তাবলিগি জামাত সদস্যদের সমাবেশে কোভিড-১৯ যুদ্ধে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে ভারততারপর থেকে এই ভাইরাস-কে অনেক ঘৃণার কারবারি মসজিদ ভাইরাস বলছিলেনবৃহস্পতিবার প্রায় একই রকম বড় জমায়েত হল সিদ্ধলিঙ্গেশ্বর মন্দির চত্ত্বরেতারপর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি করোনা-কে এখন মন্দির ভাইরাস-ও বলা হবে 

এতদিন বলা হচ্ছিল 'মসজিদ ভাইরাস'। দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজে, কয়েক হাজার তাবলিগি জামাত সদস্য সমবেত হয়েছিলেন। এসেছিলেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ এমনকী বিদেশিরাও। তারপর সেখান থেকে তারা বিভিন্ন রাজ্যে ফিরতেই, অন্তত ১৪টি রাজ্যে কোভিড-১৯'এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছিল ভারত। তাববলিগি জামাত-এর সেই ভুলের সুযোগ নিয়ে সামগ্রিকভাবে মুসলিম জমগোষ্ঠীর দিকে আঙুল তোলা হচ্ছিল। নভেল করোনাভাইরাস-কে মসজিদ ভাইরাস বলার মতো অশ্লীলতাও হয়েছে। বৃহস্পতিবার কিন্তু নিজামুদ্দিন মার্কাজের মতোই দৃশ্য দেখা গেল কর্ণাটকের কালবুর্গি-তে। এক মন্দিরকে কেন্দ্র করে লকডাউন ভেঙে, সামাজিক দূরত্বকে কাঁচকলা দেখিয়ে উৎসবে মেতে উঠলেন শ'য়ে শ'য়ে মানুষ। তাই, প্রশ্ন উঠছে, এবার কি বলা হবে, মন্দির ভাইরাস?

কর্নাটকের কালবুর্গি-র সিদ্ধলিঙ্গেশ্বর মন্দিরে এদিন ছিল রথযাত্রা উৎসব। সেই উপলক্ষ্য়েই কালবুর্গী ও আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে মন্দির চত্ত্বরে ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েকশ' মানুষ। একেবারে গা ঘেসাঘেসি করে দাঁড়িয়ে থাকা ভক্তের দলের কারোর মুখে ছিল না মাস্ক, হাতে ছিল না গ্লাভস। পুলিশ বা প্রশাসনের কর্তারা এই রথযাত্রায় যেন জগন্নাথের ভূমিকা নিয়েছিলেন।

Scroll to load tweet…

আর এই লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব উড়িয়ে দুরন্ত উৎসব হল যে কালবুর্গি জেলায়, সেখান থেকেই করোনভাইরাস সংক্রমণ-জনিত কারণে প্রথম কোনও ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। তারপর এই জেলায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কন্নড়ভূমের এই জেলাটি ইতিমধ্যেই দেশের অন্যতম উদ্বেগজনক হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশ, হটস্পট এলাকাগুলিতে কঠোরভাবে লকডাউন লাগু করতে হবে। কিন্তু, বিজেপি শাসিত রাজ্যেই সেই নির্দেশ মানা হল না।

Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…

তবে দেরিতে হলেও নড়েচড়ে বসেছে ইয়েদুরাপ্পা প্রশাসন। মন্দির চত্ত্বরে উৎসব হওয়া আটকাতে না পারলেও, ওই উৎসবে অংশ নেওয়া ভক্তদের ও সিদ্ধলিঙ্গেশ্বর মন্দির পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে কারা এদিন মিছিল বের করে, বা অন্যরা যারা অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, কারা এই উৎসব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

'আবার গর্জাবে অর্থনীতি', আরবিআই-এর পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেন সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর

চারিদিক থেকে বিপদ মৌলানা সাদ-এর, এবার ফাঁসলেন তহবিল তছরুপ-এর মামলায়

করোনাভাইরাস কি তবে বাড়িয়ে দিল বিবর্তনের গতি, দেখুন কেন এই ভিডিও ভাইরাল

পুলিশের দাবি, আগেই মন্দির কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে, এই বছর সিদ্ধলিঙ্গেশ্বর মন্দিরে রথযাত্রার উৎসব স্থগিত রাখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ এই উৎসব শুরু হয়ে যায়। বিশাল মিছিল বের করা হয়। তারপর গোটা দিনই মন্দির চত্ত্বরে ভালোই ভিড় ছিল। পুলিশ প্রশাসন কড়া হলে, কীকরে এত লোক সেখানে জড়ো হল, কিংবা কীভাবে তারা অন্য জেলা থেকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত জেলার সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ল - এরকম বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। সেই সঙ্গে, উঠছে আরও একটা গুরুতর প্রশ্ন, তাহলে কি 'মসজিদ ভাইরাস'-এর পাশাপাশি করোনা-কে 'মন্দির ভাইরাস'-ও বলা হবে?