সংক্ষিপ্ত

দেশের ক্ষমতার করিডোর হিসেবে পরিচিত দিল্লি। তবে শুধু দিল্লি নয় বাকি রাজ্যতেও পর্দার আড়ালে অনেক কিছুই ঘটে। কোনওটা ষড়যন্ত্র। কোনওটা আবার ক্ষমতার খেলা। ফ্রম দ্য ইন্ডিয়া গেট সেই খেলার অন্দরের কথাই তুলে ধরে।

'আম আদমি' পার্টি হওয়ার জ্বালা

শ্যাম রাখি না কূল রাখি। আম আদমি পার্টি আপাতত এই টানাপোড়েনেই ডুবছে আর ভাসছে। তাদের অবস্থা কিছুটা শাঁখের করাতের মত। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসকে সমর্থন করার ইচ্ছা তাদের একেবারেই নেই। আবার কংগ্রেসকে সমমর্থন না করলে বিরোধী জোট ইন্ডিয়াতে এন্ট্রি মিলবে না। ইন্ডিয়াতে না থাকলে বিজেপি পন্থী দল হিসেবে তকমা পেয়ে যাওয়া সমূহ সম্ভাবনা। সব মিলিয়ে দারুণ দ্বিধায় কেজরিওয়ালের দল। তবে শেষমেষ ইন্ডিয়াতে যোগ দিলেও কংগ্রেসের সঙ্গে মতের অমিল লেগেই রয়েছে আপের। এ হচ্ছে আম আদমি হওয়ার জ্বালা।

কংগ্রেসের সাথে আলোচনা শুরু হলে, AAP দেশের অন্যান্য অংশে তাদের জোট সম্প্রসারণের মল্লিকার্জুন খার্গের প্রস্তাবের সাথে একমত হয়নি। আপ হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাটে সাতটি আসন চেয়েছিল-দিল্লিতে পাঁচটি এবং পাঞ্জাবে ১৩টি আসন ''দান'' করার পরিবর্তে।

কিন্তু কংগ্রেস এই টোপ ছুঁয়েও দেখেনি কারণ এটি AAP-এর জাতীয় দল হওয়ার পথ তৈরি করবে। তবে এখন আপ আশঙ্কা করছে যে তাদের মধ্যবিত্ত ভোটাররা বিজেপিকে ভোট দিতে পছন্দ করবে যদি দলটি I.N.D.I.A.এ যোগ দেয়।

শিব শক্তি

কর্ণাটকের রাজনীতির তলে তলে কি চলছে, তা স্বয়ং ভগবানও বোধহয় ঠাহর করে উঠতে পারছেন না। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের সঙ্গে পরিচিত যে কেউ ব্যক্তি অবশ্য এই পরিস্থিতির সঙ্গে কিছুটা মানিয়ে নিতে পারবেন। শিবকুমারের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা কোন পথে খেলা করছে, তা বোঝা কিছুটা যাচ্ছে, যত দিন এগোচ্ছে। বেঙ্গালুরু উত্তর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন তাঁর ভাই ডি কে সুরেশ। আর খেলা শুরু হয়েছে তা নিয়েই। শিবকুমার ইতিমধ্যেই বিপরীত দলে শিকার করা শুরু করেছেন, আর কর্ণাটক রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত যে কেউই জানেন, যে এই বিষয়ে তাঁর দক্ষতা প্রশ্নাতীত।

ডি কে শিবকুমারের টার্গেটে এখন রয়েছেন বিজেপি বিধায়ক এস টি সোমাশেখর, গোপালাইয়া এবং বিরাথি সুরেশ। এই পদক্ষেপ কংগ্রেসকে আসন্ন BBMP নির্বাচনে সাহায্য করবে এবং এমনকি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে।

এই বিজেপি বিধায়করা পদত্যাগ করলে লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেঙ্গালুরুতে বিজেপির জন্য বড় সমর্থন ব্রাহ্মণ, ভোক্কালিগাস এবং উত্তর ভারতীয়দের কাছ থেকে আসায় কংগ্রেস এটি থেকে লাভবান হওয়ার আশা করছে। ডি কে সুরেশের বেঙ্গালুরু এন্ট্রি নিশ্চিত করবে যে আসন্ন নির্বাচনেও আসনটি দলের কাছে থাকবে।

তবে বিজেপি বিধায়করা শিব শক্তির শিকার হয়ে কী পাবেন, তা জানতে আরও অপেক্ষা করতেই হবে।

সর্বহারা থেকে সব পাওয়ার দল সিপিএম

ফর দ্য কমরেডস, বাই দ্য কমরেডস, ফ্রম দ্য কমরেডস। সর্বহারাদের দল সিপিএম তাদের এই তকমা অন্তত ত্রিশূর কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের বড়সড় তছরুপের পর আর ব্যবহার করতে পারবে না। ব্যাঙ্কের কার্যকলাপ এখন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের রাডারে রয়েছে। কাঠগড়ায় রয়েছেন একজন প্রাক্তন মন্ত্রী। দলটির পক্ষ থেকে যথারীতি বলা হচ্ছে যে সিপিএম নেতার চক্রান্ত করে ফাঁসানোর জন্য কেন্দ্র ইডিকে ব্যবহার করছে।

তবে এই মামলায় অভিযোগকারী নিজেই সিপিএম নেতা। তিনি তালিকাভুক্ত করেছেন যে কীভাবে এই শীর্ষ সিপিএম নেতার নিকটাত্মীয়দের অসামঞ্জস্যপূর্ণ জামানত সহ বিপুল ঋণ দেওয়া হয়েছিল। অবশেষে, কোটি কোটি টাকা ব্যাংকের কোষাগার খালি রেখে উধাও হয়ে যায়।

ব্যাংক তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় সমবায় সমিতির অনেক দরিদ্র সদস্য অসহায় অবস্থায় মারা গেছে। সিপিএম অবশ্য এই নেতাকে রক্ষা করছে, যিনি বৃহৎ মাপের অসদাচরণ সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন।

প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি

মরুভূমিতে বসবাসকারী সাপ বিষাক্ত। তাদের ছোবল মুহুর্তের মধ্যে যে কাউকে মেরে ফেলতে পারে। রাজস্থানের কিছু রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রেও একই রকম বিষ প্রযোজ্য। যাদের প্রতিহিংসা ক্ষমতাবানদেরও পঙ্গু করে দিতে পারে। রাজ্যের একজন মেয়র এই বিষের স্বাদ পেয়েছিলেন যখন তিনি একজন মন্ত্রীর 'অনুরোধ' প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অভিযোগ যে এই মন্ত্রী - গেহলট সরকারকে সমস্যায় ফেলার জন্য পরিচিত, তিনি চেয়েছিলেন মেয়র তার নামে একটি প্লট রেজিস্ট্রি করাক। কিন্তু মেয়র তা প্রত্যাখ্যান করেন। কয়েকদিনের মধ্যে তার স্বামীকে ২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার জন্য ''গ্রেপ্তার'' করা হয় এবং তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। মেয়র হাইকোর্টে গিয়ে বিচার পেয়েছেন।