সংক্ষিপ্ত
রাহুল গান্ধীর আইনজীবী অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেরশ বা চূড়ান্ত আদেশের জন্য গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে আদালত তা দিতে অস্বীকার করেছে।
মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীর জন্য আপাতত কোনও স্বস্তির বার্তা নেই। আপাতত এক মাস চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার জন্য কাটাকে হবে রাহুল গান্ধীকে। গুজরাট হাইকোর্ট জানিয়েছেন এই মামলায় কোনও অন্তবর্তকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না। গ্রীষ্মকালীন অবকাশের পরই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হবে। ২০১৯ সালের পুরনো মানহানি মামলায় স্বস্তি পেতে আরও এক মাসেরও বেশি সময় লাগবে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনী প্রচারের সময় রাহুল গান্ধী ললিত মোদী, নীবর মোদী ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে বলেছিলেন , 'সব চোরেদের কেন পদবী মোদী হয়।' মোদী সম্প্রদায়ের মানুষকে রাহুল গান্ধী অপমান করেছেন বল তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী।
গুজরাট হাইকোর্টে রাহুল গান্ধীর হয়ে সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিংভ। তিনি অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেরশ বা চূড়ান্ত আদেশের জন্য গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বলেছিলেন ফৌজদারি মানহানি মামলায় তিন থেকে ৬ মাসের বেশি কারাদণ্ড দেওয়ার নজির নেই। তিনি আরও বলেন, তাঁর মক্কেল এজাতীয় মন্তব্য এই প্রথমবার করেছিলেন। তারজন্ তাঁকে চরম দণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাহুল গান্ধীকে নিম্ন আদালত যে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন তার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী সিংঘি। কিন্তু তা নাকচ করে দেয় গুজরাট আদালত।
পাল্টা পূর্ণেশ মোদীর আইনজীবী অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশের জন্। সিংঘির আবেদনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, সুরাটের ট্রায়াল কোর্ট দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি রাহুল গান্ধীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছিল তাঁর মন্তব্যের জন্য। কিন্তু রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন তিনি ক্ষমা চাইবেন না। আইনি লড়াই করবেন।
দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের জানিয়ে দেন, চার বছর আগের মোদী পদবী নিয়ে দায়ের হওয়া মানহানি মামলায় এই পর্যায়ে কোনও অন্তবর্তী সুরক্ষা দেওয়া যাবে না। যদি এদিন রাহুল গান্ধীর আবেদন মঞ্জুর হত তাহলে সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার পথ প্রসস্থ হত। মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশের জন্য রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গেছে। ছাড়তে হয়েছে তাঁর সরকারি বাংলো। ৪ মে থেকে গুজরাট আদালতে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শুরু হচ্ছে। আদালত খুলতে প্রায় এক মাস বাদে , ৩ জিন। তারপরই রায়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ২৩ মার্চ সুরাটের আদালত মোদী পদবী ইস্যুকে দায়ের হওয়া চার বছর পুরনো মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। একই সঙ্গে তাঁকে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। তিনি সুরাটের দায়রা আদালতে ম্যাজিস্ট্রিয়াল আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন যা দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল যা তার এমপি হিসাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল। দলটি বলেছে দায়রা আদালতের আদেশকে আগামী সপ্তাহে গুজরাট হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হবে। গুজরাটের সুরাটের আদালত বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মানহানির মামলায় দোষী স্থাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। সুরাট আদালতের এই রায় নিয়েই কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। কংগ্রেস জানিয়ে রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার তারা গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। অন্যদিকে বিজেপি জানিয়েছে এই রায় গান্ধীদের দর্প চূর্ণ করবে। যাইহোক সুরাটের আদালতের রায়ের মাত্র এক দিন পরেই রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে তাঁকে ২২ এপ্রিল বাংলো খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেস নেতাও সেই মতই ২২ এপ্রিল তাঁর দুই দশকের পুরনো ঠিকানা ছাড়ছেন বলে সূত্রের খবর।