সংক্ষিপ্ত
মোদী সরকারকে (Modi Govt) আক্রমণ করতে গিয়ে বুধবার বিচার বিভাগ (Judiciary) এবং নির্বাচন কমিশনকেও (Election Commission) নিশানা করেন কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তারই কড়া জবাব দিলেন কিরেন রিজিজু (Kiren Rijiju), হিমন্তবিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma), এস জয়শঙ্কররা (S Jaishankar)।
বুধবার, লোকসভায় (Lok Sabha) বাজেট অধিবেশন ২০২২ (Budget Session 2022) চলাকালীন, মোদী সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিচার বিভাগ (Judiciary) এবং নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকেই আক্রমণ করে বসলেন রাহুল গান্ধী। তিনি দাবি করেন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং পেগাসাস (Pegasus) সফটওয়্যার - এই তিনটিকেই মোদী সরকারের (Modi Govt) জনগণের কণ্ঠরোধ করার কাজে লাগায়। রাহুলের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপি। দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আক্রমণ করার কারণে, তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে, এমন দাবি করেছেন বিজেপি (BJP) নেতারা।
রাহুল গান্ধীর ওই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু (Kiren Rijiju)। তিনি বলেছেন, তিনি শুধুমাত্র ভারতের আইনমন্ত্রী বলেই নয়, একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবেও, রাহুলের মন্তব্যের তিনি নিন্দা করছেন। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের বিচার বিভাগ কিংবা নির্বাচন কমিশন হল ভারতীয় গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ একেকটি প্রতিষ্ঠান। এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবমাননা করার জন্য অবিলম্বে রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। শুধু বিচার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনের কাছেই নয়, ভারতের জনগণের কাছেও রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে, মন্তব্য করেছেন কিরেন রিজিজু।
আরও পড়ুন - Budget Session 2022: সংসদেও প্রকাশ্যে কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব, সনিয়ার চালে মাত আনন্দ শর্মা
আরও পড়ুন - Rahul Gandhi at Lok Sabha: রাহুলের নিশানায় বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং পেগাসাস
বিজেপিকে রাজনৈতিক শালীনতা প্রসঙ্গেও আক্রমণ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। এই নিয়ে অসমের (Assam) মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma) বলেছেন, রাজনৈতিক শালীনতার কথা বলা রাহুল গান্ধীর মুখে মানায় না। তিনি তুলে এনেছেন রাহুল গান্ধীর কুকুরকে বিস্কুট খাইয়ে, ওই একই বিস্কুট অসমের নেতাদের অফার করার প্রসঙ্গ। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসহাইকমান্ড মনে করে, তারা যা বলবে, সেটাই ঠিক। ভারতের মানুষ ভালো করেই জানেন কোনটা ঠিক।
কুকুরকে বিস্কুট খাওয়ানোর ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালে। সেই সময় হিমন্তবিশ্ব কংগ্রেসেই ছিলেন। দল ছাড়ার পর তিনি দাবি করেছিলেন, ২০১৬ সালের অসম বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন তরুণ গগৈ, সি পি জোশী, প্রয়াত অঞ্জন দত্ত এবং তিনি নিজে। হিমন্তবিশ্বের দাবি, রাহুলের প্রথম থেকেই মিটিংয়ে আগ্রহী ছিলেন না, তিনি পোষ্য কুকুরের সঙ্গে খেলছিলেন। অসমের নেতাদের একসময় চা-বিস্কুট দেওয়া হয়েছিল। কুকুরটি টেবিলে উঠে সেই প্লেট থেকেই একটা বিস্কুট তুলে নিয়েছিল। সেই বিস্কুট বদলে দেওয়ার বদলে রাহুল গান্ধী হেসেছিলেন। মিনিট দশেক অপেক্ষা করে উপস্থিত নেতাকর্মীরা ওই একই প্লেট থেকে বিস্কুট নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
এদিন লোকসভায় তাঁর বক্তৃতায়, রাহুল গান্ধী প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে, বিদেশি অতিথির অনুপস্থিত নিয়েও খোঁচা দেন মোদী সরকারকে। গত তিনটি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে, বিদেশি অতিথিরা অনুপস্থিত ছিলেন। রাহুল বলেন, কেন প্রজাতন্ত্র দিবসে কোনও অতিথি আসছেন না, মোদী সরকারের নিজেদের সেই প্রশ্ন করা উচিত। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে ভারত বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চিনে সব প্রতিবেশি দেশই ভারতকে ঘিরে ধরেছে। বিরোধী শক্তিরাও ভারতের এই দুর্বল অবস্থান টের পাচ্ছে বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেতা।
রাহুলের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) টুইট করে বলেছেন, ভারতীয়রা সকলেই জানেন, দেশ এখন করোনা মহামারির বিভিন্ন তরঙ্গের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসে ৫ মধ্য এদেশের রাষ্ট্রপতিদের আসার কথা ছিল। করোনা মহামারির জন্যই তাঁরা আসতে পারেননি। প্রত্যেকেই অবশ্য, ২৭ জানুয়ারি একটি ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। কটাক্ষ করে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, 'রাহুল গান্ধী কি সেই তথ্যও জানেন না?'