সংক্ষিপ্ত

এবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই বিশেষাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনল কংগ্রেস। নেহেরুর পদবী ব্যবহার নিয়ে রাহুল - সোনিয়াকে উদ্দেশ্য করে করা মন্তব্যই হাতিয়ার কংগ্রসের।

 

সংসদের অন্দরে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। একদিকে বিজেপির সাংসদ ও মন্ত্রীরা রাহুল গান্ধীর ব্রিটেনে নিয়ে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে মন্তব্যের জন্য তাঁর সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি রাহুল গান্ধীকে সংসদে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও অনড় রয়েছে। সেখানে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনল কংগ্রেস। কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা কেসি বেনুগোপাল শুক্রবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীর ধনখড়কে প্রধামন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকারভঙ্গের নোটিশ দিয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পরিবার কেন তাঁর পদবী ব্যবহার করে না- এই নিয়ে সংসদে সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ইস্যুতে তাঁর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার ভঙ্গের নোটিশ এনেছে কংগ্রেস।

বাজেট অধিবেশনের প্রথম অংশ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধ্যবাদ প্রস্তাবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর নাম উত্থাপন করেছিলেন। যা নিয়ে তখনও কংগ্রেস রীতিমত আপত্তি জানিয়েছিল। এবার সরাসরি বিশেষাধিকারভঙ্গের নোটিশ জারি করল কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা ও গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কেসি বেনুগোপাল তাঁর জারি করা নোটিশে বলেছেন, 'আমি রাজ্যসভার কার্যপ্রণালী ও বিজনেস পরিচালনার বিধি ১৮৮ বিধির অধীনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার প্রশ্নের একটি নোটিশ দিচ্ছই যে প্রস্তাবারে উত্তর দেওয়ার সময় সংসদের সদস্যদের প্রতি প্রতিফলন ঘটান হয়েছে। ' ৯ ফেব্রুয়ারির প্রধামন্ত্রী মোদীর ভাষণের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এই মন্তব্যগুলি একটি উপহাসমূলক পদ্ধতিতে করা হয়েছিল। এটি কেবল অপমানজনকই নয়, নেহেরু পরিবারের সদস্যদের বিশেষত সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী যারা লোকসভার সদস্য, তাদের পক্ষেও অপমানজনক ও মানহানিকর ছিল। বেণুগোপাল তার নোটিশে বলেছেন নেহেরুর পরিবারের সদস্যরা কেন তার পদবী গ্রহণ করেননি তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য স্বভাবতই খুবই অপমানজনক।

কংগ্রেস নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ভাল করেই জানেন যে বাবার পদবী মেয়েরা বিয়ের পর ব্যবহার করে না। এই দেশে এখনও এমনই রেওয়াজ রয়েছে। কিন্তু এটা জানা সত্ত্বেও তিনি কটাক্ষ করার জন্যই এই মন্তব্য করেছিলেন। শুধু মন্তব্য নয়, তাঁর কথা বলার টোনেও ছিল তাৎচ্ছিল্লের সুর। যা খুবই অপমানজনক। প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর কাছে ছিল অপমানজনক, অপ্রীতিকর। যা তাদের বিশেষাধিকার ভঙ্গ করেছিলেন। তাই মোদীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার ভঙ্গের বিচারের দাবিতেও তিনি সরব হয়ে নোটিশ দিয়েছেন।

সম্প্রতি রাহুল গান্ধী লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি তাঁর একাধিক ভাষণে বলেছিলেন ভারতের গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। পাশাপাশি লোকসভায় রাহুল গান্ধী আদানি ইস্যুতে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। যা দেশে ও বিদেশে বিশেষভাবে অস্বস্তিতে ফেলেছিল বিজেপিকে। তারপর থেকে বিজেপি ক্রমাগত রাহুল গান্ধীকেই আক্রমণ করে যাচ্ছে। পাল্টা এদিন বিশেষাধিকার ভঙ্গের নোটিশ এনে কংগ্রেসও নিশানা করল প্রধানমন্ত্রী মোদীকে।