সংক্ষিপ্ত
শত বিরোধের মধ্যেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি বিলকিস ধর্ষনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্তদের। ইতিমধ্যেই তারা ফিরে গিয়েছে গুজরাটের রানধিকপুর গ্রামে।
"আমরা নির্দোষ", সদর্পে বলে উঠল বিলকিস বানো মামলায় এক সাজাপ্রাপ্ত। সম্প্রতি বিলকিস বানো মামলায় ১১ জন সাজা প্রাপ্তকে মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশজুড়ে। আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছিল বিলকিসের জীবনেও। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন ঘটনায় তিনি আঙ্কিত। তাঁর স্বামী বলেছিলেন,"এমনটা ঘটবে বিশ্বাস করতে পারিনি পরে বুঝলাম এটাই সত্যি।" অথচ শত সমালোচনা, শত বিরোধের মধ্যেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি বিলকিস ধর্ষনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্তদের। ইতিমধ্যেই তারা ফিরে গিয়েছে গুজরাটের রানধিকপুর গ্রামে। বিলকিসের পুরোন বাড়ির সামনেই দোকান খুলে বসেছেন এদের মধ্যে একজন। এবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমধ্যমের সাক্ষাৎকারে জোর গলায় নিজেদের নির্দোষ বলে উঠল বিলকিস বানোকে ধর্ষণের জন্য ১৪ বছর সংশোধনাগারে থাকা এক সাজাপ্রাপ্ত। ঘটনায় ফের একবার নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমধ্যমের সাক্ষাৎকার ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সাক্ষাৎকারটি ছিল বিলকিস বানোকে ধর্ষণের জন্য ১৪ বছর সংশোধনাগারে থাকা গোভিন্দ নাই-এর। সংবাদ মাধ্যমের সামনে সে বলে,"আমরা নির্দোষ। কখনও দেখেছেন কাকা এবং ভাইপো একে অপরের সামনে ধর্ষণ করছে? হিন্দুদের মধ্যে কি এই ধরনের ঘটনা ঘটে? না ঘটে না।" এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় শোরগোল। ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুটে মোদী সরকারকে বিঁধে লেখেন, "এই কথা বলছে বিলকিস বানোর ধর্ষক এবং নির্দোষদের খুনি। মোদী-শাহ সরকারের জন্য সে ছাড়া পেয়ে গেল।"
প্রসঙ্গত, দেশের ৭৬ তম সব স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস বানো-কাণ্ডে দোষীসাব্যস্ত ১১ জন আসামীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। সিবিআই-এর মতে 'বিরল থেকে বিরলতম' আখ্যাপ্রাপ্ত অপরাধের জন্য যেখানে দোষীদের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছিল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত সেখানে কোন যুক্তিতে ১১ জনকেই মুক্তির সিদ্ধান্ত নিল গুজরাত সরকার তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়ে সিবিআই-এর সঙ্গে কেন কোনও আলোচনা করা হল না সে বিষয়ও প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদ।
এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিলকিস বলেছেন," আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম, এখনও বোবা হয় আছি। বিগত ২০ বছরের আতঙ্ক যেন ফের গ্রাস করল আমায়। আমার জীবন আমার পরিবারকে শেষ করে দেওয়া ১১টা লোক মুক্তি পেয়ে গেল।"
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গোধরা-কাণ্ড পরবর্তী সময় গুজরাতের সাম্প্রদায়ীক হিংসার শিকার হন দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামের বিলকিস বানো। ৩ মে ভয়াবহ হামলা চালানো হয় গ্রামে, পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। চোখের সামনে পাথরে আছাড় মেরে খুন করা হয় তাঁর তিন বছরের মেয়েকে। হত্যা করা হয় তাঁর পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যকে। এই ভয়াবহ অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দেয় সিবিআই-এর বিশেষ আদালত। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত।
গণধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ, নিজের পাতা ফাঁদেই জড়িয়ে গেলেন গাজিয়াবাদের মহিলা
'অনুব্রত থাকলে আনন্দ পেতাম', সিউড়িতে গিয়ে জেলবন্দি তৃণমূল নেতাকে নিয়ে আক্ষেপ মন্ত্রী ফিরহাদের
মহিলাকে কানের গোড়ার সজোরে চড়, কর্নাটকের মন্ত্রীর নিন্দায় সরব নেটদুনিয়া- দেখুন ভিডিওটি