সংক্ষিপ্ত
- ফের বাঙালির বিশ্বজয়, অতিমারির পরিস্থিতিতে এল দুরন্ত খবর
- পর্বতারোহণে বাঙালি তার কর্তৃত্ব আগেই প্রমাণ করেছে
- বাঙালিরা ভিতু এই কটাক্ষ পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে ফুৎকারে উড়ে যায়
- যার আরও এক জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ দিলেন পর্বতারোহণের বিশেষজ্ঞ অমিত চৌধুরী
বাঙালি ভিতু। এই কটাক্ষ বরাবরই বাঙালিদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এই কটাক্ষ যে শুধুই একটা বিদ্বেষ- তার প্রমাণ বহুবার হয়েছে। এবার আরও একবার বাঙালির চরিত্রের উপর থেকে মুছল ভিতুর তকমা। আর এবার সেই তকমা মুছল অমিত চৌধুরী নামে এক বঙ্গ তনয়ের হাত ধরে। যিনি বিশ্ব পর্বতারোহণ সংস্থা, যা ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইম্বিং অ্যান্ড মাউন্টেনিয়ারিং ফেডারেশন বা ইউআইএএ বলে পরিচিত, তার এক্সিকিউটিভ বোর্ডে স্থান পেলেন। এই প্রথম কোনও ভারতীয় ইউআইএএ-র এমন শীর্ষ বোর্ডে স্থান পেল। ভারতীয় হওয়া ছাড়াও অমিত চৌধুরী প্রথম বাঙালি যিনি ইউআইএএ-র এক্সিকিউটিভ বোর্ডে স্থান পেলেন।
কে এই অমিত চৌধুরী?
জন্ম ১৯৫৯ সালের ১৭ জানুয়ারি। ছোট থেকেই পর্বতারোহণের শখ ছিল। কিন্তু, পর্বতারোহণের রোমাঞ্চটা প্রথম বাস্তবায়িত করার সুযোগ পেয়িছেলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে। ১৯৭৬ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্বতারোহণের রোমাঞ্চকে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন অমিত। ভর্তি হয়ে যান সরশুনা হিলসে পর্বতারোহণের প্রাথমিক শিক্ষা শিখে নিতে। এরপর দ্রুত তিনি পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পাহাড়ের পর্বতারোহণের প্যাঁচ-কায়দাগুলো শিখে নেওয়ার সুযোগ পান। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ট্রেকিং-এও অংশ নিতে শুরু করেন অমিত। দার্জিলিং-এর হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে পর্বতারোহণের উপরে প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
১৯৮০ সালে বড়-সড় সাফল্য
গারওয়ালের যোগিন মাউন্টেনে এক সফল পর্বতারোহণ করেন অমিত ও তাঁর দল। এই অভিযানে অমিত মাউন্ট যোগিন-এর দ্বিতীয় শৃঙ্গ জয় করেন। অমিত-এর আগে কেউ ওই শৃঙ্গে পা রাখেনি। যে কায়দায় অমিতরা যোগিন ১, ২ এবং ৩ শৃঙ্গ জয় করেছিলেন, তারপর থেকেই কেউ একসঙ্গে ওই তিন শৃঙ্গ জয় করতে পারেনি।
যোগিন শৃঙ্গ জয় মোড় ঘোরায় অমিতের কেরিয়ারের
এরপর থেকেই অমিতের পর্বতারোহণের কেরিয়ারের সিরিয়াসভাবে পথ চলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়র মাউন্টেনিয়ারিং ও হাইকিং ক্লাবের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন পর্বতারোহণ অভিযানে অংশ নেন অমিত চৌধুরী।
১৯৮২ সালে বায়ুসেনায় যোগদান অমিতের
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হওয়ার পর বায়ুসেনায় যোগ দেন অমিত। এর সঙ্গে সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়র মাউন্টেনিয়ারিং ও হাইকিং ক্লাবের পক্ষে থেকেও পর্বতারোহণ করতে থাকেন অমিত। এই সময় তিনি বলদেব কানওয়ার বলে এক নবীন পর্বতারোহীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। পরে সেই বলদেব এভারেস্টের শিখরে পৌঁছেছিলো। এর জন্য ন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ডেও সম্মানিত করা হয়েছিল বলদেবকে।