কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার ছত্তিশগড়ের জগদলপুরে বিখ্যাত বস্তার দশেরার অংশ 'মুরিয়া দরবার' উদযাপনে অংশ নেন। শাহের সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার ছত্তিশগড়ের জগদলপুরে বিখ্যাত বস্তার দশেরার অংশ 'মুরিয়া দরবার' উদযাপনে অংশ নেন। শাহের সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার রায়পুরে পৌঁছান জগদলপুরে ঐতিহাসিক বস্তার দশেরা উদযাপনে যোগ দেওয়ার জন্য। এই এলাকাটি একসময় নকশালদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে কুখ্যাত ছিল, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে চরমপন্থার ছায়া থেকে বেরিয়ে আসছে। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী সাই বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান।
শাহ জগদলপুরের লালবাগে বস্তার দশেরা উৎসবের জমকালো উদযাপনে অংশ নেন। এই শতাব্দী প্রাচীন উৎসবটি ছত্তিশগড়ের অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা প্রতি বছর হাজার হাজার অংশগ্রহণকারী এবং দর্শকদের আকর্ষণ করে।
শাহের এই সফরকে বস্তারের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সাংস্কৃতিক প্রসারের একটি প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বস্তার দশেরা ভারতের একটি অনন্য উৎসব, যেখানে দশেরা ৭৫ দিন ধরে পালিত হয় এবং রাবণের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয় না।
এই উৎসবের ইতিহাস ৬০০ বছরেরও বেশি পুরনো, যা এটিকে ভারতের অন্যতম প্রাচীন এবং অনন্য উৎসবে পরিণত করেছে। এটি কাকাতিয়া রাজবংশ শুরু করেছিল এবং তারপর থেকে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি এটিকে সংরক্ষণ ও উদযাপন করে আসছে।
উৎসবটি বস্তারের উপজাতিদের আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত, যারা দেবী দন্তেশ্বরীকে তাদের রক্ষক এবং পথপ্রদর্শক হিসাবে সম্মান করে।
বস্তার দশেরার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বস্তারের বিভিন্ন উপজাতিকে একত্রিত করার ক্ষমতার মধ্যে নিহিত। এটি ভক্তির এক বিশাল উদযাপনে তাদের ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি, সঙ্গীত এবং নৃত্য প্রদর্শন করে।
এই অনন্য দশেরা ছত্তিশগড়ের একটি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা বস্তারে পালিত হয় এবং 'বস্তার দশেরা' নামে পরিচিত। 'বস্তার দশেরা'-র খ্যাতি এখন এতটাই যে দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও এটি দেখতে আসেন।
শ্রাবণ (সাওয়ান) মাসের অমাবস্যার সবুজায়নের সঙ্গে বস্তার দশেরা শুরু হয়। এই দিনে রথ তৈরির জন্য জঙ্গল থেকে প্রথম কাঠ আনা হয়। এই অনুষ্ঠানটিকে পাট যাত্রা বলা হয়।
এই উৎসব দশেরা পর্যন্ত চলে এবং মুরিয়া দরবারের আচারের মাধ্যমে শেষ হয়। এই আচারে, বস্তারের মহারাজ দরবার জনগণের সমস্যা শোনেন। এই উৎসবটি দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে পালিত উৎসব।


