সংক্ষিপ্ত

আরশাদ রানার দাবি তাঁকে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রার্থীপদ দেওয়ার নাম করে। অক্লান্তভাবে তিনি কাজ করে গিয়েছেন, কিন্তু তার ফল পেলেন না তিনি।

হাউ হাউ করে কাঁদছেন তিনি। চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে মুখ। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কেঁদেই চলেছেন তিনি। তিনি আরশাদ রাণা। প্রশ্ন ওঠারই কথা, কে তিনি। তিনি বিএসপির কর্মী। এবার প্রশ্ন তিনি কাঁদছেন কেন। আসন্ন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার টিকিট জোটেনি তাঁর কপালে। সেই দুঃখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। 

শুক্রবার বিএসপি কর্মী (BSP Worker) আরশাদ রানা (Arshad Rana) দাবি করেছেন যে তাকে তার সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে বিধানসভা (Assembly Election 2022) টিকিটের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা (50 Lakh) ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে রানা বলছেন যে তিনি ২৪ বছর ধরে কাজ করছেন। বিএসপি নেতা শামসুদ্দিন রেইন তাকে ২০১৮ সালে ছত্তরওয়াল আসন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছিলেন। ২০২২ সালের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হওয়া সময়ের অপেক্ষা ছিল। কিন্তু শিঁকে ছিঁড়ল না। প্রার্থীপদ না পেয়ে কেউ প্রকাশ্যে এভাবে কান্নায় ভেঙে পড়তে পারে! ভিডিও না দেখলে বিশ্বাস করা যেত না। 

জানা গিয়েছে এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগর থানায়। প্রার্থীপদ না পেয়ে সেখানে নালিশ করতে এসেছিলেন রানা। তিনি মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির নেতা। রানার দাবি, ২ বছর আগে ছত্তরওয়াল আসনে তাঁকে প্রার্থী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল দলের তরফে। সেই মোতাবেক গত ২ বছর ধরে ছত্তরওয়ালে কাজও করেছেন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে হোর্ডিংও টাঙিয়েছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রানার। আর সেই জন্য থানায় এসে প্রতারণার অভিযোগ করে গিয়েছেন। আর এই সময়ই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

আরশাদ রানার দাবি তাঁকে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রার্থীপদ দেওয়ার নাম করে। অক্লান্তভাবে তিনি কাজ করে গিয়েছেন, কিন্তু তার ফল পেলেন না তিনি। এদিন থানা থেকে বেরোনোর সময় যেতে যেতে এমন হুমকিও দিয়েছেন যে যদি বিচার না পান তাহলে প্রকাশ্য রাস্তায় তিনি আত্মহুতি দেবেন। এক সিনিয়র পার্টি লিডারের বিরুদ্ধে ৬৭ লক্ষ টাকার ঘুষ নেওয়ার প্রস্তাবেরও অভিযোগ এনেছেন রানা। 

প্রার্থীপদ না পেলে কী হয় তা কয়েক মাস আগেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল। পার্টি অফিস ভাঙচুর থেকে শুরু করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া, অন্য দলে চলে যাওয়া, দলের সাংসদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা। সে সময় সবই সকলের চোখের সামনে এসেছে। উত্তরপ্রদেশে ভোটেও প্রার্থী পদ না পাওয়ায় আরশাদ রানার এই নয়ন জলে ভেসে যাওয়া বুঝিয়ে দেয় ভারতবর্ষে ভোট মানে সত্যি সত্যি ডান্স অফ ডেমোক্র্যাসি।