সংক্ষিপ্ত

গৌতম আদানি স্যুতে উত্তাল সংসদ। আলোচনার দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস। সামিল হয় বিরোধীরা। মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের অধিবেশন।

 

গৌতম আদানি ইস্যুতে উত্তাল জাতীয় রাজধানী। ইতিমধ্যেই যার আঁচ পড়তে শুরু করেছে সংসদে। আদানি ইস্যুতে প্রথম আলোচনা করার ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছিল কংগ্রেস। বিরোধীরা কংগ্রেসের সঙ্গে এই দাবি তুলতেই মুলতবি হয়ে যায় সংসদ। কিন্তু তাতেই দমানো যায়নি বিরোধীদের। আদানি-ইস্যুকে হাতিয়ার করে বড়় আন্দোলনের পথে যাচ্ছে কংগ্রেস। সঙ্গে রয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। যা এদিন স্পষ্ট হয়েছে। কারণ গৌমত আদানির মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্ববধানে তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।

কংগ্রেসের নিশানা আদানির সঙ্গে মোদী

বুধবার নতুন শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া (FPO ) স্থগিত রেখেছে আদানিদের সংস্থা। সেই প্রসঙ্গে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক নৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে। কংগ্রেস বলেছে, গৌতম আদানি নৈতিকভাবে সঠিক হওয়ার কথা বলছেন তাঁর প্রধান পরামর্শদাতার মতই। যিনি নম্রতা ,সংযম আর বড় হৃদয় রয়েছে বলে প্রচার করেন, আদানিও তাই করছেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আদানিদের নিয়ে সরাসরি আক্রমণ করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কংগ্রেস দীর্ঘ দিন ধরেই মোদী-আদানি বন্ধুত্বের প্রচার করে আসছে। তিনি আরও বলেছেন, এটি রাজনৈতিক বিজ্ঞান। কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে মোদী সরকার নানাভাবে আদানিদের সুবিধে করে দিয়ে থাকে।

বিরোধীদের তদন্তের দাবি

শুধুমাত্র মুখে বা সোশ্যাল মিডিয়াতেও কংগ্রেস আক্রমণ করে থেমে থাকেনি। বিরোধী দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে উত্তাল করেছে সংসদ। কারণ রাজ্যসভার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের দাবিতে আদানি ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবি জানান হয়েছে। খাড়গে সাংবাদিকদের বলেছেন, জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে বিরোধীরা আদানি ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে থাকা কমিটির মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি করছে বিরোধীরা। যদিও এদিন আগেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের মধ্যে প্রতিবাদ প্রদর্শনের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে নিয়েছিল।

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পর গত সপ্তাহে আদানি গোষ্ঠী জানিয়েছিল তারা এফপিও ছাড়়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসবে না। সেইসঙ্গে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থাগিতে দেওয়া ৮১৩ পাতার জবাবে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগে ভারত ও দেশের প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক বৃদ্ধির ওপর আক্রমণ বলেও সমালোচনা করেছিল। গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আদানি এন্টারপ্রাইস এফপিওতে শেয়ার বিক্রি করেছে। কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সামনে আসার পরে গত শুক্রবার প্রথম দিনে এই শেয়ার কিনতে আবদেন পড়েছিল মাচ্র ১ শতাংশ। উল্টে শেয়ার বিক্রি ও তার দরে বিপুল পতনের জেরে লগ্নীকারীরা হারিয়েছেন প্রায় ৫ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সবমিলিয়ে বিএসই বিনিয়োগকারীদের ১১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সেবি ও এক্সচেঞ্জগুলি। কারচুপির অভিযোগ ওঠায় আদানিগোষ্ঠীতে এলআইসি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও ব্যাঙ্কের লগ্নি ও ঋণ নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আসরে নামতে শুরু করেছে।