সংক্ষিপ্ত

ভারতে পশু নির্যাতনের ঘটনা থামছেই না

কেরলের গর্ভবতী হাতি হত্যার পর অবস্থার পরিবর্তনের আশা করা হয়েছিল

কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা ঘটেনি

এবার ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হল এক বানরকে

 

ভারতে অবলা পশুর উপর বর্বরোচিত অত্যাচারের ঘটনা থামছেই না। কেরলের গর্ভবতী হাতি হত্যার পর সারা ভারত জুড়ে যেভাবে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল, তাতে পশু অধিকার রক্ষা কর্মীরা আশা করেছিলেন, অবস্থার হয়তো কিছুটা পরিবর্তন হবে। কিন্তু, সেই হাতি হত্যার ঘটনা মানুষের স্মৃতিতে এখন ফিকে হয়ে গিয়েছে। আর সমানতালে পশু নির্যাতন চলছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। সোমবার তেলেঙ্গানা বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাম্মাম জেলায় স্রেফ অন্য বানরদের ভয় দেখানোর জন্য একটি বানরকে তিন ব্যক্তি একটি গাছের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে।

সাথুপল্লী অরণ্য়ের রেঞ্জার এ ভেঙ্কটেশ্বরলু জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে গত ২৬ জুন। খাম্মাম জেলার ভেমসুর গ্রামে বানরটিকে ফাঁসি দেওয়ার ঘটনা আবার ঘটা করে ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছিল। সেই নক্কারজনক পশু নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং বিষয়টি বন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিলেন।

জানা যায়, গত বেশ কয়েকদিন ধরে সাথুপল্লী এবং আশেপাশের অঞ্চলে বাগানে বাগানে বানরদের দাপাদাপিতে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। এরপরই ভেমসুর গ্রামের ওই তিন ব্যক্তি ফাঁদ পেতে একটি বানরকে বন্দি করে। অভিযুক্তদের দাবি, অন্যান্য বানররা ওই দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে আর উৎপাত করবে না ভেবেই ওই অবলা জীবটিকে তারা একটি গাছের ডালে ফাঁস তৈরি করে তার সঙ্গে ঝুলিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরেছে।   

ভেঙ্কটেশ্বরলু জানিয়েছেন, অপরাধীরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। বন দপ্তর থেকে তাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনে মামলা করা হচ্ছে। তারা ওই গ্রামে গিয়ে নিহত বানরটির পচা-গলা লাশ উদ্ধার করেছেন। সেই দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।

তবে, লোকালয়ে বানরদের হানা দেওয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন বনকর্তারা। তাদের দাবি মাত্রাতিরিক্ত  ভাবে বনাঞ্চল ধংস করে জনবসতি গড়ে উঠছে। এর জন্যই বনাঞ্চলে খাদ্যাভাবে পড়ছে বানররা। তাই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে খাদ্যের সন্ধানে। এই সমস্যার সমাধানে অরণ্যায়নের সময় সাথুপল্লী বনভূমি এলাকায় তেলেঙ্গানা সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ শতাংশ অঞ্চলে ভোজ্য বুনো ফলের গাছ লাগানো হবে। এতে করে বানর এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর খাদ্যের ভিত্তি বাড়বে বলে দাবি তাঁদের। সেই ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত খাবার পেলে তারা আর লোকালয়ে আসবে না।