সংক্ষিপ্ত
ফ্রম দ্য ইন্ডিয়া গেট এবার এপিসোড ৭ নম্বরে। প্রতি এপিসোডেই আমরা আপনাদের জন্য রাজনীতির মঞ্চ থেকে এমন সব কাহিনি উপস্থাপিত করি যা আপনাদেরকে এক অন্য স্বাদের খবর পড়ার মজা দেয়। এই এপিসোডে ৪টি অনন্য কাহিনি পেশ করা হচ্ছে আপনাদের জন্য।
রাজভবনে মমতার 'অন্য মমতা'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম রাজ্যপালের লড়াইয়ে হয়তো আপাতত বিরতি। জগদীপ ধনখড়ের দেশের উপরাষ্ট্রপতি পদে আসিন হওয়ার পর থেকেই রাজভবন নিয়ে শান্তি বিচরণ করেছে। মাঝে অস্থায়ী রাজ্যপালের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ একটা বন্ধুত্বের ইনিংসও খেলে নিয়েছেন।
এরপর তড়িঘড়ি যেভাবে সি ভি আনন্দ বোসকে বাংলার রাজ্যপাল করে পাঠানো হয়েছে তাতে আবার নিন্দুকেরা একটু কেমন কেমন গন্ধ পাচ্ছিলেন। তারমধ্যে অমিত শাহ আবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে খুব ভালো মানুষ বলে প্রশংসা করায় তৃণমূল শিবিরে রে-রে ডাক পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব আশঙ্কায় জল ঢেলে দিয়েছেন। কারণ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহারে নাকি আপ্লুত রাজ্যপাল এবং তাঁর স্ত্রী।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কেরলের মানুষ। বাঙালি খাবারে অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু, রাজ্যপাল সাফ জানিয়েছিলেন যে বাঙালি খাবারে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়ার পাত্র নন। তিনি সটানে রাজ্যপালের স্ত্রীকে বলে দিয়েছেন, 'ম্যাম (লক্ষী আনন্দ বোস)! বুঝতে পারছেন আমি কি পরামর্শ দিচ্ছি। আপনি কেরল থেকে রান্নার লোক নিয়ে আসুন। দ্বিধায় থাকবেন না। রাজ্য সরকার পুরোপুরি আপনার সঙ্গে রয়েছে।'
এরপরেই নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও এক চরম সৌজন্যের প্রকাশ। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য রাজ্য সরকার হেলিকপ্টার ভাড়া করে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী নাকি রাজ্যপালকে বলে দিয়েছেন, 'যখন ইচ্ছে এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করুন। প্রয়োজন পড়লে কেরলে চলে যান এই হেলিকপ্টারে।' প্রশাসনিক সূত্রে খবর যে রাজ্যপাল নাকি এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। অনেকে বলছেন দেখে মনে হচ্ছে মমতা ও রাজ্যপালের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। আবার কারও মতে ঝড় ওঠার আগে এটা একটা ইঙ্গিত।
' চিৎকার ও ক্রোধ কোনও কাজের নয় '
মনে হচ্ছে গত কয়েক মাস ধরে চলা কেরল রাজ্যপাল বনাম সেখানকার রাজ্য সরকারের মধ্যেও একটা শান্তিচুক্তি হয়েছে। একটা সময় কেরলে সরকার বনাম রাজ্যপালের দ্বৈরথ ঘিরে এমন এক উত্তেজনার মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল যে অনেকে দাঁতে নখ কাটতে শুরু করেছিলেন।
তবে, এখন মনে হচ্ছে উত্তেজনারল সেই ক্ষণ এখন অতিত। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান যেভাবে পুনরায় সাজি চেরিয়ানকে পিনারাই বিজয়নের ক্যাবিনেটে স্থান পেতে সম্মতি দিয়েছে তাতেই এমন এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিজয়নের ক্যাবিনেট থেকে সাজি-কে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য। সংবিধানকে অবমাননা করে এমন মন্তব্য করেছিলেন সাজি।
কিন্তু, পুলিশি তদন্তে প্রমাণিত যে সাজি এমন কোনও আপত্তিকর মন্তব্য কোনও করেননি। সবচেয়ে নাটকীয়তা হয়েছে,শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে আরিফ মহম্মদ খান পুরো বিষয়টিকে আইনি পরামর্শের দরকার বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু আইনসভাও এতে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দেয়, ফলে আরিফ মহম্মদ খান সাজির শপথগ্রহণে আর বাধা তৈরি করেননি।
কেরলের রাজ্যপালকে দেখে মনে হচ্ছে তিনিও অতিতের বৈরিতা ভুলতে চান। একটা সময় কেরলের বর্তমান বিধানসভা অধিবেশনকে নতুন বছরেও টানার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু, পরে তাতে পরিবর্তন আনা হয় এবং ঠিক হয় নতুন বছরের আগেই অধিবেশন সমাপ্ত করার। এতে রাজ্যপাল নতুন বছরের শুরুতেই বিধানসভায় ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। মনে করা হচ্ছে কেরল সরকার বনাম রাজ্যপালের দ্বৈরথে এটা বরফ গলাতে সাহায্য করবে। এখন দেখার নতুন অধিবেশন শান্তিপূর্ণ হবে নাকি তামিলনাড়ু বিধানসভা অধিবেশনের মতো সেখানেও উত্তাপ ছড়াবে।
'কাপ ও ঠোঁটের মাঝে'
সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যসচিব হওয়ার বাসনায় যে এভাবে বাধা আসবে তা হয়তো কেউ কল্পনাই করতে পারেনি। এ যেন অনেকটা চা-ভর্তি কাপে ঠোঁটটা ঠেকানোর আগের মুহূর্তে তা আটকে যাওয়া। জানা গিয়েছে বহু আমলা ইতিমধ্যেই এই স্বপ্নে বিভোর হয়েছিলেন। এদের প্রত্যেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন। যদিও, সবার আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন এক সিনিয়র অফিসার। যিনি আগেই মুখ্যসচিবের চেয়ারে বসেছিলেন। বলতে গেলে তাঁর কেরিয়ারের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে।
এদিকে, আশার স্বপ্নে বিভোর আমলারা শাসকদলের সব তাবড় তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের খুশি করতেও নেমে পড়েছিলেন। এদের সকলের আশা এখন ভেঙে চুরমার, কারণ বর্তমান মুখ্যসচিবের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে দিয়েছে সবচেয়ে বড় রাজ্যের সরকার।
সার্কাস
উত্তরপ্রদেশে এখন ঘরে ফেরার পালা শুরু হয়েছে । সম্প্রতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ শিবপাল যাদব পরিবার ও পুরনো দলে ফিরে এসেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে এবার বিজেপি-এর এক তাবড় নেতাও ফিরে যেতে পারেন তাঁর পুরনো দলে। সম্প্রতি দলবিরোধী কিছু মন্তব্য করে এই বিজেপি নেতা বিরাগভাজন হয়েছেন। শোনা যাচ্ছে কংগ্রেসে থাকা তাঁর তুতো বোন নেতা এবং এক উঠতি নেতার সঙ্গেও নাকি কথা হয়েছে এই বিজেপি নেতার। গুঞ্জন যে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগেই দল ছাড়ছেন এই নেতা। তবে এই নেতাও নাকি বুঝতে পেরেছেন যে তিনি দল ছাড়লে গেরুয়া শিবিরের অনেকেই তাকে আশীর্বাদ বলে মনে করবেন। কারণ, এই নেতার বিখ্যাত পদবি নাকি দলের কর্মীদের কাছে মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন-
চাণক্য অমিত শাহের চুটকিতে ম্যাজিক-পিনারাই বিজয়নের স্ট্র্যাটেজির জাদু- এক নজরে From The India Gate
ফিরেছেন চাচা শিবপাল-বাবার নাগালে ভারত জোড়ো যাত্রা- এক নজরে From The India Gate
মোদী সরকারের অন্দরে লোটা-কম্বল বাঁধার প্রস্তুতি, দোহার দোহাই-এ বিসিসিআই-একনজরে From The India Gate