সংক্ষিপ্ত


কোভিড-১৯ মহামারির তৃতীয় তরঙ্গের (Covid-19 Third Wave) কারণে, পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যে শারীরিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে  নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)। এর ফলে বড়সড় ধাক্কা খেল চার্টার ফ্লাইট অপারেটরদের (Charter Flight Operators) ব্যবসা। 
 

চলমান কোভিড-১৯ মহামারির তৃতীয় তরঙ্গের (Covid-19 Third Wave) কারণে, গত ৮ জানুয়ারি থেকে পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যে, শারীরিক সমাবেশ নিষেদ্ধ করেছে  ভারতের নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)। আর এর ফলে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে চার্টার ফ্লাইট অপারেটর (Charter Flight Operators) সংস্থাগুলির ব্যবসা। নির্বাচনের সঙ্গে চার্টার ফ্লাইটের কী সম্পর্ক, তা অন্তত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গের মানুষের বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ফ্লাইট অপারেটর সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি, 'নির্বাচনী ভ্রমণ'এর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল, কিন্তু কমিশন সভা-সমিতিতে নিষেধাজ্ঞা জারির পর চার্টার ফ্লাইটে নির্বাচন-সম্পর্কিত ভ্রমণ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে মার খাচ্ছে তাদের ব্যবসা। 

সংবাদ সংস্থা পিটিআই'কে, 'ক্লাব ওয়ান এয়ার'এর (Club One Air) সিইও, রাজন মেহরা (Rajan Mehra) জানিয়েছেন, নির্বাচনী ভ্রমণের সংখ্যা এবার খুবই সীমিত। 'জেটসেটগো এভিয়েশন'এর (JetSetGo Aviation) প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও কণিকা টেকরিওয়াল (Kanika Tekriwal) বলেছেন, গত বছর তাদের সংস্থায় নির্বাচন-সম্পর্কিত ভ্রমণের জন্য যত অনুসন্ধান করা হয়েছিল, এই বছর সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তার মাত্র ৭০ শতাংশ অনুসন্ধান হয়েছে। তবে, অনুসন্ধানই সার, এখনও পর্যন্ত কেউই সত্যি সত্যি ফ্লাইট বুক করেননি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কথা চলছে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে বেশিরভাগ চার্টার ফ্লাইট অপারেটরদেরই, সারা মাসের মোট উড়ান-ঘন্টার মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে নির্বাচনের জন্য। অথচ, গত বছর, নির্বাচনের মরসুমে, প্রায় প্রতিটি সংস্থারই মোট উড়ানের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছিল, নির্বাচনী সমাবেশের বা অন্য নির্বাচনী প্রচার সংক্রান্ত অন্য কাজের জন্য।

জেটসেটগো এভিয়েশন এবং ক্লাব ওয়ান এয়ারের চার্টারের হাতে, ফ্লাইট পরিচালনার জন্য যথাক্রমে ১৮ টি এবং ১০ টি বিমান রয়েছে। শারীরিক সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞার পর থেকে, নির্বাচনের জন্য এই ফ্লাইটগুলি খুব বেশি ব্যবহার হচ্ছে না। গত ৮ জানুয়ারী উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, গোয়া, পঞ্জাব এবং মণিপুরের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ই ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত শারীরিক সমাবেশ, রোডশো এবং বাইক র‍্যালির মতো প্রচার অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

নির্বাচন-সম্পর্কিত ভ্রমণ কমলেও, ব্যবসায়িক বিমান চলাচল-সহ  চার্টার ফ্লাইট অপারেশনের সামগ্রিক পরিস্থিতি কোভিড-১৯ মহামারির ফলে খারাপ হওয়া তো দূর, আগের থেকে অনেকটাই ভাল হয়েছে। এর প্রধান কারণ, কোভিড মহামারির প্রথম তরঙ্গের পর থেকেই, বিলাসিতা বা অন্য সব কিছুর থেকে মানুষের কাছে প্রধান গুরুত্বের বিষয় হয়ে উঠেছে নিরাপত্তা। কোভিড-১৯'এর আগে, প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ উড়ান ঘন্টা উড়ত প্রাইভেট জেটগুলি। তবে বর্তমানে প্রতি মাসে ৩৫০ থেকে ৪০০ উড়ান ঘন্টা উড়ছে চার্টার ফ্লাইট সংস্থার বিমানগুলি। এর প্রধান কারণ চার্টার ফ্লাইটের 'ফ্লাই সেফ' (Fly Safe) প্রতিশ্রুতি। ছুটি কাটানোর জন্যই বুকিং থেকেই এই চার্টার বিমান সংস্থাগুলির মূল ব্যবসা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক ভ্রমণও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। শুধু কোপ পড়েছে নির্বাচনী ভ্রমণে।