সংক্ষিপ্ত

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা কংগ্রেস সাংসদ রশিদ আলভির ২০০৯ সালে করা একটি মন্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে টুইট করেছেন, যেখানে  আলভি বলেছিলেন যে, কার্গিল অপারেশন এমন কোনও কিছু ছিল না যেটা উদযাপন করার দরকার ছিল। 

আজ ২৬ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবসের ২৩ বছর পূর্তিতে ভারতীয় কংগ্রেসকে ফের একহাত নিল বিজেপি। ভারতীয় জনতা পার্টি আবারও কংগ্রেসকে মনে করিয়ে দিল যে, কার্গিলে অপারেশন বিজয়ের সময় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ কৃতিত্বকে হ্রাস করার চেষ্টা করা হয়েছিল কংগ্রেসের তরফ থেকে। 

২০০৪ সাল ঠেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইউপিএ সরকারের শাসনকালে ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়নি কার্গিল বিজয় দিবস। সেকথা মনে করিয়ে দিতেই আজ টুইটে কংগ্রেসকে বিঁধলেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা। 

শেহজাদ ২০০৯ সালে কংগ্রেস সাংসদ রশিদ আলভির করা একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করে লিখেছেন, যেখানে আলভি বলেছিলেন যে, কার্গিল অপারেশন এমন কোনও কিছু ছিল না যেটা উদযাপন করার দরকার ছিল। উল্লেখ্য যে, এই যুদ্ধটি ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যেই সংঘটিত হয়েছিল। গোটা দেশটি জানতেও পারেনি কখন পাকিস্তানি সেনারা আমাদের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে বাঙ্কার তৈরি করে ফেলেছিল। আলভি বলেছিলেন যে, শুধুমাত্র এনডিএ ‘অপারেশন বিজয়’ উদযাপন করতে পারে।  

উল্লেখ্য, কার্গিল যুদ্ধ ১৯৯৯ সালে শেষ হলেও, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজয় উদযাপন করেনি। যদিও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর শাসনকালের মেয়াদে কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপন করেছিলেন। ইন্ডিয়া গেটে ঐতিহ্যবাহী পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন বাজপেয়ী। 

কিন্তু ইউপিএ সরকার প্রথম থেকেই ক্ষমতায় থাকাকালীন কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপন উপেক্ষা করে এসেছে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর সংসদে প্রথমবার এই বিজয় দিবস উদযাপনের দাবি উত্থাপন করেছিলেন। 

তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির কাছে চিঠি দিয়ে চন্দ্রশেখর লিখেছেন, 'আমি ২৬ জুলাই কার্গিলে আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর পুরুষ ও মহিলাদের বিজয়ের ১০তম বার্ষিকীতে মাননীয় সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই দিনটি কেবলমাত্র আমাদের গর্বিত দেশের জয় এবং এর শত্রুদের ওপর বিজয় হওয়াকেই ঘোষণা করে না, বরং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর হাজার হাজার নারী ও পুরুষের কর্তব্য এবং ত্যাগকে স্মরণ করিয়ে দেশবাসীর মনে অনুপ্রেরণামূলক অনুভূতি জোগায়।'

তিনি আরও লিখেছিলেন, 'আমি বিশ্বাস করি সেই যুদ্ধে এবং অন্যান্য প্রতিটি সংঘাতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর নারী ও পুরুষের কর্মকাণ্ড শ্রদ্ধা ও অভিবাদনের দাবি রাখে। আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং সরকারের কাছে এই দিনটিকে স্মরণীয় করার জন্য এবং এটিকে বার্ষিকভাবে উদযাপন করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমি এই হাউসের সহকর্মীদের কাছেও একই আবেদন জানাচ্ছি, যাঁরা এটিকে বিজেপির যুদ্ধ বা ওই ধরনের বিরক্তিকর কিছু একটা বলে এই দাবির উপহাস ক’রে এর বিরোধিতা করেন।’ 

বলা বাহুল্য, চন্দ্রশেখরের সেইদিনকার সেই দাবি সংসদের সদস্যদের মধ্যে অনুরণিত হয়েছিল। সাংসদ চন্দ্রশেখরের ক্রমাগত প্রচেষ্টার কারণে কার্গিল বিজয় দিবসের উদযাপন ওই বছরই পুনঃস্থাপন করা হয়েছিল। ২৬ জুলাই দিনটিকে কার্গিলের শহিদদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়। অ্যান্টনি এরপর প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে কার্গিল বিজয় দিবসে নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া গেটে অমর জওয়ান জ্যোতি দেখতে যান। প্রতি বছর এই দিনে প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়া গেটের কাছে অবস্থিত অমর জওয়ান জ্যোতিতে সৈন্যদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। 

আরও পড়ুন-
কার্গিলে ভারতীয় সেনার অদম্য 'অপারেশন বিজয়', আত্মত্যাগের ২৩ বছর পার
কার্গিল যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই যুদ্ধনীতি পুরো খেলাটি পাল্টে দিয়েছিল, পাকিস্তানি সেনারা পালাতে বাধ্য হয়
Kargil Vijay Diwas Live: দেশজুড়ে কার্গিল বিজয় দিবস, শুভেচ্ছা জানালেন মোদী, রাজনাথ-রা