সংক্ষিপ্ত

দিল্লির হিংসায় মৃত্যু হয়েছে হেড কনস্টেবল রতন লাল-এর

দিল্লি পুলিশের দাবি  ডেপুটি পুলিশ কমিশনার-কে বাঁচাতে গিয়েই মরতে হয়েছে তাঁকে

উত্তর-পূর্ব দিল্লির চাঁদবাগ এলাকায় পুলিশের উপর আক্রমণের প্রমাণও মিলেছে

দুটি শিহরন জাগানো নতুন মোবাইল ভিডিও ফুটেজ-ও সামনে উঠে এসেছে

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লির হিংসার সময় ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অমিত শর্মা-কে উন্মত্ত জনতার পাথরের আঘাত থেকে বাঁচাতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছিল হেড কনস্টেবল রতন লাল-এর। এদিন দিল্লি পুলিশ এমনটাই দাবি করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর-পূর্ব দিল্লির চাঁদবাগ এলাকায়। সেখানকার হিংসার দুটি শিহরন জাগানো মোবাইল ভিডিও ফুটেজ-ও এদিন সামনে উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে কয়োকশো লোক সামান্য কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ঘিরে ধরে হামলা করেছে।

দুটি ভিডিওই দুটি বাড়ির ছদ থেকে তোলা। প্রথম ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে রাস্তায় গাদা গাদা পাথর পড়ে আছে। কয়োকশো মানুষ রাস্তায় দুদিক থেকে নিশানা করছে একদল পুলিশকে। পুলিশ পাল্টা টিয়ারগাসের শেল ছুড়লে তখনকার মতো জনতা ছত্রভঙ্গ হচ্ছে। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে, তারা ফিরে এসে ঘিরে ধরছে পুলিশদের। পিছোতে পিছোতে একসময় পুলিশ রাস্তার মাঝের ডিভাইডারে আটকে যায়। সেই অবস্থায় জনতা চারদিক থেকে পুলিশকর্মীদের লাঠি ও পাথর দিয়ে আক্রমণ করে।

কয়েকজন পুলিশ সদস্য বিপদ আসছে বুঝে আগেভাগেই রাস্তার ডিভাইডার পেরিয়ে উলিটো দিকের রাস্তায় চলে যান। সেখানে জনতার পা না পড়লেও তাঁরাও নিরাপদ হতে পারেননি। তাদের লক্ষ্য করেও চারপাশ থেকে ইট এবং পাথরের বৃষ্টি হতে থাকে। তারা কয়েকটা গাছের আড়ালে আশ্রয় নেন। এই ভিডিও-তে ডিসিপি অমিত শর্মা এবং সিপি অনুজ কুমার-কে স্পষ্ট বোঝা না গেলও তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। সেখানে ছিলেন হেড কনস্টেবল রতন লাল। ভিডিওতে যে ঘটনা দেখা গিয়েছে, ওই দিন ওই এলাকাতেই মৃত্যু হয়েছিল রতন লাল-এর। পুলিশের দাবি পাথরে আঘাতে আহত সিনিয়র অফিসার অমিত শর্মা-কে বাঁচাতে গিয়েই প্রাণ হারান রতন।

আরও পড়ুন - দিল্লির হিংসায় সুপ্রিম কোর্টের অধীনে তদন্ত চাইলেন মমতা

আরও পড়ুন - শুক্রবারই দিল্লি হিংসা মামলার শুনানি, দিল্লি হাইকোর্টকে কড়া নির্দেশ শীর্ষ আদালতের

আরও পড়ুন - দিল্লির হিংসা ঢাকতে করোনার কথা, নাম না করে মোদীকে খোঁচা মমতার

অন্য ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, সিপি অনুজ শর্মা ও অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা প্রতিবাদীদের পাথরবৃষ্টির মধ্যেই আহত অমিত শর্মাকে নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা রাস্তা থেকে সরে গিয়ে প্রথমে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে তাঁরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কোন অংশে হেড কনস্টচেবল রতনলালের মৃত্যু হয়েছিল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ তারিখ অর্থাৎ দিল্লির হিংসার দ্বিতীয় দিনে সিএএ-বিরোধীদের সঙ্গে মীমাংসা জন্য আলোচনা করতে চাঁদবাগে গিয়েছিলেন। কিন্তু, আলোচনার মাঝপথেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

দুটি ভিডিও ফুটেজেই কয়েকজন মহিলাকেও পুলিশকর্মীদের দিকে পাথর ছুঁড়তে দেখা গিয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে চারদিন ধরে চলা ভয়ঙ্কর হিংসায় মোট ৪৮ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া বহু ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধর্মস্থলে হামলা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অন্যান্য বিভিন্ন রাষ্ট্রও ভারতে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।