলে ত্বকে এমন পরিবর্তন দেখা যায়।
এছাড়াও কিছু শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন, চোখে কম দেখা কিংবা ঝাপসা দেখলে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। ডায়াবেটিস রোগ চোখে খারাপ প্রভাব ফেলে। এই রোগ থেকে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (Diabetic Retinopathy) দেখা দেয়। যা অন্ধত্বের কারণ। এছাড়া, সারাক্ষণ বিরক্তি বোধ কিংবা খিটখিটে স্বভাব লক্ষ্য করলে সতর্ক হন।
চিকিৎসা-
ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দিলে সবার আগে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। মূত্র পরীক্ষা (Urine Test), গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট (Glucose Tolerance Test), ফাস্টিং (Fasting), ব্লাড সুগার (Blood Sugar), গ্লাইকোহিমোগ্লোবিন টেস্টের (Glycohemoglobin Test) মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে যেমন সময় মেনে ওষুধ খেতে হবে, তেমনই ওজন রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। পরিবর্তন করতে হবে খাদ্যাভ্যাস। আর সুস্থ থাকতে নিয়মিত শরীরচর্চা করা জরুরি।
কী করবেন-
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ধূমপান (Smoking) ও মদ্যপান (Alcohol) করা বেশ ক্ষতিকারক। তাই সবার আগে এই দুই অভ্যেস ত্যাগ করুন।
- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনুন। বাড়তি মেদ (Over Weight) করান। এই রোগ দেখা দিলে রোজ নির্দিষ্ট সময় এক্সারসাইজ করুন। চিকিৎসকদের মতে এই ধরনের রোগীদের সকালে আধ ঘন্টা ও বিকলে আধ ঘন্টা হাঁটা দরকার।
- পরিবর্তন আনুন লাইফস্টাইলে। লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট করতে হবে। খাদ্যতালিকা (Diet) থেকে বাদ দিন ভাজাভুজি ও ফাস্ট ফুড। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আলাদা ডায়েট হয়। সেই ডায়েট মেনে চলুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে শুধু ওষুধ খেলেই হবে না। জীবনযাত্রায় এই সকল পরিবর্তন একান্ত প্রয়োজন।