- Home
- India News
- সবরমতী আশ্রম থেকে নেতাজী ভবন-এই স্মৃতিসৌধের পরতে পরতে লুকিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবগাথা
সবরমতী আশ্রম থেকে নেতাজী ভবন-এই স্মৃতিসৌধের পরতে পরতে লুকিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবগাথা
১৫ই আগস্ট ভারত ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে চলেছে। এই উপলক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী কিছু স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর দেশপ্রেমিকদের এক মুহূর্ত স্মরণ করা যাক।

স্বাধীনতার স্মৃতিসৌধ
জালিয়ানওয়ালাবাগ, সবরমতী আশ্রম, নেতাজি ভবন, আগা খান প্রাসাদ সহ বহু ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ আজও সংরক্ষিত আছে। এমনই ৬ টি স্থান সম্পর্কে এবার জানবো।
সবরমতী আশ্রম
মহাত্মা গান্ধী যেখানে বসবাস করতেন এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য কাজ করতেন সেই স্থান হল সাবরমতী আশ্রম। দণ্ডি যাত্রার মতো বহু অহিংস আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই স্থান। গান্ধীজি প্রায় ১২ বছর এখানে কাটিয়েছিলেন। গান্ধীজির চিঠিপত্র, ছবি, বিশ্রামকক্ষ, বই, চশমা, লাঠি, পোশাক সবই এখানে প্রদর্শিত হয়।
2. নেতাজী ভবন
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পৈতৃক বাড়ি। নেতাজি ভবন এখন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর জীবন ও নেতৃত্বের ইতিহাস প্রদর্শনকারী একটি জাদুঘর। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র ছিল এই বাড়ি। নেতাজির শয়নকক্ষ এবং তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শিত হয়। নেতাজির জীবন ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নথিপত্র, ছবি, প্রবন্ধ ইত্যাদিও দেখা যায়।
3. সেলুলার জেল
অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামীকে ব্রিটিশরা যে জেলে বন্দী করে রেখেছিল সেটি হল সেলুলার জেল। এটি কালাপানি নামেও পরিচিত। জেলের কাঠামো, বন্দীদের রাখার ব্যবস্থা, তাদের উপর অত্যাচারের রীতিনীতি, তাদের দিয়ে করা কাজ, ফাঁসির ঘর ইত্যাদি সব দেখা যায়। এ সবকিছু সন্ধ্যায় দৃশ্যশ্রাব্য কার্যক্রমের মাধ্যমেও জানা যায়। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির জন্য বীরত্বের সাথে যারা লড়াই করেছিলেন তাদের ত্যাগের স্মারক হিসেবে সেলুলার জেল আজও দাঁড়িয়ে আছে।
4. জালিয়ানওয়ালাবাগ
১৯১৯ সালের ১৩ই এপ্রিল, সাধারণ মানুষ যখন শান্তিপূর্ণভাবে একটি জনসভায় অংশগ্রহণ করছিল, তখন জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে ব্রিটিশরা গণহত্যা চালায়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল এটি। জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার কাহিনী এখানকার রক্তসাক্ষী গ্যালারিতে বর্ণিত আছে। গুলিতে ছিদ্র হওয়া প্রাচীরের এক অংশ এখনও সংরক্ষিত আছে।
5. আগা খান প্রাসাদ
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধী, তাঁর স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধী এবং সচিব মহাদেব দেশাইকে এখানে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। প্রাসাদের পরিধিতে মহাদেব দেশাই এবং কস্তুরবার স্মৃতিসৌধ আছে। পুনে-আহমেদনগর রাস্তায় ১৯ একর জমির উপর আগা খান প্রাসাদ অবস্থিত। ইতালীয় ধনুকাকৃতি কમાন, পাঁচটি হলঘর, ২.৫ মিটার প্রশস্ত বারান্দা, গান্ধীজি এবং অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনের বিভিন্ন দিক চিত্রিত করে এমন অনেক ছবি এবং চিত্র এখানে দেখা যায়।
6. লাল কেল্লা
১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট, পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন লালকেল্লায়। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী ছিল লালকেল্লা। কেল্লার প্রাচীর স্বাধীনতার জন্য ভারতের সংগ্রাম ও বিজয়ের কথা বলে। সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত লালকেল্লা ভারতের স্বাধীনোত্তর উদযাপনের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। মোগল সম্রাট শাহজাহান লালকেল্লা নির্মাণ করেছিলেন। মোগল যুগের স্থাপত্যশিল্পের কীর্তি এখানে স্পষ্ট দেখা যায়।

