সংক্ষিপ্ত
এই আইনটি চালু হওয়ার পর এই প্রথম 124A ধারার বিধান স্থগিত করা হয়েছে। আদালত বলেছে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বিধান অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
বিতর্কিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে অতি সক্রিয়তা দেখানোর ফল পেল কেন্দ্র। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে জোর ধাক্কা খেল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এদিন দেশের শীর্ষ আদালত এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিয়েছে সেডিশন ল বা রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ফের পর্যালোচনা করতে হবে কেন্দ্রকে। ততদিন এই আইন নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। অর্থাৎ রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের এদিনের রায় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ঔপনিবেশিক যুগের কয়েকশ অভিযুক্তের জীবনে প্রভাব ফেলার মত ঘটনা। এবার রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা জামিনের জন্য আদালতে যেতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট এদিন রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ব্যবহার স্থগিত করেছে এবং কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে যে আইনটি পর্যালোচনা না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে নতুন কোনো FIR যেন রেজিস্টার না করা হয়। বিচারাধীন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কারাগারে বন্দী ব্যক্তিরা আদালতের কাছে যেতে এবং জামিন চাইতে পারেন।
রায়ে দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে "আমরা আশা করি যে এই আইনের পুনঃপরীক্ষা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এটি ব্যবহার করা হবে না," সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, "যাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আইপিসি ১২৪ এ ধারার অধীনে মামলা করা হয়েছে এবং কারাগারে রয়েছে তারা জামিনের জন্য উপযুক্ত আদালতে যেতে পারে।"
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, "এটা স্পষ্ট যে ১২৪ এ ধারার কঠোরতা বর্তমান পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই বিষয়টি কেন্দ্রও স্বীকার করে। এটি যে সময়ে তৈরি করা হয়েছিল, তখন দেশ ঔপনিবেশিক আইনের অধীনে ছিলয তাই এই ধারার পুনর্বিবেচনা জরুরি, কেন্দ্রকে সেই কাজ করতে হবে।" উল্লেখ্য, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ ধারার অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহের মত অপরাধের বিচার করা হয়।
এই আইনটি চালু হওয়ার পর এই প্রথম 124A ধারার বিধান স্থগিত করা হয়েছে। আদালত বলেছে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বিধান অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এছাড়াও, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে অতিরিক্ত নির্দেশ জারি করতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে।
আগের দিন, কেন্দ্রের তরফে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের মামলার আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, কেন্দ্র আইনটির পুনর্বিবেচনার জন্য একটি খসড়া তৈরি করেছে। খসড়াতে বলা হয়েছে যে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হবে যদি এসপি পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন যে এর জন্য একটি বৈধ কারণ রয়েছে। তবে আপাতত যাবতীয় যুক্তি খারিজ করে স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট।