সংক্ষিপ্ত
- মহারাষ্ট্রে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মাঝে নতুন বিপদ
- আজ দুপুরেই আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ
- ইতিমধ্যে মুম্বই সহ পশ্চিম উপকূলের বিস্তীর্ণ অংশে বৃষ্টি শুরু
- ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ আছড়ে পড়ার পর মহারাষ্ট্রের বুকে তাণ্ডব চালাবে দীর্ঘক্ষণ
ঠিক ২ সপ্তাহ আগে ২০ মে দেশের পূর্ব উপকূল দেখেছিল আমফানের ধ্বংসযজ্ঞ। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে প্রায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল পুরো দক্ষিণবঙ্গ। এবার পশ্চিম উপকূলকে চোখ রাঙ্গিয়ে এসে হাজির হয়েছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। মৌসম ভবন সূত্রে জানা গেছে, শক্তিশালী এই সাইক্লোন ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্রের উপকূলের অনেকটাই কাছে চলে এসেছে। ইতিমধ্যে মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অংশে বৃষ্টি ও সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে৷ প্রবল বর্ষণ হচ্ছে গোয়াতেও। সঙ্গে ঝড় বইছে উপকূলবর্তী অঞ্চলে।
বর্তমানে মুম্বই উপকূল থেকে সাড়ে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। আজ দুপুরেই মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার আলিবাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা এই সুপার সাইক্লোনের। তারপর ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর দিকে মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের দক্ষিণ উপকূল ধরে অগ্রসর হবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার গিতেবেগের ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে দেশের বাণিজ্য রাজধানী মুম্বইতেও।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের মুম্বই, পালঘর, ঠানে, রত্নগিরি, রায়গড়, সিন্ধুদুর্গে ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে। মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের অন্যান্য উপকূল এলাকা অতিভারী বৃষ্টি হবে৷ নিসর্গ-র ল্যান্ডফল বা জমিতে আছড়ে পড়ার সময় গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ১২০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়৷
আরও পড়ুন: দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এবার ২ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল, মৃতদের ৫০ শতাংশই ষাটোর্দ্ধ
মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি ঝড়ের প্রভাব পড়বে গুজরাতেও। ভালসাদ, সুরাত, নবসারি, ভাবনাগর ও ভারুচে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রশাসিত দাদরা ও নগরহাভেলি, দমন-দিও-তেও ঝড়ের প্রভাব পড়বে৷
আরও পড়ুন: আরব সাগরে ৬ ফুট লম্বা ঢেউ ওঠার আশঙ্কা, ১৩৮ বছর পর ঘূর্ণিঝড় দেখছে মুম্বইবাসী
শেষ পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ আছড়ে পড়ার পর মহারাষ্ট্রের বুকে তাণ্ডব চালাবে দীর্ঘক্ষণ। এরপর ঝড় মুম্বই থেকে ক্রমশ নাগপুরের দিকে যাবেয বৃহস্পতিবার নাগপুরের পাশ দিয়ে বয়ে যাবে এলাহাবাদ অভিমুখে। শুক্রবার এলাহাবাদ পৌঁছবে নিসর্গ। ততক্ষণে অবশ্য দীর্ঘপথ অতিক্রম করে শক্তি হারিয়ে ফেলবে সে।
মঙ্গলবারই ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ মোকাবিলা নিয়ে গুজরাত ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অতিমত শাহ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৪০টি দল মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দাদরা-নগর হাভেলি ও দমন-দিউতে মোতায়েন করা হয়েছে৷ ভারতীয় সেনা, নেভি ও বায়ুসেনা উদ্ধারকাজের সরঞ্জাম ও ত্রাণ নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে৷
ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই মুম্বইয়ে সাধারণত কোনও ঝড় আছড়ে পড়ে না। মুম্বইয়ে ঝড় আছড়ে পড়া খুব বিরল ঘটনা। ১৩৮ বছর আগে শেষবার ঝড় হয়েছিল মুম্বইয়ে। সেই ঝড়় বোম্বে সাইক্লোন নামে পরিচিত ছিল।২০০৯ সালে অবশ্য একটি ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব দেখিয়েছিল মহারাষ্ট্রের কিছু জায়গায়। তবে ঘূর্ণিঝড় ফিয়ানের শক্তি খুব একটা বেশি না থাকায় সেভাবে ক্ষতির মুখে পড়েনি রাজ্যটি। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বায়ু ২০১৭ সালে গুজরাট উপকূলে হানা দিয়েছিল। তাতে অবশ্য মহারাষ্ট্রের তেমন ক্ষতি হয়নি।
এদিকে দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ। আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ হাজার ছাড়িয়েছে। সবার উপরে রয়েছে মুম্বই। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ের আগমনে সংক্রমণ আরো বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে প্রশাসন। পরিস্থিতি সামলাতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে রাজ্যবাসীকে ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, দুদিন বাড়ির বাইরে না বেরতে৷