সংক্ষিপ্ত

জোশীমঠের ভূমি অবনমনের মধ্যেই হিমাচল প্রদেশেও বহু বাড়িতে দেখা দিয়েছে ফাটল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু।

জোশীমঠের ভূমি অবনমনের কবলে পড়ে যাবতীয় বিষয়-সম্পত্তি খুইয়ে প্রাণটুকু সম্বল করে ঘর ছেড়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। পাহাড়ের ওপরে মাটি বসে গিয়ে ক্রমাগত বাড়িঘর ও রাস্তায় ফাটল বেড়ে চলেছে দেবভূমিতে। কিন্তু, এমন অবস্থা শুধুমাত্র উত্তরাখণ্ডে নয়, হতে পারে অন্যান্য পাহাড়ি শহরগুলিতেও। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু।

ইতিমধ্যেই হিমাচল প্রদেশের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে, মান্ডি জেলার রাস্তাঘাটেও ক্রমশ ফাটল দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করে শনিবার হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের মতো পরিণতি হতে পারে হিমাচল প্রদেশেরও। কেন্দ্রের কাছে আবেদন করছি যে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাজ্যের তহবিল বাড়ানো হোক।”

শনিবারই হিমাচল প্রদেশের জন্য দুটি ডপলার ওয়েদার র‌্যাডার সিস্টেমের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু। সেখানেই তিনি জোশীমঠের ভূমিক্ষয়ের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান মন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংকেও হিমাচলের পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ও সম্পত্তি নষ্টের সম্ভাবনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাজ্যের কাছে এতদিন পর্যাপ্ত প্রযুক্তি ছিল না। হিমাচল প্রদেশের আবহাওয়া আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য আমাদের আরও চারটি ডেডিকেটেড ডপলার ওয়েদার র‌্যাডার সিস্টেমের প্রয়োজন।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, কিন্নর ও লাহল-স্পিতি জেলাগুলিতে মেঘভাঙা বৃষ্টি হচ্ছে। এখানে মাটিতে ফাটল ও ধস নামতেও দেখা গেছে। দু’বছর আগে কিন্নর জেলায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে শুধুমাত্র সাধারণ জনজীবন ও সম্পত্তিরই ক্ষতি হয়নি, পাশাপাশি হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিগত তিন থেকে চার দশক ধরে সিমলা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেও ধীরে ধীরে মাটি বসে যাচ্ছে।

হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার বাসিন্দাদের বক্তব্য, কিরাটপুর-মানালি হাইওয়েতে রাস্তা চওড়া করার কাজ চলছে। সেই কারণে একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরছে। গত বছর যখন এই রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল, সেই সময় থেকেই ফাটল শুরু হয়েছে। মান্ডি জেলার লিঙ্ক রোড, যা শালানাল, তানহুলা ও জালানাল গ্রামকে সংযুক্ত করছে, সেই রাস্তার আশেপাশের অঞ্চলে গত বছর থেকেই বাড়িঘরে ফাটল ধরতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ তুলছেন, রাস্তা বানানোর জন্য অবৈজ্ঞানিকভাবে গাছ কাটার ফলেই ভূমিধস ও বাড়িতে ফাটল ধরছে। ইতিমধ্যেই কাংড়ার জেলা প্রশাসক নিপুন জিন্দাল ম্যাকলিওডগঞ্জে ধসে যাওয়া রাস্তাগুলির বিষয়ে ধর্মশালা পৌর কর্পোরেশনের কমিশনার এবং টাউন অ্যান্ড কান্ট্রি প্ল্যানিং বিভাগের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কার বিষয়ে ভূতাত্ত্বিকদের মতামতসহ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন-
দিল্লিতে বিজেপির বিশাল রোড শোয়ে সামিল হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী, রাজধানী ঘিরে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনী
ভোর রাতে জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা দ্বীপে ৬.১ তীব্রতার কম্পন
বিরোধীদের চোখে ‘লঙ্কার গুঁড়ো’ মন্তব্যে উত্তাল মালদহের রাজনীতি, তৃণমূল নেত্রীর হুঁশিয়ারির পালটা তোপ বিজেপিরও