সংক্ষিপ্ত
- আর্থিক মন্দায় ডুববে ভারতীয় অর্থনীতি
- আগেই এই বার্তা দিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক
- কেন্দ্রীয় সরকারও এবার খারাপ পূর্বাভাস দিল
- ৪.৫ শতাংশ সংকুচিত হবে দেশের অর্থনীতি
চলতি অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি হ্রাস পাবে, আগেই সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বৃদ্ধির হারে এই সংকোচন বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। এবার ভারতীয় অর্থনীতি যে অত্যন্ত খারাপ লময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় লপরকারও তা কার্যত স্বীকার করে নিল।
করোনা সংক্রমণ বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার আগে থেকেই ধুকছিল ভারতীয় অর্থনীতি। তার মধ্যে করোনার ধাক্কা একেবারে খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে নয়া চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে সেই পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদরা। অর্থমন্ত্রকের সাম্প্রচিক রিপোর্টেও সেই কথাই মেনে নেওয়া হয়েছে। চলতি আর্থক বছরে ৪.৫ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সংকুচিত হতে পারে বলে সেই রিপোর্টে জানান হয়েছে।
গত এপ্রিলে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এবারের পূর্বাভাসে তার তুলনাতেও করুণ ছবি ধরা পড়েছে। চলতি আর্থিক বছরে অর্থআৎ ২০২০-২১ সালের অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতি ৪.৫ শতাংশ হারে সংকুচিত হতে পারে বলে নর্থ ব্লক তার পূর্বাভাসে জানিয়েছে। যা গত এপ্রিলে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে দেওয়া পূর্বাভাসের থেকে ৬.৪ শতাংশ পয়েন্ট কম।
অর্থ মন্ত্রকের অর্থনৈতিক বিষয়ক দফতরের প্রকাশিত ম্যাক্রোইকনমিক্স রিপোর্ট অনুসারে, করোনাভাইরাসের কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ার ফলে এই সংকট দেখা দিয়েছে। তার জেরে ভারতীয় অর্থনীতি 'গভীর চ্যালেঞ্জের' মুখে দাঁড়িয়েছে। তবে দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে আশার আলোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এই রিপোর্টে। সরকারের বিভিন্ন কাঠামোগত সংস্কার এবং সামাজিক কল্যাণমূলক পদক্ষেপ অর্থনীতির এই দুর্দশার মধ্যে সামান্য হলেও ইতিবাচক সম্ভাবনার গতি সঞ্চার করেছে। করোনা মহামারীর চলাকালীন সরকারের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই বিষয়েও বিশদ তালিকা তুলে ধরা হয়েছে অর্থ মন্ত্রকের এই রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: করোনা সঙ্কটের মধ্যে এবার হানা দিল প্লেগ, চিনের জন্যে আরেক মহামারির আশঙ্কা বিশ্বে
এদিকে করোনামহামারী ও লকডাউনে দেশে অর্থিক কর্মকাণ্ড যে ধাক্কা খেয়েছে তার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়েরও উপরেও। সেই কথাও অর্থমন্ত্রকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরে সরকারের রাজস্ব আদায় ৬৮.৯ শতাংশ হ্রাস পয়েছে বলে কেন্দ্র জানিয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও করোনা লকডাউনে দিশেহারা। শুধু ভারত নয়, এই সময়ে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় ডুবে যাবে। সবথেকে খারাপ খারাপ পরিস্থিতি হবে বিশ্ব অর্থনীতির, এমনটাই মনে করছে বিশ্বব্যাঙ্ক। গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের বিস্তারকে সীমাবদ্ধ করার কঠোর ব্যবস্থা স্বল্পমেয়াদী ক্রিয়াকলাপকে হ্রাস করেছে এবং তা অর্থনৈতিক সংকোচনে অবশ্যই ভূমিকা রাখবে।
মুডির ইনভেস্টরস সার্ভিস, ফিচ রেটিং এবং এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংয়ের মতো আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সিগুলিও ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে মার্চ ২০২১ অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারে ৪-৫ শতাংশ সংকোচনের পূর্বাভাস দিয়েছে। ক্রিসিল বলেছেন যে এটি স্বাধীনতার পর থেকে দেশের চতুর্থ মন্দা হবে। এবার সেই পূর্বাভাসের প্রতিধ্বনিই শওনা গেল দেশের অর্থ মন্ত্রকের সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে।