সংক্ষিপ্ত

সীমা হাসদারকে দেশ ছাড়ার জন্য মাত্র ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে উত্তর প্রদেশের গৌরক্ষা হিন্দু দল।সীমার স্বামী গোলাম হায়দার পাকিস্তান থেকেই স্ত্রী ও সন্তানদের ফেরত পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন।

 

পাকিস্তানের থেকে হুমকি আগেই পেয়েছিলেন সীমা হায়দার। এবার তাঁকে হুমকি দিল ভারতেরই একটি দক্ষিণপন্থী সংগঠন। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সীমা হায়দার যদি আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশ না ছাড়ে তাহলে তার ফল ভাল হবে না। পাকিস্তানের বাসিন্দা সীমা হায়দার। প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করার জন্য অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। বর্তমানে জামিনে এই দেশেই রয়েছেন। উত্তর প্রদেশের প্রেমিকার বাড়িতে প্রেমিকের সঙ্গেই থাকেন ৩০ বছরের সীমা হায়দার। আগেই সীমাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়ে ফোন পেয়েছিল প্রশাসন। সব মিলিয়ে প্রেমের কারণে আজ বিপন্ন সীমার জীবন। পরিবারও তাঁকে মেনে নিতে চাইছে না।

সীমা হাসদারকে দেশ ছাড়ার জন্য মাত্র ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে উত্তর প্রদেশের গৌরক্ষা হিন্দু দল। সংগঠনের সভাপতি বেদ নদর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, সীমা হায়দার পাকিস্তানের বাসিন্দা। তিনি একজন পাক গুপ্তচরও হতে পারেন। তাই তাঁর দেশে থাকা এই দেশের কাছে মোটেও নিরাপদ নয়। গোটা দেশের কাছেই হুমকির সামিল। তাই দ্রুত তাঁকে ভারত ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, 'আমরা বিশ্বাসঘাতক জাতির একজন নারিকে কখনই সহ্য করব না। যদি সীমা হায়দার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ত্যাগ না করে তাহলে আমরা একটি আন্দোলন শুরু করব।'

একদিনে পাকিস্তানের হুমকি, অন্যদিকে সীমা হায়দারকে হুমকি দিচ্ছে দেশের হিন্দু হিন্দু সংগঠন। সীমার জীবন বিপন্ন বলে মনে করে নিরাপত্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। যদিও আগে থেকেই সীমার প্রেমিক শচীন মীনার বাড়ির সামনে পাহারা দিচ্ছিল উত্তর প্রদেশ পুলিশ। বর্তমানে সেই পাহারা আরও বাড়ান হয়েছে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে এই দেশে প্রবেশ করেছিল সীমা হায়দার। তাই গ্রেফতার করেছিল উত্তর প্রদেশ পুলিশ। আদালত তাঁকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে।

৩০ বছরের সীমা গোলাম হায়দার পাবজি খেলতে গিয়ে প্রেমে পড়েন শচীন মীনার। প্রেমের টামে প্রেমিককে একবার নিজের চোখে দেখতে আর কাছে পেতে সীমান্ত অতিক্রম করেন অবৈধভাবে। তিনি নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সীমা হায়দার গ্রেটার নয়ডার রাবুপুরা এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে শচীন মীনার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। চার মাস পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

নেপাল থেকে ভিসা ছাড়া ভারতে প্রবেশ করার জন্য গত ৪ জুলাই পুলিশ গ্রেফতার করে সীমাতে। তাঁকে সাহাস্য করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল শচীনকেও। আদালত দুজনকেই জামিন দিয়েছে। যদিও সীমা জানিয়েছেন তিনি পাকিস্তানে গুপ্তচর নন। তিনি শচীনের প্রেমে পড়েই ভারতে এসেছেন। তাঁর সংসার ছেড়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি যদি গুপ্তচর হতেন তাহলে সন্তান নিয়ে কখনই সীমান্ত অতিক্রম করতেন না। তিনি আরও বলেছেন নিজের সন্তানদের জীবন কখনই কোনও মা ঝুঁকিতে ফেলে না।

অন্যদিকে সীমার স্বামী গোলাম হায়দার পাকিস্তান থেকেই স্ত্রী ও সন্তানদের ফেরত পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ তাঁর স্ত্রীকে পাবজি খেলার মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে। গোটাটাই শচীন মীনার কারসাজি বলেও অভিযোগ তাঁর। তবে সীমার বন্ধু ও আত্মীয়রা জানিয়েছেন তারা কখনই চান না যে সীমা আবার পাকিস্তানে ফিরে যাক। সীমা এখন মুসলিম নয় বলও দাবি আত্মীয়দের। তারা শুধু সীমার সন্তানদের ফেরত চাইছে।