সংক্ষিপ্ত

‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ শিরোনামে এই রিপোর্টটি পেশ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছে অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল। বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধি ভারতের সম্পূর্ণ কর ব্যবস্থাটিকে ‘গব্বর সিংহের ট্যাক্স’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

দেশের মাত্র ১ শতাংশ ধনীতম মানুষদের হাতে রয়েছে ৪০% সম্পত্তি। তার পরের ভাগে অর্থাৎ ধনীদের অর্ধেকাংশের কাছে আছে ৩% সম্পত্তি। মহামারীর সময় থেকে প্রতি দিন ৩৬০৮ কোটি টাকা করে বেড়ে চলেছে ধনকুবেরদের সম্পত্তি। অথচ ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতের ৬৪% জিএসটি মিটিয়েছেন নীচের তলার ৫০% মানুষ। চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক সংগঠন। এই রিপোর্ট নিয়েই এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি।

অতিমারি অবশ্যই সারা বিশ্বের ওপর এক বৃহৎ স্বাস্থ্য সঙ্কট ডেকে এনেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই বিষয়ে সহমত। অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়ে জীবিকা হারিয়েছিলেন অনেকেই। ধনী-দরিদ্রের সম্পদের ফারাকটি আরও বিস্তারলাভ করেছে সেই সময় থেকেই। সোমবার সুইৎজ়ারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠক শুরু হয়েছে। সেখানেই ‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ শিরোনামে এই রিপোর্টটি পেশ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছে অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল। যা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই ভারত সরকারের আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধি ভারতের সম্পূর্ণ কর ব্যবস্থাটিকে ‘গব্বর সিংহের ট্যাক্স’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

আন্তর্জাতিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, অতিমারি শুরুর পর থেকে ভারতের ধনকুবেরদের (১০০ কোটি ডলার বা প্রায় ৮২০০ কোটি টাকার মালিক) সম্পত্তি বেড়েছে ১২১%। সরকার যদি ১০জন ধনীতম ব্যক্তির উপরে ৫% অতিরিক্ত কর চাপাতো তাহলে দেশের সমস্ত স্কুলছুট পড়ুয়াকে স্কুলে ফিরিয়ে আনা যেত। আরেকদিকে যদি ধনকুবেরদের সমস্ত সম্পদের উপরে ২% কর চাপানো হত, তাহলে সরকারের রাজকোষে আসত প্রায় ৪০,৪২৩ কোটি টাকা। যা দিয়ে দেশের সমস্ত অপুষ্ট মানুষকে খাবার খাওয়ানো যেত ১৮ মাস ধরে। ২০১৭-২০২১ সালে শিল্পপতি গৌতম আদানির শেয়ার সম্পদ যত বেড়েছে, তাতে এককালীন কর চাপালে আসতে পারে ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা। তা কাজে লাগিয়ে ৫০ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা যায়। মহিলা, দলিত, জনজাতিভুক্ত মানুষেরা মজুরির ক্ষেত্রে কী ভাবে সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তা-ও বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাভ বেহরা বলেন, ‘‘দলিত, জনজাতি, মুসলিম, মহিলা ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা ক্রমাগত কোণঠাসা হচ্ছেন। অথচ এই ব্যবস্থাই ধনীদের সুবিধা করে দিচ্ছে।’’ অক্সফ্যামের এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট নিয়ে মোদী সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে প্রধান বিরোধী তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর টুইট, ‘‘সবচেয়ে দরিদ্র ৫০% মানুষের জিএসটিতে অবদান ৬৪%। ধনীতম ১০ শতাংশের অবদান মাত্র ৩%। গব্বর সিংহ ট্যাক্স। ধনীকে ছাড়, দরিদ্রের উপরে লুটপাট।’’

আরও পড়ুন-
‘ভারতের সঙ্গে ৩টি যুদ্ধে বেড়েছে গরিবী, বেকারত্ব’, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সততার বৈঠক চাইলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ
জোশীমঠের পর হিমাচল প্রদেশ, একাধিক বাড়ি এবং রাস্তাঘাটে ফাটল দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সুখু