সংক্ষিপ্ত
কংগ্রেসের ক্রমে দুর্বল হওয়ার কারণ কী
নিজের শেষ গ্রন্থে তুলে ধরলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়
মঙ্গলবারই প্রকাশিত হয়েছে 'দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস, ২০১২-২০১৭'
কী বললেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি
কংগ্রেসের ধরতেই পারেনি যে তাদের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব খতম হয়ে গিয়েছে। আর সেটাই ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাদের পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। অসামান্য নেতাদের অভাবে কংগ্রেস সরকার 'সাধারণ মানের সরকার'-এ পরিণত হয়েছিল। নিজের লেখা শেষ গ্রন্থে এমনই মত ব্যক্ত করেছেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা 'কংগ্রেসম্যান' প্রণব মুখোপাধ্যায়।
২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দেশের ১৩তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। গত বছর মস্তিস্কে রক্ত জমাট বেঁধে এবং একইসঙ্গে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ের স্মৃতিচারণা লিপিবদ্ধ করে গিয়েছিলেন। সেই স্মৃতিচারণাই মঙ্গলবার, 'দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস, ২০১২-২০১৭' নামে একটি গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়েছে। আর তারপরই দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতির স্মৃতি চারণা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে পর্যন্ত আদ্যন্ত কংগ্রেসম্যান হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সেই দল যখন ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে চূড়ান্ত পরাজিত হয়, তখন কেমন অনুভূতি হয়েছিল রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসে থাকা প্রণবের? স্মৃতিচারণায় প্রণব বলেছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের দিন, তিনি তাঁর সহযোগী-কে প্রত্যেক আধঘণ্টা অন্তর ভোটের প্রবণতা জানাতে বলেছিলেন। সন্ধ্যায় ফলাফল স্পষ্ট হলে একদিকে যেমন স্পষ্ট রায়দানের কারণে মনে মনে অত্যন্ত স্বস্তি পেয়েছিলেন, আরেকদিকে তাঁর প্রাক্তন দলের পারফরম্যান্সে হতাশ হয়েছিলেন। বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কংগ্রেস মাত্র ৪৪টি আসন জিতেছে।
কিন্তু, কেন কংগ্রেসের এই অবস্থা? প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তাঁর মতে কংগ্রেস দল তাদের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব যে ফুরিয়ে গিয়েছে, তা ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর মতো বড় নেতাদের জন্যই ভারত একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল দেশে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের মতো অবস্থা হয়নি। স্মৃতিচারণায় আক্ষেপ করেছেন প্রণব, এখন আর সেইরকম অসাধারণ নেতারা নেই। যার ফলে কংগ্রেস সরকার একটা 'গড়পড়তা সরকার'এ পরিণত হয়েছে। কংগ্রেসের এই অধ্ঃপতন বেশ উদ্বেগের বলে জানিয়েছেন প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি। কারণ কংগ্রেস শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান যা ভারতবাসীর জীবনের সঙ্গে জড়িত।