সংক্ষিপ্ত
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে দল 'সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে একমত নয়।' এমনকি আইনি প্রতিকারও চাইতে পারে তাঁরা।
'মেনে নেওয়া যায় না।' সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস নেতৃত্ব। শুক্রবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের মুক্তির সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করল কংগ্রেস। সমালোচনার কেন্দ্রে সনিয়া গান্ধির ভূমিকাও। উল্লেখ্য রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত নলিণী-সহ বাকিদের মুক্তির জন্য আবেদন করেছিলেন সনিয়া গান্ধী। এবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে দল 'সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে একমত নয়।' এমনকি আইনি প্রতিকারও চাইতে পারে তাঁরা। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মানু সিংভি বলেন,'সোনিয়া গান্ধীর মতামত তাঁর একন্ত ব্যক্তিগত। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে দল একমত নয়। কোনও দিন ছিলও না। পার্টি প্রথম থেকেই এবিষয় তার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে দিয়েছে।' তিনি আরও বলেন,'রাজীব গান্ধী হত্যা কোনও সাধারণ অপরাধ নয়। এটি একটি জাতীয় ইস্যু। কোনও স্থানীয় হত্যাকাণ্ড নয়।'
১৯৯১ সালে আত্মঘাতী বোমবিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর। মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয় মূল অভিযুক্ত নলিণী শ্রীহরণ ও জড়িত সাতজনের। গ্রেফতারির সময় গর্ভবতী ছিলেন মূল অভিযুক্ত নলিণী। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীর আবেদনে মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জিবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয় নলিণীকে। পরে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বদলে যাবজ্জীবনের সাজা দেওয়া হয় বাকি সাতজনকেও।
সোনিয়া গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধীতা করে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মানু সিংভি বলেন, 'আমরা আমাদের অবস্থানে অবিচল। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে একটি জাতির সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও পরিচয় জড়িত।' তিনি আরও সংযোজন করেন, 'একটি জাতির সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বৃহত্তর ইস্যুটি কি বিবেচনায় করা হয়েছে?' অপর এক কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, 'প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর খুনিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। দল এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছে।'
শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পাচ্ছেন নলিনী-সহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তরা। শুক্তবারই নলিনী শ্রীহরণ, রবিচন্দ্রন, শান্থন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমারের মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগেই গত মে মাসে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছেন এই মামলার আর এক সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালন। তার ছ'মাসের মাথায় বাকি সাতজনেরও মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শোনার পর নলিনীর কন্ঠে উঠে আসে,'আমি জঙ্গি নই।'
চলতি বছরের মে মাসেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালনকে মুক্তি দিয়েছিল আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর মুক্তি চেয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টে আবেদন জানান নলিনী এবং রবিচন্দ্রন। গত জুন মাস নাগাদ মাদ্রাজ হাই কোর্ট নলিনীদের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার পরামর্শ দেয়। ১১ নভেম্বর শুক্রবার সেই আবেদন গ্রাহ্য করে নলিনী-সহ বাকি সাতজন সাজাপ্রাপ্তের মুক্তির নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন -
মুক্তি পাচ্ছে নলিণী-সহ রাজীব গান্ধীর ছয় হত্যাকারী, বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের
রাহুল গান্ধী ব্যস্ত ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে, গুজরাট নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটবাক্সে থাবা আপের
আসন্ন গুজরাট নির্বাচনে পদ্ম শিবিরের হয়ে লড়ছেন কারা? একনজরে দেখে নিন ছবি