সংক্ষিপ্ত
রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি বিরল বিশেষ অধিবেশনের আহ্বান প্রস্তাবেও ভোট দেয়নি ভারত। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেন আলোচনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু কেন ভারত রাষ্ট্রসংঘে ভোট দানে বিরত থাকছে
প্রথম থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) নিয়ে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত দুটি দেশকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু তারমধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইউক্রেন ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের (UN) প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিল। রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি বিরল বিশেষ অধিবেশনের আহ্বান প্রস্তাবেও ভোট দেয়নি ভারত। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেন আলোচনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু কেন ভারত রাষ্ট্রসংঘে ভোট দানে বিরত থাকছে তার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ হলঃ
১. ভারতের জন্য ইউক্রেনের সংকট একটি সংকীর্ণ পথ । এই পরিস্থিতি ভারতের পুরনো বন্ধু রাশিয়া ও পশ্চিমের নতুন বন্ধুদের মধ্যে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে তাতে কিছুটা হলেও ভারতের ওপর চাপ বাড়ছে। সেই জন্য ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করতে চাইছে।
২. ভারতের প্রতিরক্ষা ও অস্ত্র সরবরাহের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হল রাশিয়া। রাশিয়ার সঙ্গে একগুচ্ছ প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে ভারতের। আরও কিছু প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বারক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি ভারতকে একটি ব্যালিস্টিক সাবমেরিন সরবরাহ করেছে।
৩. ভারত রাশিয়ার তৈরি 272 SU 30 যুদ্ধ বিমান হাতে পাবে। এটিতে আটটি রাশিয়ার তৈরি কিলো শ্রেণীর সাবমেরিন ও ১.৩০০টিরও বেশি রাশিয়ান T-90 ট্যাঙ্ক রয়েছে।
৪. মার্কিন চাপ অগ্রাহ্য করেও ভারত রাশিয়ার থেকে দূরপাল্লার সারফের টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার বিষয়ে এগিয়েছে। ইতিমধ্যেই এজাতীয় একটি সিস্টেম ভারত খুব দ্রুত হাতে পাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে এই অস্ত্র কেনার জন্য ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
৫. রাশিয়াও রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সমস্ত বিষয়ে ভারতের পশে দাড়িয়েছে। এমনকি কাশ্মীর ইস্যুতেই ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান যখন কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল তখন রাশিয়া স্পষ্ট করে জানিয়েছিল গোটা বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়ে পড়ে।
কিন্তু ভারতের এই পদক্ষেপ খুব একটা ভালোভাবে নিচ্ছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য ভারতের ওপর ক্রমশই চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিজের অবস্থানে অনড় থেকে ভারত। জানিয়েছে, সমস্যা সমাধানে একমাত্র কূটনীতির ওপরেই ভরসা রাখছে ভারত। অন্যদিকে ভারতে অবস্থিত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সরাসরি রাশিয়ার অগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। তারপরই অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয় নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন সমস্যা সমাধানে পরামর্শ দিয়েছেন বলেও সূত্রের খবর।