সংক্ষিপ্ত

১৯৯৫ থেকে ২০১২ পর্যন্ত, এই আসনটি বিজেপির খাতায় ছিল। কিন্তু ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে, কংগ্রেস এখানে জেতে। যদিও পরে কংগ্রেস আসন এবং প্রার্থী উভয়ই হারায়।

গুজরাটের মোরবির মাচ্ছু নদীক ওপর ঝুলন্ত সেতুতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশ। এই দুর্ঘটনা কি গুজরাটে আসন্ন নির্বাচনে বড়সড় প্রভাব ফেলবে? তেমনই আশঙ্কা করছে বিজেপি। ভারতীয় জনতা পার্টির ক্ষমতায় থাকা মোরবি আসনে আবারও কংগ্রেসের আধিপত্য বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে গেরুয়া শিবির। কারণ বিধানসভা এলাকা জুড়ে বাড়ছে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া। রবিবার সন্ধ্যায় সেতু ধসে প্রায় ১৪০ জনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে, পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে এবং রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।

মোরবির রাজনৈতিক পরিস্থিতি

১৯৯৫ থেকে ২০১২ পর্যন্ত, এই আসনটি বিজেপির খাতায় ছিল। কিন্তু ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে, কংগ্রেস এখানে জেতে। যদিও পরে কংগ্রেস আসন এবং প্রার্থী উভয়ই হারায়। ২০১৭ সালে, কংগ্রেস প্রার্থী ব্রিজেশ মের্জা ৩৪০০-রও বেশি ভোটে বিজেপির কান্তি অমৃতিয়াকে পরাজিত করেছিলেন। তবে ব্রিজেশ মের্জা পরে বিজেপিতে চলে যান এবং ২০২০ সালে আসন থেকে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং আবার জয়ী হন।

পতিদার আন্দোলনের সঙ্গে সংযোগ

গুজরাটে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় পতিদার আন্দোলন চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে বিরাট পতিদার জনসংখ্যার মোরবি আসনেও এর বিশেষ প্রভাব পড়েছে। মের্জা, যিনি ২০২০ সালে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, ২০২১ সালে মন্ত্রিসভা রদবদলের সময় তাঁকে মন্ত্রী করা হয়। তবে মোরবির দুর্ঘটনার পর মের্জা ব্ল্যাক লিস্টে। একই সময়ে, এখান থেকে প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক অমৃতিয়াকে উদ্ধার কাজে যোগ দিতে দেখা গেছে। যে নেতারা নদীতে নেমে মানুষকে বের করে আনছিলেন তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন।

কংগ্রেস সমীকরণ পাল্টানোর আশা করছে

এদিকে, টাঙ্কার বিধায়ক এবং গুজরাট কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি ললিত কাগাথারা বলেছেন, “এই ঘটনা কেবল মোরবিতে নয়, পুরো গুজরাটে বিজেপিকে প্রভাবিত করবে। প্রশাসনের ব্যর্থতা মানুষ দেখেছে। মোদী প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কথা বলছেন, এদিকে, নিজের রাজ্যে একটি সেতুও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেননি। মানুষ বুঝতে পেরেছে যে বিজেপি কেবল ফাঁপা দাবি করছে। তিনি দাবি করেছেন, 'ব্রিজেশ মের্জা যদি টিকিট পেতেন, তবে তিনি যেভাবেই হোক হেরে যেতেন। এখন সে অবশ্যই হারবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফর

তিন দিনের সফরে গুজরাটে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার মরবি পৌঁছবেন। সোমবার, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে, তিনি কেভাদিয়ায় এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল প্রতিনিয়ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন এবং উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের খবর নিচ্ছেন।

গুজরাটের রাজনীতিতে বিজেপির আধিপত্য

নব্বই দশক থেকে গুজরাটের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে বিজেপি। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে বিজেপি ও জনতা দলের জোট সরকার গঠিত হয়। এর পরে, ১৯৯৫ সালের নির্বাচন থেকে ২০১৭ পর্যন্ত সমস্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতেছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে, নরেন্দ্র মোদী ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

১৯৬০ সালে গুজরাট রাজ্য গঠনের পর, ১৯৬২ থেকে ১৯৮৫ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের আধিপত্য ছিল। গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাসে মাত্র দুবারই ঝুলন্ত বিধানসভা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বাবু ভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে জনতা মোর্চা এবং দ্বিতীয়বারের মতো ১৯৯০ সালের নির্বাচনে চিমন ভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে কিষাণ মজদুর লোক পক্ষ (KMLP), জনতা দল এবং বিজেপি জোট সরকার গঠিত হয়।

আরও পড়ুন-  ভারত নেপাল বিরোধ শুরু, সীমান্তে সড়ক নির্মাণে দিল্লিকে বাধা কাঠমান্ডুর

আরও পড়ুন- ভোটের গুজরাটে নাগরিকত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত অমিত শাহের মন্ত্রকের, বিজেপি-তৃণমূল তরজা শুরু এই রাজ্যে